হিন্দুধর্ম অনুসারে মহাদেব ও পার্বতীর বিয়ের তিথি হল মহাশিবরাত্রি। আবার অন্য একটি বিশ্বাস অনুসারে এই দিনই তাণ্ডব নৃত্য করেছিলেন মহাদেব। এই দিনে মহাদেবের আরাধনা করার রীতি প্রচলিত আছে। এই বছর আগামী ৮ মার্চ পালিত হবে মহাশিবরাত্রি। এমনিতে বছরের ১২ মাসে ১২টি শিবরাত্রি পালিত হয়। এগুলিকে মাসিক শিবরাত্রি বলা হয়ে থাকে। আর ফাল্গুন মাসের শিবরাত্রি হল মহাশিবরাত্রি। সারা বছরে মহাদেবের আরাধনা করার জন্য এটিই সবচেয়ে উপযুক্ত দিন।
গোটা দেশজুড়েই মহাশিবরাত্রি পালন করা হয়ে থাকে। আমাদের রাজ্য ছাড়াও উত্তরাখণ্ড, রাজস্থান, উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, পঞ্জাব, হিমাচলপ্রদেশ, বিহার, কর্নাটক, তামিলনাডু, অন্ধ্রপ্রদেশ, তেলেঙ্গানা সর্বত্র ধূমধামের সঙ্গে উদযাপিত হয় মহাশিবরাত্রি। শিব মন্দিরগুলিতে এদিন থাকে ভক্তদের উপচে পড়া ভিড়।
মহাশিবরাত্রিতে কী করবেন?
আপনি যদি মহাশিবরাত্রির ব্রত পালন করেন, তাহলে একদিন আগেই উপবাসের সংকল্প নিন। মহাশিবরাত্রির আগের দিন সকালে স্নান সেরে শিব পুজোর সময়ই উপবাসের সংকল্প নিন। হাতে সামান্য চাল ও জল নিয়ে এই সংকল্প গ্রহণ করতে হয়।
মহাশিবরাত্রিতে ব্রাহ্মমুহূর্তেই বিছানা ছাড়ুন। সূর্যোদয়ের আগেই সেদিন ঘুম থেকে উঠে পড়তে হবে আপনাকে।
উপবাসের দিন ভোরবেলা স্নান সেরে পরিষ্কার পোশাক পরুন। এদিন সাদা রঙের কাপড় পরা সবচেয়ে শুভ।
মহাশিবরাত্রির দিন সারাদিনে যতবার সম্ভব 'ওম নমহঃ শিবায়' জপ করুন।
যেহেতু শিবরাত্রির পুজো রাত্রিবেলা করা হয়, তাই সন্ধেবেলা পুজোয় বসার আগে আর একবার স্নান করে নিন।
পরের দিন সকালে স্নান সেরে তবেই উপবাস ভঙ্গ করবেন।
মহাশিবরাত্রির উপবাস বেশ কঠিন। তাই যাঁদের কোনও অসুখ আছে বা শরীর খুব একটা ভালো নেই, তাঁরা মহাশিবরাত্রির ব্রত পালনের আগে অবশ্যই ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলে নিন।
শিবলিঙ্গে দুধ, ধুতরো ফুল, বেলপাতা, চন্দন লেপা, দই, মধু, ঘি ও চিনি নিবেদন করুন।
দৃকপঞ্জিকা অনুসারে পরের দিন সূর্যোদয়ের পরে এবং চতুর্দশী তিথি অবসানের মাঝামাঝি কোনও সময়ে উপবাস ভঙ্গ করতে পারেন।
মহাশিবরাত্রিতে কী করবেন না?
মহাশিবরাত্রিতে আপনি যদি উপবাস নাও রাখেন, তাহলেও চাল, গম বা ডাল জাতীয় কোনও খাবার এদিন খাবেন না।
কোনও আমিষ খাবার এদিন ভুলেও খাবেন না। পেঁয়াজ রসুন থেকেও এদিন দূরে থাকুন।
শিবলিঙ্গে নারকেলের জল নিবেদন করবেন না।