দূরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্ক: ভিনরাজ্যে কাজ করতে গিয়ে আবারও হেনস্তার শিকার বাংলার যুবকরা। বাংলাদেশি সন্দেহে মহারাষ্ট্রে আটকানো হয়েছে নদিয়ার রানাঘাট মহকুমার দুই মতুয়া যুবককে। অভিযোগ, সমস্ত বৈধ পরিচয়পত্র থাকা সত্ত্বেও গত ছয় মাস ধরে তাঁদের আটকে রেখেছে মহারাষ্ট্র পুলিশ। ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে নদিয়া জেলায়। আটক দুই যুবক—মণিশংকর বিশ্বাস ও নয়ন বিশ্বাস, দু’জনেই রানাঘাটের রায়নগরের বাসিন্দা। পরিবার সূত্রে খবর, তাঁরা মহারাষ্ট্রে নির্মাণ শ্রমিকের কাজ করতে গিয়েছিলেন। কিন্তু বাংলাদেশি নাগরিক সন্দেহে পুলিশ তাঁদের তুলে নিয়ে যায় এবং বহু চেষ্টা সত্ত্বেও ছাড়া হয়নি এখনো পর্যন্ত।
পরিবারের দাবি, আটক দুই যুবকের কাছে রয়েছে আধার কার্ড, ভোটার কার্ড এবং মতুয়া সম্প্রদায়ের বিশেষ পরিচয় কার্ড। যদিও মতুয়া কার্ড সরকার স্বীকৃত নথি নয়, তবুও আধার ও ভোটার কার্ড থাকা সত্ত্বেও তাঁদের ‘অবৈধ নাগরিক’ বলে দেগে দেওয়া হয়েছে। পরিবারের অভিযোগ, বিজেপি শাসিত মহারাষ্ট্রে ইচ্ছাকৃতভাবে মতুয়া সম্প্রদায়ের ছেলেদের নিশানা করা হচ্ছে। তাঁরা আরও জানিয়েছেন, বহু বার পুলিশ ও প্রশাসনের দ্বারস্থ হলেও কোনও সদুত্তর মেলেনি। শেষমেশ, হতাশ পরিবার পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হস্তক্ষেপের আবেদন জানিয়েছেন।
যুবকদের এক আত্মীয় বলেন, “মহারাষ্ট্রে কাজে গিয়ে আমাদের দুই ছেলে আটকে পড়েছে। মহারাষ্ট্র পুলিশ তাঁদের আটকে রেখেছে। ওঁদের মায়ের অবস্থা খুব খারাপ। কিছুদিন আগে ব্রেন স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়েছেন। গ্রামবাসীদের সাহায্যে চিকিৎসা ও সংসার চলছে। মুখ্যমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ ছেলেদের ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করুন।” তিনি আরও জানিয়েছেন, আমরা বিজেপিকে ভোট দিয়েছি। সেই বিজেপির রাজ্যে আমাদের ছেলে দু’টো আটকে। যুবকদের বাবা নিশিকান্ত বিশ্বাস বলেন, “আমার কিছুই বুঝি না। ছেলেদের ফিরিয়ে দেওয়া হোক।”
এই পুরো বিষয়টি সামনে এনে এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করেছেন তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ সামিরুল ইসলাম। তিনি সামাজিক মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ট্যাগ করে লিখেছেন, ‘এই মতুয়া যুবকদের কাছে সমস্ত প্রয়োজনীয় নথিপত্র রয়েছে। রয়েছে অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসংঘের একটি বিশেষ পরিচয়পত্র। যা আপনার দলের সাংসদ শান্তনু ঠাকুর দিয়েছেন। সেই কার্ডও যুবকদের মহারাষ্ট্রের বিজেপি সরকারের বাঙালি বিরোধী রোষ থেকে রক্ষা করতে পারেনি। তাঁদের বেআইনিভাবে আটকে রাখা হয়েছে।’ তিনি আরও লেখেন, ‘আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই আমরা অনুপ্রবেশকারীদের সমর্থন করছি না। আমাদের লড়াই বাংলাভাষী ভারতীয় নাগরিকদের জন্য যাদের অধিকার ভূলন্ঠিত করা হচ্ছে।’ পোস্টে সামিরুল ইসলাম আরও চারটি প্রশ্ন তুলেছেন।
ভিনরাজ্যে বাংলা থেকে যাওয়া শ্রমিকদের উপর ক্রমাগত বৈষম্য ও হেনস্তার ঘটনা আরও একবার সামনে এল এই ঘটনায়। এখন দেখার, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই বিষয়ে কী পদক্ষেপ নেন এবং কত দ্রুত রানাঘাটের ওই দুই যুবক ঘরে ফিরতে পারেন।
In just a few hours, our Honourable Prime Minister, Shri @narendramodi, will deliver a speech full of lofty promises at a rally in Durgapur.
— Samirul Islam (@SamirulAITC) July 18, 2025
Before addressing the bhai-bahen (brothers and sisters) of Bengal, I urge you, @narendramodi ji, to first listen to the voice of this… pic.twitter.com/4zbpUYiiq4