দুরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্কঃ কোজাগরী লক্ষ্মীপুজোর দিন মা লক্ষ্মীর আরাধনায় সামিল হন, অনেকে আবার কালীপুজোর দিনেও দেবীর আরাধনা করেন। মা লক্ষ্মী পূজিতা হন দেবীপক্ষের শেষের পূর্ণিমাতে। অনেকে যাকে কোজাগরী লক্ষ্মীপুজো বলে থাকেন৷ কিন্তু অনেকের মনে এই ‘কোজাগরী’ শব্দটা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে৷ ‘কোজাগরী’ কী, এই বিষয়ে স্পষ্ট ধারণা নেই অনেকেরই৷
পূরাণ মতে, কোজাগরী শব্দটি এসেছে ‘কো জাগর্তি’ থেকে, যার অর্থ ‘কে জেগে আছো’৷ কথিত রয়েছে, এই পূর্ণিমার রাতে নাকি দেবী লক্ষ্মী জগৎ পরিক্রমায় বেরোন৷ তিনি দেখেন কেউ সারারাত জেগে আছেন কিনা। অনেকে এও বলে থাকেন, ওইদিন রাতে যে ব্যক্তি জেগে থাকেন এবং পাশাখেলা করেন তাঁকে মা লক্ষ্মী ধনসম্পত্তি দান করেন৷তাই ভক্তিপূর্ণ চিত্তে লক্ষ্মীপুজো করার পরে প্রথমে বালক, বৃদ্ধ ও শিশুদের খাবার গ্রহণ করাতে হয়। আজও ধনসম্পদের দেবী লক্ষ্মীকে পাওয়ার জন্য গৃহস্থেরা সারারাত ঘিয়ের প্রদীপ জ্বালান। কোজাগরী লক্ষ্মীপুজোর দিন বাংলার প্রতিটি ঘর মুখরিত হয়ে ওঠে শঙ্খধ্বনিতে৷
কোজাগরী লক্ষ্মীপুজোর সঙ্গে অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িয়ে রয়েছে কৃষি সমাজ। এর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে আলপনা। এই পুজো হয় মূলত প্রতিমা, সরা, নবপত্রিকা কিংবা থোড়ের তৈরি নৌকোয়। লক্ষ্মীর সরাও হয় নানারকমের। যেমন – ঢাকাই সরা, ফরিদপুরি, সুরেশ্বরী এবং শান্তিপুরী সরা। নদিয়া জেলার তাহেরপুর, নবদ্বীপ এবং উত্তর ২৪ পরগনার বিভিন্ন স্থানে লক্ষ্মীসরা আঁকা হয়।
অঞ্চলভেদে লক্ষ্মীর সরায় তিন, পাঁচ, সাতটি পুতুল আঁকা হয়। এতে থাকে লক্ষ্মী, জয়া বিজয়া-সহ রাধা কৃষ্ণ, সপরিবার দুর্গা ইত্যাদি। ফরিদপুরের সরায় দেবদেবীরা সাধারণত একটি চৌখুপির মধ্যে থাকেন। আবার সুরেশ্বরী সরায় উপরের অংশে মহিষমর্দিনী আঁকা হয় আর নীচের দিকে থাকেন সবাহন লক্ষ্মী।