দুরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্কঃ হিন্দু পুরাণ অনুসারে লক্ষ্মী হলেন ধনসম্পদ, ঐশ্বর্য, সৌভাগ্য এবং সৌন্দর্যের দেবী। আর লক্ষ্মী হলেন নারায়ণের স্ত্রী। যেখানে লক্ষ্মী আছেন সেখানে নারায়ণও থাকেন। সুন্দরের প্রতীক হলেন লক্ষ্মী। সুন্দর করে ঘর গুছিয়ে রাখা থেকে, আলপনা দেওয়া, সুন্দর রান্না করা, সুন্দর হাতের লেখা, কাজ… সব কিছুর মধ্যেই থাকে লক্ষ্মীর ছোঁয়া। ধান, কড়ি, সুপুরি, পান- এই সবই কিছুই হল লক্ষ্মীর প্রতীক।
পঞ্জিকা মতে শনিবার রাত ৩.৩০ মিনিট থেকে শুরু হয়েছে কোজাগরী পূর্ণিমা তিথি। থাকবে রবিবার রাত ২ টো ৩০ পর্যন্ত। যেহেতু কোজাগরী লক্ষ্মীপুজো তাই অধিকাংশ বাড়িতে রবিবার সন্ধেতেই পুজো হবে।
কোজাগরী লক্ষ্মী পুজোর প্রচলন নিয়ে একাধিক গল্প-কাহিনির প্রচলন রয়েছে। শাস্ত্রে মহালক্ষ্মীকে আদিশক্তি ভগবতী রূপেই পুজো করা হয়েছে। তাঁর কৃপায় ধন, সম্পদ, ঐশ্বর্যের অধিকারী হন মানুষ। মমতা, দয়ার সাগর বলা হয় মহালক্ষ্মীকে। আর তাই ভক্তিভরে তাঁর পুজো করতে পারলে একাধিক ফলও পাওয়া যায়।
লক্ষ্মীপুজোর মূল আকর্ষণ হল প্রসাদ। নাড়ু, মোয়া, মুড়কি, লুচি, সুজি, খিচুড়ি, লাবড়া, বেগুনভাজা- এই প্রতি প্রসাদের মধ্যে আলাদা একটা স্বাদ থাকে। যে স্বাদের কোনও ভাগ হয় না। সারা বছর প্রসাদী খিচুড়ি, পায়েস যতই খাওয়া হোক না কেন লক্ষ্মীপুজোর দিন তার স্বাদই থাকে অন্যরকম। ফলপ্রসাদ, লুচি, সুজি যাই থাক না কেন কোজাগরীর পুজোয় খিচুড়ি ভোগে দেওয়া হল রীতি। তবে কেন এই নিয়ম তা জানেন কি?
দশেরা অর্থাৎ দশমীর দিন রাবণকে বধ করে সীতাকে নিয়ে রাম অযোধ্যায় প্রবেশ করেন দীপাবলির দিন। সেদিন অযোধ্যা জুড়ে সীতার চরিত্র নিয়ে একাধিক প্রশ্ন উঠেছিল। শুরু হয়েছিল নানা গুঞ্জনও। লক্ষ্মীপুজোর দিন সীতা যখন তাঁর সখীদের কাছে রাবণের ছবি এংকে তার সম্বন্ধে কথা বলছিলেন তখন রামচন্দ্র সেই ঘরে প্রবেশ করেন। প্রজাদের মনের সন্দেহ দূর করতে তিনি এক পাকে তৈরি খিচুড়ি খাইয়ে সীতাকে মহর্ষি বাল্মীকির আশ্রমে পাঠিয়ে দেন। সেখান থেকেই লক্ষ্মীপুজোর ভোগে খিচুড়ি প্রসাদ আবশ্যিক করা হয়। একপাকে তৈরি খিচুড়ি আর পায়েস এদিন ভোগে থাকলে পরিবারের কল্যাণ হয়।কী ভাবে বানাবেন এই একপাকে খিচুড়ি ? জেনে নিন -
গোবিন্দভোগ চাল
সোনামুগের ডাল
ফুলকপি
মিষ্টিআলু
মটরশুঁটি
আদা বাটা
হলুদ-জিরে-লঙ্কাগুঁড়ো
গোটা শুকনো লঙ্কা
গরমমশলা গুঁড়ো
পাঁচফোড়ন
নুন-মিষ্টি ও ঘি
শুকনো খোলায় সোনা মুগডাল ভেজে নিন। চাল ভাল করে ধুয়ে জল ঝরিয়ে রাখুন। আলু, ফুলকপি এসব ডুমো ডুমো করে কেটে নুন হলুদ মাখিয়ে ভেজে নিন। হাঁড়িতে ঘি আর সাদা তেল দিয়ে পাঁচফোড়ন, তেজপাতা, শুকনো লঙ্কা আর আদা দিয়ে নেড়ে নিয়ে চাল ডাল দিয়ে কষিয়ে নিন। এরপর হলুদ, জিরে আর লঙ্কাগুঁড়ো দিয়ে কষতে থাকুন। পরিমাণ মতো গরম জল, সবজি দিয়ে হাঁড়ির মুখ চাপা দিন। ডাল, ডাল সিদ্ধ হয়ে নরম হলে নামানোর আগে ঘি. গরম মশলা, কাজু-কিশমিশ ছড়িয়ে দিন।