দুরন্তবার্তা ডিজিটাল ডেস্ক : বিশ্বজুড়ে দ্রুত হারে বাড়ছে হৃদরোগের প্রবণতা, যা নিয়ে উদ্বিগ্ন চিকিৎসক মহল। যদিও ধূমপান ছাড়া, সুষম খাবার খাওয়া এবং নিয়মিত শরীরচর্চার মাধ্যমে হার্টকে সুস্থ রাখা সম্ভব, তবুও বহু মানুষই ব্যস্ত জীবনে শরীরচর্চার জন্য সময় বের করতে পারেন না। এই বাস্তবতাকে মাথায় রেখে সম্প্রতি এক গবেষণায় আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশন জানিয়েছে, দিনে খুব অল্প সময় ব্যয় করেই হৃদ্পিণ্ডের যত্ন নেওয়া সম্ভব—শরীরচর্চার সময় নয়, গুণই এখানে বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
কী দাবি
ওই গবেষণায় জানানো হয়েছে, বেশি ক্ষণ শরীরচর্চা না করেও হার্ট সুস্থ রাখা সম্ভব। দিনে মাত্র ৩ মিনিট চলাফেরার মাধ্যমে যাতে ঘাম ঝরে (ইনসিডেন্টাল ফিজ়িক্যাল অ্যাক্টিভিটি বা আইপিএ), সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে।
আইপিএ কী?
দৈনন্দিন জীবনে বাড়ি থেকে অফিস যাতায়াত, বাড়ির কাজ, সিড়ি ভাঙার মতো একাধিক মাধ্যমে দেহে ঘাম ঝরে। সাধারণত সারা সপ্তাহে কোনও প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তিকে ১৫০ মিনিট আইপিএ-র পরামর্শ দেওয়া হয়।
গবেষণায় কী জানা গিয়েছে
অ্যামেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশনের জার্নালে প্রকাশিত গবেষণাপত্রে জানানো হয়েছে, ৪০ থেকে ৭৯ বছর বয়সি ২৪ হাজার মানুষের থেকে পাওয়া তথ্যকে বিশ্লেষণ করে এক সমীক্ষায় এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। তাঁদের মধ্যে কেউ শরীরচর্চা করতেন না এবং তাঁদের কোনও হার্টের অসুখ ছিল না। সপ্তাহে ৩ দিন তাঁদের ফিটনেস ট্র্যাকার থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হয়।
৮ বছর পর পাওয়া যাবতীয় তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গিয়েছে, যাঁরা দিনে কম (৪.৬ মিনিট) এবং মাঝারি আইপিএ (২৩.৮ থেকে ২৩.৯ মিনিট) করেছেন, তাঁদের যথাক্রমে ২৫ থেকে ৩৮ শতাংশ এবং ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ হৃদ্রোগের সম্ভাবনা কমেছে।
আরও জানা গিয়েছে ১ মিনিট দ্রুত আইপিএ এবং ৩ মিনিটের মাঝারি আইপিএ এবং ৩৫ মিনিটের হালকা আইপিএ প্রায় সমান। অর্থাৎ প্রতি দিন ৩ মিনিট মাঝারি ধরনের কায়িক পরিশ্রম করলে, তা বহুলাংশে হার্টের অসুখ দূরে রাখতে সাহায্য করে।
চিকিৎসকেদের পরামর্শ
ভেবেচিন্তে আইপিএ করার প্রয়োজন নেই। পরিবর্তে সাধারণ কিছু সিদ্ধান্ত সাহায্য করতে পারে। যেমন, লিফটের পরিবর্তে সিঁড়ি ব্যবহার করা। আবার স্বল্প দূরত্ব গাড়িতে না অতিক্রম করে, হাতে সময় থাকলে হেঁটে নেওয়া যায়।
সতর্কতা
অল্প সময়ের জন্য কায়িক পরিশ্রম হার্টের অসুখের ঝুঁকি কমাতে পারে। কিন্তু তার মানে এই নয় যে, নিয়মিত শরীরচর্চা করার কোনও প্রয়োজন নেই। যে কোনও রকম শারীরিক কসরত দেহের সার্বিক ভাল থাকার জন্য প্রয়োজন।