দুরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্কঃ দেশের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতার অভিযোগে সাম্প্রতিক অতীতে অন্তত ২৪ জন রুশ বিজ্ঞানী গ্রেপ্তার হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে তিন জনের মৃত্যুও হয়েছে কাস্টডিতে। কিন্তু এতজন বিজ্ঞানী আচমকা 'বিশ্বাসঘাতক' হয়ে গেলেন কী করে? সত্যিই কি বিশ্বাসঘাতকতা নাকি পুতিনের রাগের বলি?
রাশিয়ার ফিজিসিস্ট অ্যানাতোলি মাসলভকে বিশ্বাসঘাতকতার অভিযোগে ১৪ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। গত এপ্রিলে রুশ বিজ্ঞানী আলেকজান্ডার কুরানভের সাত বছরের জেল হয়েছে। ঘটনাচক্রে যতজন গ্রেপ্তার হয়েছেন, তাঁরা প্রত্যেকেই রাশিয়ার 'হাইপারসোনিক মিসাইল' তৈরির সঙ্গে যুক্ত।
শব্দের মতো দ্রুতগতিতে ১০ গুণ বেশি পে-লোড বইতে সক্ষম এই মিসাইল রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ড্রিম প্রজেক্ট। রুশ বিজ্ঞানীদের একাংশের দাবি, শুধুমাত্র পুতিনের ইগো স্যাটিসফাই করতেই এই প্রজেক্টের সঙ্গে যুক্ত বিজ্ঞানীদের জেলে পোরা হচ্ছে।
বিজ্ঞানীদের হয়ে মামলা লড়া সংগঠনটির দাবি, সকলের ক্ষেত্রেই একই অভিযোগ- আন্তর্জাতিক কোনও কনফারেন্সে যোগ দিতে গিয়ে বা কোনও রিসার্চ পেপারে রাশিয়ার এই গোপন মিসাইলের সিক্রেট ফাঁস করে দিয়েছেন এই বিজ্ঞানীরা! রুশ প্রশাসনের দাবি, এঁদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ 'গুরুতর'।
অন্যদিকে, এই বিজ্ঞানীদের সহকর্মীরা একটি খোলা চিঠি লিখেছেন। তাঁদের বক্তব্য, অভিযুক্তরা প্রত্যেকেই নামজাদা বিজ্ঞানী। আন্তর্জাতিক বহু নামী ম্যাগাজ়িনে তাঁদের কাজের কথা ছাপা হয়েছে। মেধার সুবাদেই আন্তর্জাতিক মঞ্চে সম্মানিত হয়েছেন তাঁরা, আর তাতেই রাগ পুতিনের!
তাঁর অধীনে কাজ করে কেন কেউ আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পাবেন, এটাই নাকি রাগ রুশ প্রেসিডেন্টের! তাই বিদেশি জার্নালে যে কোনও লেখালিখিকেই 'মাতৃভূমির সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা' বলে দাগিয়ে দিচ্ছে রাশিয়া! খোলা চিঠিতে বিজ্ঞানীদের আক্ষেপ, 'আজকের সম্মান কাল আমাদের অপরাধ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। জানি না এভাবে আর রাশিয়ায় থেকে কাজ করা সম্ভব হবে কি না!'
এদিকে, দীর্ঘদিন রাশিয়ার ক্ষমতায় আছেন ভ্লাদিমির পুতিন। তবে পুতিনের সঙ্গে প্রকাশ্যে তাঁর পরিবারের সদস্যদের খুব কমই দেখা গিয়েছে। তাঁর পরিবারের সদস্যদের ছবিও তেমন একটা পাওয়া যায় না। এ নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নও বার বার এড়িয়ে গিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।