দুরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্কঃ সুরেন্দ্রনাথ ব্যানার্জি রোডের সংলগ্ন রানি রা-সমনির আদি বাসভবনটি অবস্থিত। ১৭৯৪ সালে এই বাড়ির দুর্গাপুজোর সূচণা করেন জমিদার রাজচন্দ্র দাসের পিতা প্রীতরাম মাড়। এই পরিবারের জানবাজার ছাড়াও বেলেঘাটা, ট্যাংরা বা ভবানিপুর এলাকায়ও কয়েকটি বাড়ি ছিল। জানবাজারের বাড়িতে একচালা শোলার সাজের মহিষাসুরমর্দিনী পুজিত হন। ১১ বছর বয়সে জানবাজারের জমিদার রাজচন্দ্র দাসের সঙ্গে বিবাহ হয় রাসমনির। যা আজও কলকাতার বনেদি পুজোগুলির অন্যতম একটি পুজোর তালিকায়।
এই বাড়িতে আশ্বিণের শুক্লাপ্রতিপদ থেকে শুরু হয় বোধন। সপ্তমী, অষ্টমী ও নবমী তিনদিন ধরে চলে কুমারীপুজো। আগে পশুবলির চলন থাকলেও সেই নিয়ম এখন পালন করা হয় চালকুমড়ো বা কোনও সবজি বলি দিয়ে। এই বাড়ির পুজোর অন্যতম বিষয় হল এই মূর্তি কোনও ছাঁচে তৈরি হয় না, শিল্পী নিজের দক্ষতায় তৈরি করেন মায়ের মূর্তি। বাড়ির সামনের বারান্দায় নাটমন্দিরে অনুষ্ঠিত হয় দুর্গাপূজা। স্বামীর মৃত্যুর পর রানি রাসমনি নিজের কাঁধে পুজোর তুলে নেন এই পুজোর দায়িত্ব।
এই বাড়ির পুজো জনপ্রিয়তা পায় তখন থেকেই। ১৮৬১ সালে রানী রাসমনির মৃত্যুর পর প্রাচীণ ঐতিহ্যের স্পর্শ বহনকারী এই পুজো তিনটি ভাগে বিভক্ত হয়। তবে শতাব্দী প্রাচীণ এই পুজোতে এতটুকুও ভাটা পড়েনি আভিজাত্য ও সাকেবিআনায়। ঐতিহ্যবাহী এই পুজোয় সে যুগে সামিল হতেন রামকৃষ্ণ পরমহংসদেব। প্রীতরামের তৈরি পাঁচ খিলান ও দু’দালান বিশিষ্ট ঠাকুরদালানের বাইরের দালানের গায়ের অলঙ্করণগুলি এখনও শতাব্দী প্রাচীণ ঐতিহ্য বহন করে চলছে।