দুরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্কঃ ডায়াবেটিস যেমন এখন ঘরে-ঘরে, তেমনই আগামিদিনে ঘরে-ঘরে খুঁজলে একজন ক্যানসার আক্রান্তের খোঁজ পাওয়া যাবে বলে মত চিকিৎসকদের। মহিলাদের মধ্যে কিছু নির্দিষ্ট ক্যানসারের প্রকোপ ভীষণভাবেই বাড়ছে। আর ভারতীয় মহিলাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি যে ক্যানসারের ঝুঁকি থাকে তা হল Cervical cancer বা জরায়ুমুখ ক্যানসার। ক্যানসার আক্রান্ত মহিলাদের মধ্যে অধিকাংশের মৃত্যু হয় এই জরায়ুর ক্যানসার থেকে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বা WHO-এর মতে, বর্তমানে মহিলাদের মৃত্যুর যে সব কারণ রয়েছে, তার মধ্যে চতুর্থ অন্যতম কারণ হল জরায়ুমমুখ ক্যানসার (Cervical cancer)। এই ক্যানসার কিন্তু সম্পূর্ণ নিরাময়যোগ্য, যদি তা আগে ধরা পড়ে। আর এই ক্যানসারে মৃত্যুর কারণ মহিলারা নিজেরাই। কারণ তাঁদের অধিকাংশই নিজেরা সচেতন নন। নিজেদের তাঁরা অনেক বেশি অবহেলার মধ্যে রাখেন। রোগ লক্ষণ দেখা দেওয়ার পরও অতিরিক্ত অবহেলার জন্যই তাঁরা নিজেদের মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেন।
অধিকাংশ নারী এখনও তাঁদের যৌন সমস্যা নিয়ে কথা বলতে ভয় পান। যৌনাঙ্গে কোনও সমস্যা হয়েছে এবং তা পরীক্ষা করতে হবে, এ কথা তাঁরা ভাবতেও পারেন না। আর এই কারণেই রোগ ভিতরে-ভিতরে বাড়তে থাকে। ঠিক সময়ে ধরা পড়লে এই রোগ থেকে ৯১ শতাংশ মুক্ত হওয়া যায়, এমনটাই জানাচ্ছেন চিকিৎসকেরা।
*মহিলাদের পেলভিকে ব্যথার সঙ্গে রক্তপাত হতে থাাকে। দীর্ঘদিন ধরে এই সমস্যা হতে থাকলে খিদে কমে যায়, ক্লান্তি, ওজন কমে যাওয়া, পিঠের দিকে ব্যথা, যোনিপথ ভারী লাগা, হাড় দুর্বল হয়ে ভেঙে যাওয়া, অকারণে যোনি থেকে রক্তপাত এই জাতীয় একাধিক সমস্যা হয়।
*আর তাই এর জন্য প্রধান হল ‘প্যাপ স্মিয়ার’ পরীক্ষা। এই পরীক্ষার মাধ্যমে জরায়ুর কোষের পরিবর্তন খুব সহজে শনাক্ত করা যায়। ২১-২৯ বছরের মহিলাদের এই পরীক্ষা অবশ্যই করণীয়। অন্তত ৩-৫ বছর পর পর এই পরীক্ষা করতেই হবে।
*জরায়ু ক্যানসার ছাড়াও মহিলাদের মধ্যে এইচপিভি শনাক্ত করতে LBC পরীক্ষা করা হয়। এই পরীক্ষার মাধ্যমে কোষে প্রাথমিক ক্যানসার সম্পর্কিত পরিবর্তনগুলি শনাক্ত করা যায়। এছাড়াও সার্ভিক্যাল ক্যানসারের ঝুঁকি কতটা রয়েছে, তা-ও বোঝা যায় এই পরীক্ষার মাধ্যমে। ২১-৬৫ বছরের সকলেরই এই পরীক্ষা করে দেখা উচিত।
*অধিকাংশ Cervical cancer-এর জন্য দায়ী হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস। তবে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হলেই যে সার্ভিকাল ক্যানসার হবে, এমনটাও নয়। মেয়েদের ২৫ বছর বয়স হলেই প্রতি ৫ বছর অন্তর প্যাপ স্মিয়ার, HPV পরীক্ষা করাতে হবে। VIA—এই পরীক্ষাটিও করাতে পারেন ৩০-৬৫ বছরের মহিলারা। এই ক্যানসার প্রতিরোধের সবথেকে ভাল উপায় হল APV ভ্যাকসিন। তবে এমন নয় যে, এই ভ্যাকসিন নিলেই ক্যানসারে আর আক্রান্ত হবেন না। এর জন্য প্রতি ৫ বছর অন্তর প্রয়োজনীয় পরীক্ষা করানো প্রয়োজন।