ঢাকা, ৮ আগস্ট : জ্বালানির দাম বৃদ্ধিতে উত্তেজনা অব্যহত বাংলাদেশে। দফায় দফায় দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বিক্ষোভ-সংঘর্ষের খবর মিলছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কঠোর প্রশাসনও। এবার ঢাকায় পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর করার ঘটনায় ৬ জনকে গ্রেফতার করল ঢাকা পুলিশ। জানা গিয়েছে, ধৃতরা সকলেই জামাত শিবিরের সদস্য।
সম্প্রতি বাংলাদেশে ব্যাপক হারে বৃদ্ধি করা হয়েছে জ্বালানির মূল্য । কেরোসিনের দাম ৮০ টাকা থেকে বেড়ে ১১৪ টাকা করা হয়েছে। বেড়েছে পেট্রোল-ডিজেলের দামও। বর্তমানে লিটার প্রতি পেট্রোলের দাম ৮৬ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১৩০ টাকা করা হয়েছে। হঠাৎ সরকারের এই সিদ্ধান্তে বেজায় ক্ষেপেছে সাধারণ মানুষ। ঢাকা, চট্টগ্রাম, শ্যামলী সহ একাধিক জায়গায় দফায় দফায় বিক্ষোভ কর্মসূচি চলছে। সরকারি সম্পত্তিও ভাঙচুর চলছে জ্বালানির দাম কমানোর দাবিতে। ক্ষিপ্ত জনতাকে সামাল দিতে লাঠিচার্জ শুরু করেছে পুলিশও। শনিবার ও রবিবারে জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে বের হওয়া ঢাকার শ্যামলী এলাকায় মিছিলের একটি অংশই পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর করে। ওই ঘটনায় শতাধিক ব্যাক্তির নামে মামলা দায়ের হয়েছে। অভিযুক্তদের মধ্যে রবিবার ছয়জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। জামাত শিবিরের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা দায়ের করা হয়েছে বলেও জানা গিয়েছে।
ঢাকার পুলিশ সূত্রের খবর, গাড়ি ভাঙচুর ও নাশকতার অভিযোগে ঢাকা মহানগর উত্তর জামাতের সাধারণ সম্পাদক মহম্মদ রেজাউল করিম সহ একাধিক ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই রবিবার সন্ধ্যায় ৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়। ধৃতদের মধ্যে কয়েকজন শ্যামলীর বাসিন্দা। বাকিরা শের-এ-বাংলা নগর থানা জামাতের নেতা- কর্মী বলেই জানা গিয়েছে। শুধুমাত্র শ্যামলী নয়, ঢাকার পল্টনেও আওয়ামি লিগের দফতরে বৈঠক চলাকালীন ধুন্ধুমার হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে মাঠে নামেন নিরাপত্তারক্ষীরা। একই পরিস্থিতি বিএনপির-র কার্যালয়েও, সেখানেও তুলকালাম হয় মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদ ঘিরে। হামলার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে বহু বিএনপি কর্মী-সমর্থককে।
অন্যদিকে, পেট্রোপণ্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সরব হয়ে ঢাকার শাহবাগ মোড়ে সমাবেশ ডাকে বামপন্থী ছাত্র সংগঠনগুলি। সেই সমাবেশে হামলার অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। বিক্ষোভকারীদের দাবি, সমাবেশের শেষদিকে আচমকাই বামকর্মীদের উপর লাঠিচার্জ শুরু করে পুলিশ। ঘটনায় কমপক্ষে ২০ জন আহত হয়েছে। বহু নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। তবে লাঠিপেটা করে তাঁদের দমিয়ে রাখা যাবে না, আন্দোলন তীব্রতর হবে বলেই জানিয়েছে বাম ছাত্র-যুবরা। প্রসঙ্গত, মাসখানেক আগে প্রতিবেশী দেশ শ্রীলঙ্কায় যে বিক্ষোভের চিত্র দেখা গিয়েছিল, তারই পুনরাবৃত্তি হচ্ছে বাংলাদেশে।