দুরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্কঃ- কথায় আছে, ভক্তের ডাকে সাড়া
দেন ভগবান শ্রীকৃষ্ণ। চলতি বছরের আগামী ২৬শে আগস্ট পালিত হবে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের জন্মদিন
তথা জন্মাষ্টমী। গোটা দেশ ব্যাপি পালিত হয় এই উৎসব। বিশেষত মথুরা ও বৃন্দাবনে এই উৎসব
বিশেষভাবে পালিত হয়। মনে করা হয়, এই দিন ভগবান শ্রীকৃষ্ণ ভক্তের মনবাঞ্ছা পূর্ণ করেন।
এদেশে এমন এক মন্দির আছে, যেখানে ভক্তের ডাকে সাড়া দিয়ে বাইরে
বেরিয়ে এসেছিলেন স্বয়ং শ্রীকৃষ্ণ। বৃন্দাবনে অবস্থিত এই মন্দিরটি বাঁকে বিহারী
মন্দির নামে পরিচিত। এই মন্দিরে প্রতি দু মিনিট অন্তর অন্তর গোপালের বিগ্রহের সামনে
পর্দা টেনে দেওয়া থাকে। ফলে কোন ভক্তই ২ মিনিটের বেশি একদৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকতে পারে
না। এর নেপথ্যে রয়েছে এক কাহিনী।
স্থানীয় বাসিন্দাদের মতে, আজ থেকে প্রায় ৪০০ বছর আগে এই মন্দিরে
এক বৃদ্ধা আসেন। অসহায় সেই বৃদ্ধা মহিলার তিনকুলে কেউ ছিল না।তাই নিজেকে সে বড় অসহায়
এবং সবসময়ই একাকীত্বে ভুগতো। নিজের দুঃখের কথা নিবেদন করতেই তিনি একদিন শ্রীকৃষ্ণের
কাছে এসেছিলেন। সেই
বৃ্দ্ধা ঘন্টার পর ঘন্টা বাঁকে বিহারীর চোখের দিকে তাকিয়েছিলেন। নিজের কষ্টের কথা কথা
বলতে বলতে বাঁকে বিহারীজির চোখের দিকে কিছু সময় তাকিয়ে থাকেন। এরপর বাঁকে বিহারীজিকে
তাঁর নিজের সন্তান বলে মনে করেন বৃদ্ধা। হঠাৎ ওই বৃ্দ্ধা উপলব্ধি করেন যে তাঁর সন্তান
বাঁকে বিহারীজি রয়েছে। স্বয়ং বাঁকে বিহারীই তাঁর সন্তান। তখনই তিনি ঠিক করেন, নিজের
সমস্ত সম্পত্তি বাঁকে বিহারীর নামে করে দেবেন। এরপরে তিনি বাঁকে বিহারীকে প্রণাম করে
বেরিয়ে আসার জন্য হাঁটতে থাকেন। কিন্তু মন্দির থেকে বেরোতেই তাঁর পেছন পেছন স্বয়ং বাঁকে
বিহারীও মন্দির ছেড়ে বেরিয়ে আসেন। মন্দিরের পুরোহিত এই আশ্চর্যজনক ঘটনা দেখে চমকে
যান। ওই মহিলা যত সামনে এগিয়ে যাচ্ছেন আর তাঁর পেছন পেছন ছোট ছেলের মতো অনুসরণ করছেন
স্বয়ং বাঁকে বিহারী।
বিষয়টা দেখে পুরোহিত উপলব্ধি করেন যে,মহিলার ভক্তি দেখে স্বয়ং বাঁকে বিহারীর হৃদয় কেঁদেছে। তাই তিনি বৃ্দ্ধার সঙ্গে ছেলের মতই থাকতে চান। তখন বাঁকে বিহারীর কাছে হাত জোড় করে তাঁর আরাধনা করতে থাকে মন্দিরের পুরোহিত। এরপরেই পুনরায় মন্দিরে ফেরেন বাঁকে বিহারী। সেই থেকেই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে এখানে বিগ্রহের সামনে প্রতি দু-মিনিট অন্তর পর্দা টেনে দেওয়া হবে। যাতে কোনও ভক্তের দিকে বেশিক্ষণ বাঁকে বিহারীজি তাকিয়ে থাকতে না পারেন। মন্দির থেকে বাঁকে বিহারীর চলে যাওয়ার ভয়েই এই সিদ্ধান্ত মন্দির কমিটির।