নদিয়া : রাজ্যের আকর্ষণীয় নানা পুজোর তালিকায় আছে কৃষ্ণনগর রাজবাড়ির পুজো। রবিবার হোমযজ্ঞের মাধ্যমে শুভ সূচনা হয়েছে কৃষ্ণনগর রাজবাড়ির পুজো। উপস্থিত ছিলেন রাজ বাড়ির সদস্যরা।
শাক্ত মতে প্রাচীন ধর্মীয় রীতিনীতিকে বজায় রেখে হোম যজ্ঞের মধ্যে দিয়ে হয় মহারাজা কৃষ্ণচন্দ্রের রাজবাড়ি প্রাঙ্গনে দেবী দুর্গার আরাধনা। সকাল থেকে নদিয়ার কৃষ্ণনগর রাজবাড়িতে দেবী আরাধনার সূচনা পর্বে অংশ নেন রাজ পরিবারের সদস্যরা।
প্রাচীনকাল থেকে কৃষ্ণনগরে মহারাজা কৃষ্ণচন্দ্রের রাজ বাড়িতে দেবী দুর্গাকে মহামায়া রূপে পূজিত হয়ে আসছেন। এই প্রসঙ্গে রাজমাতা অমৃতা রায় বলেন, 'দুর্গা পুজোর অন্যতম প্রধান অঙ্গ হিসেবে হোমযজ্ঞ দিয়ে পুজো শুরু হয়েছে। চলবে নবমী তিথি পর্যন্ত। এছাড়াও প্রাচীন রীতি মেনে সপ্তমীর দিন ৭ রকম, অষ্টমীর দিন ৮ রকম ও নবমীর দিন ৯ রকম পদের উপকরণ সাজিয়ে মাকে ভোগ নিবেদন করা হয়।' রাজ্ বাড়ির পুজোয় থাকে আলাদা মাহাত্ম্য।
পাশাপাশি যুদ্ধবেশে মহামায়া রূপী মা দুর্গার আরাধনা শাক্ত মতে হওয়ার কারণে এখানে বলির প্রথা রয়েছে। তবে বর্তমানে পশু বলির বলির বদলে আখ, কলা ও কুমড়ো বলি দেওয়া হয় বলে জানান তিনি। পূর্বের রীতি অনুযায়ী কামান দাগার মধ্যে দিয়ে দুর্গা পুজোর শুভ সূচনা হওয়ার নিয়ম থাকলেও বর্তমানে আইনি বাধ্যবাধকতার কারণে তা এখন বন্ধ রয়েছে বলেও এই দিন জানান রাজমাতা।
আধুনিকতাকে দূরে সরিয়ে প্রাচীন রীতিকে বজায় রাখার মধ্যে দিয়ে আজও প্রতিবছর বেয়ারাদের কাঁধে চেপে রাজ বাড়ির সরোবরে প্রতিমা নিরঞ্জন করা হয় বলে জানান রাজমাতা অমৃতা রায়।
দুর্গোৎসবকে কেন্দ্র করে প্রতি বছর নদিয়ার রাজ মহারাজা, কৃষ্ণচন্দ্রের রাজভবনে দুর্গা পুজো দেখতে কৃষ্ণনগরের স্থানীয় বাসিন্দারা ছাড়া দূর দুরান্ত থেকে বহু মানুষের সমাগম ঘটে। চলতি বছরের একইভাবে প্রাচীন রীতিনীতিকে বজায় রেখে শাস্ত্রীয় মতে মা দুর্গার আরাধনা করা হচ্ছে বলে এইদিন জানান রাজমাতা।