Life Style News

7 hours ago

Taste & Wellness :স্বাস্থ্য আর স্বাদের মিশেল? ‘এ২’ ঘি নিয়ে উত্তেজনা তুঙ্গে!

desi cow ghee
desi cow ghee

 

দুরন্তবার্তা ডিজিটাল ডেস্ক : প্রতি মাসে ঘি কিনতে কতটা বাজেট রাখেন আপনি? মুদির দোকানে সাধারণত ১০০ গ্রাম ঘি মিলবে ৭০-৮০ টাকায়। ঝর্না, মর্টন ডেয়ারি বা লক্ষ্মী ঘি—এই রকম বাংলার পরিচিত ব্র্যান্ডের খাঁটি গাওয়া ঘি কিনতে চাইলে ৫০০ গ্রামের শিশির দাম গড়ে পড়ে ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা। আবার দেশজ ব্র্যান্ডগুলোর ‘দেশি ঘি’-র ৫০০ গ্রামের কৌটো পাওয়া যায় ৩০০-৩৫০ টাকার মধ্যে।

কিন্তু ভাবুন তো, যদি আপনাকে সেই একই পরিমাণ ঘি কিনতে দিতে হয় প্রায় ২০০০ টাকা, তাহলে কী আপনি রাজি হবেন? হয়তো প্রথমে মাথা নাড়বেন, বলবেন "অমন দামেও ঘি হয় নাকি!" কিন্তু যদি জানা যায়, এই ঘি হার্টের সমস্যা প্রতিরোধে সাহায্য করতে পারে, ডায়াবিটিস নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা নেয়, লিভার ভালো রাখে এমনকি ক্যানসারের ঝুঁকি কমাতেও সহায়ক—তাহলে কি মত বদলাবে?

বাজারে এমন ঘি সত্যিই পাওয়া যায়। তার নাম এ ২। ওই ঘিয়ের প্রতি লিটারের দাম না হক সাড়ে তিন হাজার টাকা! আর আপাতত এই ঘি নিয়েই হইচই স্বাস্থ্য সচেতন দুনিয়ায়। দেশে তো বটেই বিদেশেও চাহিদা বাড়ছে এ২ ঘিয়ের। প্রায় পাঁচগুণ বেশি দাম দিয়ে তা কিনছেনও স্বস্থপ্রেমী মানুষজন। কারণ, তাঁদের ধারণা এই ঘি এক ধরনের ‘সুপার ফুড’।


কেন এই ধারণা? কেন এর এত বেশি দাম, এতে কী কী গুণ রয়েছে, সেই প্রশ্নের উত্তর জানার আগে জেনে নেওয়া যাক এই মহার্ঘ্য ঘি আসলে কী বস্তু! সাধারণ ঘিয়ের সঙ্গে এর তফাতই বা কোথায়?

সাধারণ ঘি বনাম এ২ ঘি

১. দুধ: ঘি বানানো হয় দুধ থেকে। আর সেই দুধেই দুই ঘিয়ের মূলগত পার্থক্য। এ২ ঘি তৈরি হয় গির, সাহিওয়াল এবং রাঠির মতো ভারতীয় জাতের গরুর দুধ থেকে। অন্য দিকে, সাধারণ ঘি তৈরি করা হয় জার্সি বা হোলস্টেইনের মতো পশ্চিমা জাতের গরু অথবা শংকর জাতের গরুর দুধ থেকে।

২. প্রোটিন: এই দুই ধরনের দুধের পুষ্টিগুণেও পার্থক্য থাকে। গির, সাহিওয়াল এবং রাঠির মতো গরুর দুধে থাকে এ২ বিটা-কেসিন প্রোটিন। আর অন্যান্য গরুর দুধে থাকে এ১ বিটা-কেসিন। নানা গবেষণায় দেখা গিয়েছে এ১ বিটা কেসিন শরীরে নানা রোগের কারণ হতে পারে।

৩. পদ্ধতি: তফাত রয়েছে ঘি বানানোর পদ্ধতিতেও। গরুর দুধকে ফুটিয়ে ঠাণ্ডা করে তাতে দইয়ের সাজা মিশিয়ে দই জমতে দেওয়া হয় সারারাত। তার পরে সেই দই কাঠের লাঠি দিয়ে মথন করে আলাদা করা হয় মাখন বা ননী। সেই মাখন বা ননীতে জাল দিয়ে তৈরি হয় এ২ ঘি। এই পদ্ধতিকে বলা হয় কোল্ড প্রেস বা বিলোনা প্রক্রিয়া। প্রাচীন ওই পদ্ধতি মেশিনে বানানোর সময় সঠিক ভাবে পালন করা হয় না।

সাধারণ ঘি তে থাকা এ১ বিটা কেসিন কি ক্ষতিকর?

এ১ বিটা কেসিন সরাসরি ক্ষতিকর না বললেও কিছু কিছু গবেষণা ওই প্রোটিনের সঙ্গে কয়েকটি রোগের যোগসূত্র খুঁজে পেয়েছে— টাইপ ১ ডায়াবেটিস, হৃদরোগ, আর্টেরিওস্ক্লেরোসিস, অটিজম, সিজোফ্রেনিয়া, শিশুর সাডেন ডেথ সিন্ড্রোম।যেহেতু এ২ ঘি ওই প্রোটিন থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত, সে জন্য তাই এই ঘি বেশি নিরাপদ বলেও মনে করছেন অনেকে। পুষ্টিবিদ শ্রেয়া চক্রবর্তী বলছেন, “এ২ ঘি তাঁদের জন্যও ভাল, যাঁদের আইবিএস বা হজমের সমস্যা রয়েছে। কিংবা যাঁরা ল্যাকটোজ ইন্টলারেন্ট অর্থাৎ দুগ্ধজাত খাবার খেতে পারেন না, তাঁরাও এই ঘি খেতে পারবেন।”

এ২ ঘি কে সুপারফুড বলার কারণ কী?

এ যুগে সুপারফুড বলার হয় সেই খাবারকে যাতে নানা ধরনের উপকারী পুষ্টিগুণ থাকে এবং যা শরীরের নানা জৈব প্রক্রিয়াকে সুষ্ঠু ভাবে চালাতে সাহায্য করে। এ২ ঘিয়েও রয়েছে নানা ধরনের উপকারী পুষ্টি। এতে আছে:

ভিটামিন এ: দৃষ্টিশক্তি, ত্বক এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার জন্য অপরিহার্য।

ভিটামিন ডি: ক্যালসিয়াম শোষণ এবং হাড়ের স্বাস্থ্য ভাল রাখে।

ভিটামিন ই: একটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা ফ্রি র‍্যাডিক্যাল দূরে রাখে।

ভিটামিন কে২: হার্টের স্বাস্থ্য এবং হাড়ের ভঙ্গুর হয়ে যাওয়া রোধে করে।

ওমেগা-৩ এবং ওমেগা-৯ ফ্যাটি অ্যাসিড: হার্ট এবং মস্তিষ্কের কাজে সাহায্য করে।

কনজুগেটেড লিনোলিক অ্যাসিড: ফ্যাট ভাঙতে সাহায্য করে এবং প্রদাহ কমাতে পারে।

 

You might also like!