দুরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্কঃ একটা প্রচলিত প্রবাদ বলে, ফুল, শিশু আর গান ভালবাসা মানুষেরা কখনও খারাপ মানুষ হন না। এবার সে ফুল যদি হয় থোকা থোকা চেরি ফুল, ইংরেজিতে যাকে বলে চেরি ব্লসম! সেই চেরি ব্লসম যদি ঘিরে রাখে একটা গোটা চা বাগান, কেমন লাগবে? স্বর্গ স্বর্গ না? তা এই স্বর্গ যদি আপনার বাড়ির কাছেই হয়? সপ্তাহান্তের দু'দিনের ছুটির সঙ্গে আর দু'টো দিন ছুটি নিয়েই তো ঘুরে আসতে পারেন, সেই স্বর্গ থেকে। সত্যি বলছি।
দক্ষিণ সিকিমের টেমি টি গার্ডেন। একে চা বাগান, তার ওপর সিকিম! প্রাকৃতিক নিসর্গ যেদারুণ হবেই, তা নিয়ে সংশয় নেই। সারা বছরই টেমি বগান হয়ে থাকে স্বর্গের চা বাগান। কিন্তু নভেম্বর ডিসেম্বর সেই স্বর্গের সেরা সময়, কারণ, এই সময়ে গোটা উপত্যকা জুড়ে ফুটে থাকে চেরি ফুল। প্রকৃতি যেন নিজেকে নিংড়ে ফেলেছে সিকিমের এই বাগানে। রাস্তার দু'ধারে, চা বাগানের মাঝে মাঝে দাঁড়িয়ে আছে গোলাপি গোলাপি গাছ। গাছ কি আর গোলাপি হয়? তা না! কিন্তু গাছে পাতা নেই। রাশি রাশি চেরি ফুলেই ভর্তি সেই গাছ। নভেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে চেরিতে ছেয়ে যায় টেমি টি গার্ডেন। চেরি ফুল কিন্তু গোলাপি ছাড়া সাদাও হয়, তবে টেমির চেরিরা সব গোলাপিই।
চেরি ফুলের জন্য বিখ্যাত জাপান। সেখানে চেরির স্থানীয় নাম সাকুরা, জাপানের জাতীয় ফুল সাকুরা। এই ফুলকে ঘিরে দেশজুড়ে মার্চ এপ্রিলে হয় সাকুরা ফেস্টিভ্যাল। নভেম্বরের টেমি আর মার্চের জাপানের মধ্যে বিশেষ পার্থক্য নেই। টেমি ছাড়া অবশ্য ভারতের আরও একটি শহরে বছরের এই সময়ে চেরি ফুলে ছেয়ে থাকে চারপাশ, কোথায়জানেন? শিলং-এ।
হাওড়া থেকে এনজেপিগামী যে কোনও ট্রেনে চেপে নিউ জলপাইগুড়ি থেকে একটা গাড়ি ভাড়া করে যেতে হবে ১১৯ কিলোমিটার পথ। রাবাংলা থেকে মাত্র ১৮ কিলোমিটার দূরেই রয়েছে এই সবুজে মোড়া স্বর্গ। হোটেল হোমস্টে আছে, তবে সব যে খুব গিজগিজ করছে, এমন নয়। শান্ত, ছিমছাম, নিরিবিলি জায়গা।
টেমি চা বাগানের ইতিহাস খুব পুরনো নয়, ১৯৬৯ সালে সিকিমে রাজ পরিবারের এস্টেটে টেমি চা বাগানের জন্ম। সিকিমে এই একটিই চা বাগান। তবে সেই চা-এর খ্যাতি বিশ্বজোড়া। দক্ষিণ সিকিমের নামচির কাছে পাহাড়ের খাঁজে চাষ হওয়া অর্গানিক চা রপ্তানি হয় বিদেশেও। স্বর্গীয় তার স্বাদ। সব মিলিয়েই সিকিম, একটা ছবির মতো সুন্দর রাজ্য। আর সে রাজ্যের টেমি গার্ডেন যেন আরও সুন্দর।