
দূরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্ক: টেন্ডারের নথি সামনে রেখে অভিযোগ তুললেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী—নির্বাচনের আগে রাজ্যের উন্নয়নমূলক কাজ ইচ্ছাকৃতভাবে করা হচ্ছে না। তাঁর পরামর্শ, ঠিকাদাররা এই সময়ে নতুন কোনও কাজ না নেওয়াই ভালো, কারণ কাজ করলেও টাকা মিলবে না। তিনি বলেন, আগামী ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনী আচরণবিধি কার্যকর হবে, ফলে প্রকল্পের অগ্রগতি থমকে যাবে এবং ঠিকাদাররা এক টাকাও পাবেন না।
শুভেন্দু বলেন, ‘‘রাজ্যের পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দপ্তরে ৯,১১৪টি স্কিমে টেন্ডার চলছে। ২১দিনের মধ্যে ওয়ার্ক অর্ডার বেরোবে। ৭ হাজার কোটি টাকা রাজ্যের তহবিল রয়েছে বলে বলা হলেও বাজেটে এজন্য কোনও অর্থ বরাদ্দ নেই। ভোটের আগে জোর করে কাজ করাতে চাইছে। তাই ঠিকাদারদের বলছি কাজ নেবেন না। কোনও পেমেন্ট পাবেন না।’’ এরপরই বিরোধী দলনেতার মন্তব্য, ‘‘বিজেপি আসছে। রাজ্যের পুনর্নিমানের দায়িত্ব আমাদের।’’ রাজ্যের উন্নয়নের জন্য কাজ করতে ঠিকাদারদের নিষেধ করা নিয়ে বিরোধী দলনেতার এই মন্তব্য প্রসঙ্গে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষকে। সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে কুণাল বলেন, ‘‘রাজ্য সরকার উন্নয়ন-পরিকাঠামোর কাজ করবে। মানুষের উপকার হবে। সেখানে বিরোধীদের কাজ হচ্ছে দিল্লিতে গিয়ে ১০০দিনের কাজের বরাদ্দ বন্ধ করে আসা। টাকা না এলে কার ক্ষতি। সামনে ভোট আছে বলে কি উন্নয়নের কাজ হবে না।’’ বিরোধী দলনেতার এহেন মন্তব্য নিয়ে কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিমের বক্তব্য, ‘‘পুরসভা যদি ঠিকাদারদের মাধ্যমে চলে উনি(শুভেন্দু) বলে থাকেন, তাহলে উনিও তো সাংসদ ছিলেন। ঠিকাদারদের দিয়ে কাজ করাতেন?’’
অন্যদিকে, শুভেন্দুর অভিযোগ, হাজার হাজার কোটি টাকার কাটমানি নিয়ে ঠিকাদারদের টাকা দেওয়া হচ্ছে না। এই পরিপ্রেক্ষিতে তিনি ব্রোকারদের ছবিও বুধবার সাংবাদিক সম্মেলনে প্রকাশ করেন। এদিন এসআইআর প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে ফের রাষ্ট্রপতি শাসনের হুঁশিয়ারি শোনা গিয়েছে শুভেন্দু অধিকারীর মুখে। স্বচ্ছভাবে এসআইআর প্রক্রিয়া হতে না দিলে আগামী দিনে রাজ্যে যে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি হতে পারে, এই হুঁশিয়ারি ফের দিয়ে তাঁর বক্তব্য, ‘‘আমরা রাষ্ট্রপতি শাসন দাবি করছি না। আমরা শুধু ফ্রি আর ফেয়ার নির্বাচনের কথা বলছি। ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে প্রক্রিয়া স্বচ্ছভাবে সম্পন্ন না হলে সংবিধান অনুযায়ী পদক্ষেপ হবেই।’’ এ প্রসঙ্গে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করলে তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, ‘‘যতবার রাষ্ট্রপতি শাসনের কথা মুখে আনবেন এরা জানেন গো-হারা হারবেন। বঞ্চনা-প্রতিহিংসার প্রশ্নে হারবে বিজেপি। সে কারণেই রাষ্ট্রপতি শাসন করতে হবে। তৃণমূল এসবে ভয় পায় না। যেদিন ভোট হবে আড়াইশোর বেশি আসন নিয়ে ফিরে আসবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।’’
এদিকে, বিজেপির রাজ্য দপ্তরে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে শুভেন্দু অধিকারী আরও দাবি করেন, তৃণমূলের হাতে পৌঁছনো রিপোর্ট অনুযায়ী এসআইআর প্রক্রিয়ার ফলে ভোটার তালিকা থেকে প্রায় ১ কোটি ১৫ লক্ষ নাম বাদ পড়তে পারে। সেই আশঙ্কাতেই সরকার পুলিশকে ব্যবহার করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ তাঁর। বিরোধী দলনেতার বক্তব্য, আগামী ৭ ডিসেম্বর পুলিশের বদলির তালিকা প্রকাশ হওয়ার কথা। পরে বুধবার সন্ধ্যায় হাওড়ার দাসনগরে ‘একতা যাত্রা’-য় যোগ দেন শুভেন্দু।
