পশ্চিম বর্ধমান : এখনও স্বমহিমায় পূজিত হন খনি অঞ্চলের খাদানকালীর। জঙ্গলের মাঝে চারিদিক পাঁচিল দিয়ে ঘেরা। কিন্তু ছাদ খোলা। এটাই এখানকার মাহাত্ম্য।
'৬০-এর দশকের ঘটনা। জঙ্গলের মাঝে গাছের তলায় রাখা থাকত মা কালীর পটচিত্র। খনি অঞ্চল অন্ডালের বক্তারনগর এলাকায়। অণ্ডাল, রানিগঞ্জ, জামুড়িয়া, পাণ্ডবেশ্বর- এইসব এলাকা কয়লা খনি অধ্যুষিত।
কথিত আছে, একদিন ইস্টার্ন কোলফিল্ডের ঘনশ্যাম কয়লা খনির কয়লা লরিতে যাচ্ছিল। হঠাৎ লরির চাকা বসে যায়। দিনভরের চেষ্টাতেও তা তোলা যায়নি। এরপর স্বপ্নাদেশ পেয়ে, ওই কোলিয়ারি ম্যানেজারের অনুরোধে পরিবহন ব্যবসায়ী-লরিচালক-কর্মীরা ওই রাস্তার পাশে জঙ্গলে গাছের তলায় পটচিত্রে থাকা মা কালীর আরাধনা শুরু করেন।
তারপর আবার চেষ্টায় গাড়ি গর্ত থেকে ওঠে এবং চলা শুরু করে। তখন থেকেই পুজো শুরু হয় ওই অঞ্চলে। লোকমুখে ছড়িয়ে পড়ে খাদান কালীর নাম। এখানে ছাদ খোলা, কোনও আচ্ছাদন নেই। শুধু চারিদিকে পাঁচিল দিয়ে ঘেরা। এটাই হচ্ছে এই মন্দিরের বিশেষত্ব।
প্রতি বছর কার্তিক মাসের অমাবস্যা তিথিতে প্রচুর লোকসমাগম হয় খাদান কালীর পুজোয়। মন্দিরের পাশেই রয়েছে প্রকাণ্ড জলাশয়। যা একসময় কয়লা খাদান ছিল। সেই জলাশয়ের জল দিয়েই পুজোর কাজকর্ম হয়।
গত প্রায় ৬৫ বছর ধরে জেলার বিভিন্ন জায়গা থেকে তো বটেই, ভিন জেলা থেকে এমনকী প্রতিবেশী ও পার্শ্ববর্তী রাজ্য ঝাড়খণ্ড থেকেও লোকজন আসেন এই খাদান কালীর পুজোয়। পুজোর পরে ভোগ বিতরণ হয়। মন্দিরের সেবাইত অভিজিৎ চক্রবর্তী ও মন্দিরের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা অমিত ঘোষ জানান এই খাদান কালীর মাহাত্ম্যের কথা।