
দূরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্ক: ফল খাওয়ার পর সাধারণত খোসা যায় ময়লার বালতিতে। কোথাও আবার সেই খোসা জমিয়ে রাখা হয় বাগানের সার বানানোর জন্য, কেউ বা ব্যবহার করেন ত্বকচর্চায়। কিন্তু অনেক সময় ফলের চেয়ে তার খোসাই বেশি উপকারী হতে পারে। তাই খোসা ফেলে দেওয়ার বদলে খেয়ে দেখলেও লাভই হবে। নীচে রইল ৪ ধরনের ফলের খোসার উপকারিতা।
∆ আপেলের খোসার উপকারিতা— অনেকেই খোসা সমেত আপেল খান। তবে কেউ কেউ আবার খোসা ছাড়িয়ে খেতে ভালবাসেন। কিন্তু ভাল করে ধুয়ে নিতে পারলে খোসা সমেত খাওয়া ভাল, তার কারণ এতে নানাবিধ পুষ্টিগুণ রয়েছে।
প্রচুর অ্যান্টি–অক্সিড্যান্ট: দীর্ঘস্থায়ী প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে আপেলের খোসা। পাশাপাশি, বিভিন্ন দীর্ঘমেয়াদি অসুখের ঝুঁকি কমানোর জন্য কার্যকরী হতে পারে।
হরমোনের ভারসাম্য রক্ষা: হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখার কাজে বাধা সৃষ্টি করতে পারে, এমন রাসায়নিকের প্রভাব কমাতে সাহায্য করতে পারে আপেলের খোসা। কারণ এতে থাকা ক্লোরোফিল সেই রাসায়নিক যৌগের সঙ্গে লড়াই করতে পারে।
ফাইবারের শক্তিশালী উৎস: আপেলের খোসায় থাকা ফাইবার ঘনঘন খিদে পাওয়ার প্রবণতাকে নিয়ন্ত্রণ করার পাশাপাশি অন্ত্রের স্বাস্থ্য উন্নত করে এবং বিপাকজনিত রোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।
∆ কলার খোসার উপকারিতা— কলার খোসা সাধারণত খাদ্যবস্তু হিসেবে বিবেচিত হয় না। কিন্তু এতে থাকা পুষ্টি উপাদান স্বাস্থ্যের নানা রকম উপকার করতে পারে।
ভরপুর পুষ্টি উপাদান: পটাশিয়ামের মতো প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদানে ভরা কলার খোসা। দৈনিক প্রয়োজনের প্রায় ৪০ শতাংশ পটাশিয়াম কলার খোসায় পাওয়া যায়। উপরন্তু ম্যাগনেশিয়াম, ক্যালশিয়াম, আয়রন এবং জ়িঙ্কে ভরপুর এই ফলের খোসা।
মেজাজ ও ঘুমের উন্নতি: কলার খোসায় থাকে ট্রিপটোফ্যান নামক অ্যামাইনো অ্যাসিড, যা মেজাজ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। কাঁচকলার খোসা আবার সেরোটোনিন ও ম্যাগনেশিয়ামে সমৃদ্ধ, যা ঘুমের মান উন্নত করার কাজে সাহায্য করতে পারে।
হার্টের স্বাস্থ্যরক্ষা: কলার খোসার পলিফেনল কোলেস্টেরলের মাত্রা বজায় রাখতে সাহায্য করে। এতে থাকা ফাইবার হার্টের জন্য বেশ উপকারী।
∆ লেবুর খোসার উপকারিতা— লেবুর রসের চেয়ে নাকি খোসায় বেশি পুষ্টিগুণ রয়েছে। ঘরোয়া নানা কাজে যে ভাবে ব্যবহৃত হয়, স্বাস্থ্যের যত্নেও ততখানি কাজে আসতে পারে লেবুর খোসা।
দাঁতের ক্ষয়রোধ: দাঁতের ক্ষয় কমাতে সাহায্য করে লেবুর খোসা। এর পুষ্টি উপাদানগুলি মুখের ব্যাক্টেরিয়া কমিয়ে দাঁতের ক্ষয় ও মাড়ির সংক্রমণ রোধে সহায়তা করে।
অ্যান্টি-অক্সিড্যান্টে সমৃদ্ধ: একাধিক গবেষণায় দেখা গিয়েছে, লেবুর খোসায় ফলের চেয়ে বা রসের তুলনায় অনেক বেশি পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট থাকে।
ক্যানসারের ঝুঁকি কমানো: কিছু পরীক্ষায় দেখা গিয়েছে, লেবু-সহ বিভিন্ন সাইট্রাস ফলের খোসা নির্দিষ্ট কিছু ক্যানসারের ঝুঁকি কমাতে পারে। যদিও এই দাবির পক্ষে আরও কিছু গবেষণার প্রয়োজন রয়েছে।
∆ কমলালেবুর খোসার উপকারিতা— ভিটামিন, খনিজে ভরপুর কমলালেবুর খোসা যেমন রান্নায় কাজে লাগে, তেমনই সুস্বাস্থ্য বজায় রাখার জন্যও বেশ কার্যকরী।
জলের ঘাটতি পূরণ: কমলালেবু এবং তার খোসায় জলের পরিমাণ প্রায় ৮৭ গ্রাম। তার মধ্যে খোসাতেই রয়েছে ৭৩ গ্রাম। ফলে জলের ঘাটতি দেখা দিলে খোসা খুবই উপকারী হতে পারে।
হজমশক্তির উন্নতি: কমলালেবুর খোসায় প্রিবায়োটিক রয়েছে, যা অন্ত্রের উপকারী ব্যাক্টেরিয়াগুলিকে পুষ্টির জোগান দিতে পারে। ফলে সামগ্রিক ভাবে হজমের সমস্যার সঙ্গে মোকাবিলা করা সহজ হয়ে যায়।
মলত্যাগের প্রক্রিয়া সহজ হয়: পেকটিন নামক দ্রবণীয় ফাইবারে ভরপুর কমলার খোসা। এর ফলেই রোজের মলত্যাগের প্রক্রিয়া খানিক সহজ হয়ে ওঠে।
