Festival and celebrations

10 months ago

Saraswati puja 2024: কুল না খাওয়া থেকে শুরু করে হলুদ ছোঁয়ানো! সরস্বতী পুজোতে কোন নিয়ম শাস্ত্রসম্মত?

Goddess Saraswati (File Picture)
Goddess Saraswati (File Picture)

 

দুরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্কঃ বাঙালির আবেগের ছোঁয়া যে পুজোগুলির সাথে মিশে রয়েছে তাঁর অন্যতম একটি হল সরস্বতী পুজো। বয়সের সাথে সাথে এই দিবস উজ্জাপনের পার্থক্য আসে, তবে আনন্দের মাত্রা কিন্তু একইরকম থাকে। তবে আনন্দের মাঝেও বহু বছর আগে থেকে বাঙালি পালন করে আসছে নানা নিয়ম। যেমন যেমন সরস্বতী পুজোর দিন হলুদ জামাকাপড় পরা, পুজোর দিন একবারের জন্যেও বই খাতা না-ছোঁয়া, কিংবা পুজো শেষ হওয়ার আগে কুল না-খাওয়া। 

সরস্বতী বিদ্যার দেবী। পড়ুয়াদের কাছে তিনি পরম আরাধ্যা। একইসঙ্গে যাঁরা সাংস্কৃতিক কাজের সঙ্গে যুক্ত তাঁরা সকলেই দেবীর কৃপাপ্রার্থী। মাঘ মাসের শুক্লা পঞ্চমী তিথি তাঁর পুজোর দিন। যদিও অনেকের কাছে এই দিনটি বসন্ত পঞ্চমী নামেও পরিচিত। স্বাভাবিক ভাবেই দেবীর পুজোয় ধরা পড়ে বসন্তের ছোঁয়া। যার মধ্যে প্রথমেই উঠে আসে পলাশ ফুলের কথা। বসন্তকালীন এই ফুল নাকি দেবীর বিশেষ প্রিয়। পাশাপাশি অনেক মূর্তিতেই দেবীর পরনে থাকে বাসন্তী রঙের শাড়ি। তাই অনেকেই সরস্বতী পুজোর দিন হলুদ জামাকাপড় পরেন। যদিও শাস্ত্রমতে দেবীর প্রিয় রং সাদা। দেবীর ধ্যান মন্ত্র অনুযায়ী তাঁর গাত্র বর্ণ থেকে আরম্ভ করে সবই শ্বেতশুভ্র। তবু বসন্তের উৎসব হিসেবে এর সঙ্গে বাসন্তী রঙের যোগ নেহাতই কম নয়।

এরপর আসা যাক কুল খাওয়ার প্রসঙ্গে। শাস্ত্রের দিক দিয়ে দেখতে গেলে এই পুজোয় বিশেষ করে কোনও কিছুই খাওয়ায় নিষেধ নেই। যেহেতু দেবীর পুজোয় অন্যতম প্রধান আরাধ্য হিসেবে শালগ্রাম শিলা রাখা হয় তাই দেবীর পুজোয় কেবলমাত্র নিষিদ্ধ হল আমিষ দ্রব্য। তবে কুল খাওয়ায় নিষেধাজ্ঞার নেপথ্যে বেশ কিছু কারণের হদিশ মেলে। বিজ্ঞানের দিক থেকে দেখলে, সরস্বতী পুজো যে সময়টায় হয় তা মোটেও কুল পাকার সময় নয়। তাই পাকার আগেই যাতে কেউ কুল না খেয়ে ফেলে সেই অছিলায় এমন নিয়ম তৈরি করা হয়েছে। পাশাপাশি কাঁচা কুল খেলে হজমের সমস্যাও দেখা দিতে পারে। তাই অনেকে এই সময় কুল খেতে নিষেধ করেন। তবে যে কোনও নিয়মের নেপথ্যেই একটি করে পৌরাণিক গল্প থাকে, এক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম হয় না। সরস্বতী পুজোর আগে কুল না খাওয়া নিয়েও রয়েছে সেরকমই এক কাহিনি। পুরাণ মতে, দেবী সরস্বতীকে তুষ্ট করার জন্য মহামুনি ব্যাসদেব কঠোর তপস্যা শুরু করেছিলেন। কিন্তু সেই তপস্যার আগে দেবী স্বয়ং ব্যাসদেবকে একটি শর্ত দেন। তাঁর আশ্রমে একটি কুলের বীজ রেখে দেবী বলেন, এই কুলবীজ থেকে যেদিন গাছ হবে, এবং সেই গাছের কুল পাকার পর যদি ব্যাসদেবের মাথায় পড়ে, সেদিনই তাঁর তপস্যা সম্পূর্ণ হবে। ব্যাসদেবও বিনা বাক্যব্যয়ে সেই শর্ত মেনে নিয়ে তপস্যা শুরু করেন। কয়েক দিন পর সেই কুল বীজ অঙ্কুরিত হয়ে চারা জন্মায়। ধীরে ধীরে সেই চারা বড় হতে থাকে। কয়েকবছর পর তা পূর্ণ মহীরূহে পরিণত হয়। একসময় সেই গাছে নতুন কুল হয় এবং একদিন তা পেকে ব্যাসদেবের মাথায় পড়ে। বলা হয়, সে দিনটিই নাকি ছিল শুক্লা পঞ্চমীর দিন। এই দিনেই ব্যাসদেব বুঝতে পারেন তাঁর তপস্যা সম্পূর্ণ হয়েছে। আসন ছেড়ে উঠে তিনি সেই কুল দেবীকে নিবেদন করে বেদপাঠ আরম্ভ করেন। এই ঘটনার কথা মাথায় রেখেই সরস্বতীকে অর্পণ না করে কুল খেতে নেই বলেই মনে করেন অনেকে।

You might also like!