দুরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্কঃ- মহালয়া মানেই দুর্গাপুজোর
শুভারম্ভ। আর সেই মহালয়ার হাতে গোনা দুই দিনের অপেক্ষা। এই মহালয়াতেই দেবীপক্ষের পুন্যতিথিতে
পিতৃপুরুষের উদ্দেশ্যে তর্পণ করে আপামর বঙ্গবাসী। বিভিন্ন নদীতে ভোর থেকে চলে এই তর্পণ।
তবে মহালয়া কি শুভ নাকি অশুভ? এই নিয়ে অনেকের মত অনেক প্রশ্ন থাকে।
রামায়নে তর্পণের উল্লেখ পাওয়া যায়। রামায়নে কোনও শুভ কাজে যাওয়ার আগে পিতৃপুরুষকে জলদানের উল্লেখ রয়েছে। রাবনের সঙ্গে যুদ্ধ লড়তে যাওয়ার আগেই রাম পিতৃপুরুষকে জল দান করেছিলেন।
অন্যদিকে মহাভারতে আছে এক রোমাঞ্চকর কাহিনী।কুরুক্ষেত্রে
যুদ্ধে মারা যাওয়ার পর কর্ণ স্বর্গের উদ্দেশ্যে রহনা দেন। স্বর্গে যাওয়ার পর তাঁকে
হীর, জহরত, মনি-মানিক্য খেতে দেওয়া হয়। সেই সময় কর্ণ অবাক হয়ে যান। তিনি দেবরাজ ইন্দ্রকে
বলেন, এসব তিনি খাবেন কীভাবে। সেই সময় দেব ইন্দ্র বলেন, জীবিত কালে তিনি অনেক দান,
ধ্যান করেছেন। এমনকী তিনি রক্ষা কবচও দান করেছেন। কিন্তু তিনি কখনই পিতৃপুরুষকে জল
দেননি। তাই তিনি স্বর্গে জল খেতে পারবেন না। এরপরেই একপক্ষ কালে কর্ণ মর্তে ফিরে আসেন।
নিজের পিতৃ পুরুষকে অন্ন জল দেন। নিজের প্রায়শ্চিত্য করেন। এই একপক্ষ কালকে পিতৃপক্ষ
বলা হয়। শেষে তর্পণ হয়। তারপরেই দেবী পক্ষের সূচনা হয়।
এই দিন দেবী দুর্গার চক্ষু আঁকা হয়। মহালয়া শব্দের অর্থ হল মহান আলয় অর্থাৎ আশ্রয়। এক্ষেত্রে দেবী দুর্গাকে আশ্রয় বোঝানো হয়। এদিনই পিতৃপক্ষের অবসান হয়। দেবী পক্ষের সূচনা হয়। সেক্ষেত্রে মহালয়াকে অনেকে শুভ মনে করেন। সমস্ত অশুভ শক্তির বিনাশ দেবীপক্ষের সূচনাতে হয়। এছাড়াও তর্পণের অর্থ হল জগৎব্যাপী মহামিলন ক্ষেত্র। তাই একে কখনই অশুভ বলা যেতে পারে না। আবার মহালয়ার দিন তর্পণ করা হয়। অর্থাৎ পূর্বপুরুষদের উদ্দেশ্যে জল দান করা হয়। এটা পিতৃপুরুষকে স্মরণ করার দিন। তাই কোনওভাবেই এই দিনটাকে শুভ মনে করা যেতে পারেন না বলে অনেকে মনে করেন। তাঁরা মনে করেন, এই দিনটা আসলে শোক পালনের দিন।