West Bengal

11 months ago

Firing on Police in SitalKuchi : শীতলকুচিতে পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি চালালো দুষ্কৃতীরা, তবে কি সুরক্ষিত নয় পুলিশও

Firing on Police in sitalkuchi
Firing on Police in sitalkuchi

 

শিল্পী দত্ত কোচবিহার ২৫ মে ২০২৩: গোপন সূত্রে খবর পেয়ে দুষ্কৃতীকে ধরতে পুলিশ গেলে পুলিশকে লক্ষ্য করে চলল এলোপাথাড়ি গুলি। এক ভয়ংকর পরিস্থিতির সাক্ষী রইল কোচবিহারের শীতলকুচি। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে বুধবার গভীর রাতে শীতলকুচি থানার ওসির নেতৃত্বে বিরাট পুলিশ বাহিনী শীতলকুচির অন্তর্গত নগরনেপড়া গ্রামে কুখ্যাত দুষ্কৃতী আজিজুল মিয়ার বাড়িতে তল্লাশি চালাতে গেলে আজিজুল মিয়া ওরফে লাল মিয়া বাড়ির পিছন দিয়ে পালিয়ে যাবার সময় পুলিশকে লক্ষ্য করে এলোপাথাড়ি গুলি চালায়। পাল্টা গুলি চালায় শীতলকুচি থানার পুলিশ। রাতের অন্ধকারের সুবিধা নিয়ে পালিয়ে যায় দুষ্কৃতী আজিজুল মিয়া।

ঘটনাকে ঘিরে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ায় এলাকায় । রীতিমতো আতঙ্কিত হয়ে পড়েন এলাকাবাসী। দীর্ঘদিন ধরেই আজিজুল মিয়ার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ ছিল। পুলিশ সূত্রের খবর অনুযায়ী পুলিশের কাছে খবর এসে পৌঁছায় আজিজুল মিয়া নিজের বাড়িতে এসেছেন বুধবার সেইমতো বিরাট পুলিশ বাহিনী আজিজুল মিঞার বাড়িতে গেলে পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়ে পালিয়ে যান তিনি যদিও পরবর্তীতে পুলিশ তার বাড়িতে ঢুকে তল্লাশি চালাতে গেলে আজিজুল মিয়া স্ত্রী ও তার কন্যা পুলিশকে আক্রমণ করে বলে জানিয়েছেন মাথাভাঙ্গার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অমিত ভার্মা। এই ঘটনায় দু তিনজন পুলিশ কর্মী ধারালো অস্ত্রের আঘাতে আহত হয়েছেন বলেও জানিয়েছেন তিনি যদিও পরবর্তীতে আজিজুল মিয়ার স্ত্রী ও কন্যাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরবর্তীতে তাদের মাথাভাঙ্গা আদালতে তোলা হলে মাথাভাঙ্গা আদালত তাদের ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন। এই ঘটনার পর মাথাভাঙ্গার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অমিত ভর্মার নেতৃত্বে বিলাস পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে উপস্থিত হন রীতিমতো মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে তারা গুলির খোল গুলি উদ্ধার করার চেষ্টা করেন। পুলিশ সূত্রে পাওয়া খবর অনুযায়ী প্রায় তিন-চারটি গুলির খোল উদ্ধার হয়। এর আগে বারংবার সন্ত্রাসের খবরে রাজ্যের শিরোনামে উঠে আসে কোচবিহারের শীতলকুচি। ২০২১ এর বিধানসভা নির্বাচনের সবচেয়ে বড় ঘটনাটি ঘটে এই শীতলকুচিতে। পরবর্তীতে ভোট পরবর্তী হিংসায় রীতিমতো সন্ত্রাস কবলিত এলাকার চেহারা শীতলকুচি। এক প্রকার দুষ্কৃতীদের  আতুর ঘরে পরিণত হয় এই শীতলকুচি।

