দূরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্ক: দিনভর ল্যাপটপ, ফোন, বা ডেস্কটপ—আজকের জীবনে এগুলো যেন নিঃশ্বাস নেওয়ার মতোই স্বাভাবিক। অফিস হোক বা ঘরের কাজ, অবসরে সিনেমা দেখা হোক কিংবা বন্ধুদের সঙ্গে চ্যাট—সবই চলছে পর্দার মাধ্যমে। কিন্তু এতক্ষণ ধরে পর্দায় তাকিয়ে থাকতে থাকতে কখন যে চোখ ক্লান্ত হয়ে পড়ে, শুকিয়ে যায়, ব্যথা করে—আমরা টেরও পাই না ঠিকভাবে। এই সমস্যার নামই ‘ডিজিটাল আই স্ট্রেইন’ বা ‘কম্পিউটার ভিশন সিনড্রোম’। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যারা দিনে ৮–১০ ঘণ্টা বা তারও বেশি সময় স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে থাকেন, তাদের চোখে চাপ পড়া, ঝাপসা দেখা, মাথাব্যথা, এমনকি ঘুমের ব্যাঘাত পর্যন্ত হতে পারে।
কিছু সহজ নিয়ম মেনে চললেই এই সমস্যা থেকে রেহাই মিলতে পারে—যেমন:
১। ২০-২০-২০ নিয়ম মানুন: প্রতি ২০ মিনিট স্ক্রিন দেখার পর ২০ সেকেন্ডের জন্য অন্তত ২০ ফুট দূরে তাকান। এতে চোখের পেশি আরাম পায়।
২। স্ক্রিনের উজ্জ্বলতা ঠিক রাখুন: ল্যাপটপ বা মোবাইলের ব্রাইটনেস বেশি থাকলে চোখে চাপ পড়ে। চোখের আরাম অনুযায়ী ব্রাইটনেস ও কনট্রাস্ট ঠিক করুন।
৩। চোখে জলের ছিটে দিন: স্ক্রিনে একটানা তাকালে চোখ শুকিয়ে যায়। ঘন ঘন চোখের পাতা ফেলুন এবং প্রয়োজনে চোখে ঠাণ্ডা জলের ছিটে দিন।
৪। সঠিক আলোতে কাজ করুন: খুব বেশি বা কম আলোয় স্ক্রিন দেখলে চোখের ক্ষতি হয়। ঘরের আলো যেন স্ক্রিনে রিফ্লেক্ট না করে, সেদিকে খেয়াল রাখুন।
৫। নীল আলো থেকে সুরক্ষা: ব্লু-লাইট ফিল্টার অ্যাপ ব্যবহার করুন বা নীল আলো প্রতিরোধী চশমা পরুন। অনেক ল্যাপটপ ও মোবাইলে “নাইট মোড” থাকে—তা অন করে রাখুন।
৬। পর্যাপ্ত ঘুম: রাতে অন্তত ৭–৮ ঘণ্টা ঘুম হলে চোখ বিশ্রাম পায় এবং পরের দিন স্ক্রিনে কাজ করাও তুলনামূলক সহজ হয়।
৭। পুষ্টিকর খাবার খান: গাজর, পালং শাক, ভিটামিন A ও C সমৃদ্ধ খাবার, ওমেগা-৩ যুক্ত মাছ ইত্যাদি চোখের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। এছাড়া দিনে অন্তত একবার খোলা আকাশের নিচে সবুজের দিকে তাকানো চোখের স্বাস্থ্যের জন্য দারুণ উপকারী।
চোখ আমাদের অমূল্য সম্পদ। তাই ডিজিটাল জীবনে চোখের যত্ন নেওয়া অত্যন্ত জরুরি। উপরের নিয়মগুলি মেনে চললে চোখ থাকবে সতেজ ও সুস্থ। প্রয়োজন হলে অবশ্যই চোখের ডাক্তার দেখান। নিজের চোখকে ভালোবাসুন—এই ডিজিটাল দুনিয়ায় টিকে থাকার জন্য এটুকু জরুরি তো বটেই!