দুরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্কঃ আজ চতুর্থী। দেবীর বোধনের আর মাঝে একদিন। দুর্গোৎসবের মাধ্যমে অশুভ শক্তির বিনাশ ঘটে। অর্থাৎ এ পুজো অশুভ শক্তির নিধন করে শুভ শক্তির প্রতিষ্ঠারই প্রতীকস্বরূপ। দুর্গা মূর্তিতে আমরা দেখতে পাই দেবীর ত্রিশুলে বিঁধেছেন দানব মহিষাসুরকে এবং সেই মহিষাসুর দেবীর পদতলে অবস্থান করেন। তিনি অশুভ শক্তির প্রতীক। তবে আপনি কি জানেন দুর্গা পুজোয় দেবীর সাথে পুজো পান মহিষাসুরও! কিন্তু কেন এই রীতি?
ব্রহ্মার বরে মহিষাসুর অপরাজেয় হন। তিনি বর পান কোনো বলশালী পুরুষ তাঁকে পরাস্ত করতে পারবে না। আর এই বর পেয়ে তিনি আক্রমণ করলেন স্বর্গরাজ্য। তাঁর অত্যাচারে স্বর্গরাজ্যে তখন ত্রাহি ত্রাহি রব। বাধ্য হয়ে দেবতারা ব্রহ্মার শরণাপন্ন হলেন। তারপর সেখান থেকে বিষ্ণুর শরণাপন্ন হলেন। সেখানে মহাদেবও উপস্থিত ছিলেন। ত্রিদেব ও দেবতাসমূহের সম্মিলিত তেজ রাশি থেকে সৃষ্টি হল এল শুভ শক্তির আধার দেবী। সেই দেবীই দুর্গা। তিনি মহিষাসুরের সঙ্গে যুদ্ধে যাওয়ার জন্য যখন অগ্রসর হলেন। অসুর সেনারা তাঁকে দেখে ভয়ে কম্পিত হয়ে গেলেন। তাঁর মুকুট গগণ স্পর্শ করেছে। এবং প্রবল অট্টহাসি।
তবে দেবীর রূপে আকর্ষিত হয়ে দেবীকে বিবাহের প্রস্তাব দেন মহিষাসুর। দেবী তা অবহেলায় প্রত্যাখ্যান করলে ক্ষুব্ধ মহিষাসুরের সঙ্গে ঘোরতর যুদ্ধ বাধে দেবীর। এই যুদ্ধে নিহত হন মহিষাসুর। তিনবার তিন রকম রূপ ধারণ করে দেবীকে আক্রমণ করেন মহিষাসুর। প্রতিবারই তাঁকে বিনাশ করেন দুর্গা। প্রথমে অষ্টাদশভূজা উগ্রচণ্ডা রূপে, দ্বিতীয়বার ভদ্রকালী এবং তৃতীয়বার দশভুজা দেবী দুর্গা রূপে মহিষাসুরকে বধ করেন তিনি। দুর্গাই পরমা প্রকৃতি। মৃত্যুর আগে দেবীর কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা করে তাঁর আরাধনা করেন মহিষাসুর। তাঁর পুজোয় তুষ্ট হয়ে দেবী তাঁকে আশীর্বাদ করেন যে উগ্রচণ্ডা, ভদ্রকালী আর দুর্গা, এই তিন মূর্তিতে তাঁর পদলগ্ন হয়ে মহিষাসুর সময়েই দেবতা, মানুষ ও রাক্ষসদের পূজ্য হবে।’ দেবীর পাদলগ্ন হয়ে মহিষাসুরের পুজো পাওয়ার বিবরণ কালিকাপুরাণে পাওয়া যায়।