এর আগেও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামানিক শীতলকুচিতে সভা করতে এসে অভিযোগ করেন এই এলাকায় লুকিয়ে রয়েছে বিভিন্ন দুষ্কৃতীরা। তারপরেও হুস ফেরেনি প্রশাসনের। এবার দুষ্কৃতীকে ধরতে গিয়ে তাই আক্রান্ত স্বয়ং পুলিশ। পুলিশ যেখানে রক্ষক সেই পুলিশকেই যখন দুষ্কৃতীরা আক্রমণ করে এর থেকে সহজে অনুমেয় কতটা ভয়ংকর পরিস্থিতির চেহারা নিয়েছে কোচবিহারের বিস্তীর্ণ এলাকা। বারংবার বিরোধীরা প্রশ্ন তুলেছেন পুলিশের ভূমিকা নিয়ে এবার সে জায়গায় দাঁড়িয়ে আক্রান্ত পুলিশ ফলে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিয়ে উঠছে বিস্তার প্রশ্ন ? এই প্রসঙ্গে মাথাভাঙ্গার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অমিত ভার্মা বলেন - এই দুষ্কৃতি সম্বন্ধে দীর্ঘদিন ধরেই খবর ছিল গতকাল আমরা খবর পাই রাতেই বাড়িতে তিনি এসেছিলেন সেইমতো পুলিশ তাকে গ্রেফতার করতে এলে তিনি পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি চালায় পাল্টা পুলিশ ও গুলি চালায় যদিও এই ঘটনায় কেউ হতাহত হয়নি তবে আজিজুল মিয়া রাতের অন্ধকারে পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। পরবর্তীতে তার মেয়ে এবং স্ত্রী ধারালো অস্ত্র দিয়ে পুলিশকে আঘাত করে যদিও তাদেরকে গ্রেফতার করে মাথাভাঙ্গা আদালতে তোলা হয়েছে। এই ঘটনা ঘিরে শুরু হয়েছে চরম রাজনৈতিক তরজা।

এই প্রসঙ্গে শীতল কুচির বিজেপি বিধায়ক বরেনচন্দ্র বর্মন বলেন - সমগ্র পশ্চিমবঙ্গ বারুদের স্তুপে দাঁড়িয়ে রয়েছে। বোম বন্দুক বোমা দুষ্কৃতীদের উন্মুক্ত দুয়ার হয়েছে পশ্চিমবঙ্গ। এই সরকারের পুলিশ পর্যন্ত সুরক্ষিত নয় তাহলে কোথা থেকে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা হবে অবিলম্বে এই সরকারের পদত্যাগ করা উচিত। যদিও এই প্রসঙ্গে পুলিশের পাশে দাঁড়িয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র তথা কোচবিহারের প্রাক্তন সাংসদ পার্থপ্রতিম রায়। তিনি বলেন রাজ্যের সরকার কখনোই দুষ্কৃতীদের সাথে আপোষ করে না সে কারণেই দুষ্কৃতীদের ধরতে পুলিশ গিয়েছিল তারপর কি কারণে কি বিষয়ে গুলি চলেছে সে বিষয়ে আমার এখনো জানা নেই তবে কাউকেই ছাড়া হবে না রাজ্যের পুলিশ যথেষ্ট পারদর্শী এবং রাজ্য সরকার এ বিষয়ে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। বিরোধীদের প্রসঙ্গে তিনি বলেন বিরোধীরা শুধু দোষারোপ করতে জানেন। যদিও এই ঘটনা নিয়ে রীতিমতো চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে সমগ্র জেলায়। প্রশ্ন উঠছে এত বোমা বন্দুক কোথা থেকে আসছে ? কিভাবে দুষ্কৃতীদের হাতেই বোমা বন্দুক পৌঁছে যাচ্ছে ? যদি পুলিশ সুরক্ষিত না থাকে তাহলে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা বিশবাও জলে। সামনেই পঞ্চায়েত নির্বাচন তার আগে যেভাবে বারংবার উত্তপ্ত হচ্ছে কোচবিহার তাতে রীতিমতো চিন্তার ভাঁজ সাধারণ মানুষের মনে। নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন কোচবিহারবাসী।

You might also like!