দূরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্ক: ব্রণ, শুষ্ক ত্বক বা অন্যান্য সাধারণ ত্বকের সমস্যায় অনেকেই চিকিৎসকের কাছে না গিয়ে ঘরোয়া উপায়ে সমাধান খোঁজেন। ইউটিউব, ইনস্টাগ্রাম বা অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে নেটপ্রভাবীরা বিভিন্ন রকম ঘরোয়া ‘টোটকা’ বা ‘DIY স্কিন কেয়ার’ টিপস দিয়ে থাকেন। এতে প্রভাবিত হয়ে বহু মানুষ তা নিজের ত্বকে প্রয়োগও করেন। ঘরোয়া উপায়ে যত্ন নেওয়ার এই প্রবণতা নতুন নয়। বহু প্রজন্ম ধরে দাদি-নানির হাতে গড়া কিছু ঘরোয়া উপায় বহু ক্ষেত্রেই কার্যকর প্রমাণিত হয়েছে। তবে ইদানীং সামাজিক মাধ্যমে এই ‘টোটকা সংস্কৃতি’-র জনপ্রিয়তা এতটাই বেড়েছে যে, অনেকে চিকিৎসা না নিয়েই মুখে মাখতে শুরু করেন লেবুর রস, বেসন, বেকিং সোডা, টুথপেস্টের মতো উপাদান।
কিন্তু ত্বক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই অভ্যাস বিপজ্জনক হতে পারে। প্রতিটি মানুষের ত্বকের ধরন আলাদা। কেউ শুষ্ক, কেউ তৈলাক্ত, আবার কারও ত্বক সংবেদনশীল। তাই ব্যবহার করার আগে চলুন জেনে নিই কী কী মুখে মাখা যায় না। নিম্নে উল্লেখিত হল তালিকা!
১) মাজন: ব্রণের উপদ্রব দূর করতে ঘরোয়া টোটকা হিসাবে অনেকেই মাজন ব্যবহার করেন। বেকিং সোডার সঙ্গে মাজন মিশিয়ে ওই মিশ্রণ ব্রণের উপর বিন্দু বিন্দু করে লাগালে হয়তো সমস্যা মেটে। কিন্তু রূপটান শিল্পীরা বলছেন, এই টোটকা ত্বককে অতিরিক্ত শুষ্ক করে দেয়। ফলে ত্বকে নানা রকম অস্বস্তি বাড়তে পারে।
২) লেবুর রস: ত্বক থেকে রোদে পোড়া দাগ তুলতে মধুর সঙ্গে কিংবা ঘরোয়া প্যাকে লেবুর রস মিশিয়ে থাকেন অনেকেই। লেবুর মধ্যে রয়েছে সাইট্রিক অ্যাসিড, যা প্রাকৃতিক ব্লিচ হিসাবে কাজ করে। ত্বকের চিকিৎসকেরা বলছেন, লেবুর রসের মধ্যে থাকা এই অ্যাসিড ত্বকের পিএইচের সমতা নষ্ট করে দিতে পারে। ফলে ত্বক কিন্তু অত্যন্ত স্পর্শকাতর হয়ে পড়ে। রোদ লাগলে ত্বকে অ্যালার্জিজনিত সমস্যাও বেড়ে যেতে পারে।
৩) বডি লোশন: স্নান সেরে এসে গায়ে বডি লোশন মাখতে মাখতে তাড়াহুড়োতে সেই হাতটিই মুখে ঘষে নেন অনেকে। হাতের তালুতে লেগে থাকা বাড়তি ক্রিমের সদ্ব্যবহারও হয়। তবে, ত্বকের চিকিৎসকেরা বলছেন, শরীরের অন্যান্য অংশের চামড়া মুখের তুলনায় বেশিই খসখসে। তাই মুখে মাখার ক্রিমের চাইতে বডি লোশন একটু বেশিই ঘন হয়। সে ক্ষেত্রে এটি মুখে মাখলে কিন্তু সমস্যা হতে পারে।
৪) পেট্রোলিয়ম জেলি: ফাটা ঠোঁট থেকে ফাটা গোড়ালি— সবের ওষুধ পেট্রোলিয়ম জেলি। কিন্তু মুখের চামড়ায় যদি ফাটল ধরে, সেখানে ভুলেও পেট্রোলিয়ম জেলি মাখা যাবে না। তাতে ত্বকের সমস্যা আরও বেড়ে যেতে পারে।
৫) গায়ে মাখার সাবান: গায়ে মাখার তরল সাবান ত্বকের জন্য ভাল। তা সত্ত্বেও অনেক বাড়িতেই এখনও ‘বার’ সাবান ব্যবহার করা হয়। আর এই ধরনের সাবানের মধ্যে ক্ষারের পরিমাণ বেশি থাকে। যা ত্বক অতিরিক্ত শুষ্ক করে দেয়। তাই এই ধরনের সাবান মুখে মাখতে বারণ করা হয়।
অতএব, প্রাকৃতিক বা ঘরোয়া টোটকার প্রতি অন্ধ বিশ্বাস না রেখে, নিজের ত্বকের প্রকার বুঝে এবং সতর্কতার সঙ্গে এগোনোই বুদ্ধিমানের কাজ। সোশ্যাল মিডিয়ার ট্রেন্ড অনুসরণ করার আগে, নিজের ত্বকের নিরাপত্তাটাই হোক অগ্রাধিকার।