দুরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্কঃ- কাশফুল আর শিউলি ফুলের গন্ধে সেজে উঠছে গোটা মর্ত। বোঝাই যাচ্ছে যে, মা দুর্গা মর্তে আসা আর মাত্র এক সপ্তাহের অপেক্ষা। এই অবস্থায় বারোয়ারি থেকে বনেদি বাড়ি, সর্বত্রই চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। তেমনি আজও রঙ্গিন হয়ে আছে দক্ষিণ কলকাতার ভবানীপুরের দে বাড়ির পুজো। ভবানীপুরের হরিশ মুখার্জি রোডের দে বাড়ির পুজোতে ব্রিটিশরূপী অসুরকে দমন করেন মা দুর্গা! পরনে কোট-প্যান্ট। মুখের গড়ন ইংরেজদের মত। অসুরের মাথার চুলও সাহেবদের মতই ধবধবে সাদা।
১৮৭০ সালে এই পরিবারের পুজোর সূচনা করেছিলেন রামলাল দে। এই বছর ১৫৫ তম বর্ষে পদার্পণ করল এই বাড়ির পুজো। বংশপরম্পরায় প্রতিবছর রথযাত্রার দিন কাঠামো পুজোর মাধ্যমে দেবী দুর্গার আরাধনার সূচনা করা হয় এই বাড়িতে। একচালার সাবেকি প্রতিমা পূজিতা হন একই কাঠামোয়। এই বাড়ির পুজোর রীতি অনুযায়ী, চতুর্থীর দিন পরিবারের মহিলারা দেবীর জন্য নারকেল নাড়ু তৈরি করেন। সিঁদুর দিয়ে রাঙানো অস্ত্র দেবীর হাতে তুলে দেওয়া হয় বোধনের প্রাক্কালে। নিত্যভোগ রূপে ১৩ টি লুচি ও ১৩ রকমের মিষ্টি দেবীকে অর্পণ করা হয়। অষ্টমী তিথিতে কুমারী ও সধবা পুজোর সঙ্গে এই বাড়ির মহিলা সদস্যরা মাথায় ও দুই হাতে সরা নিয়ে ধুনো পোড়ান। অষ্টমী ও নবমী তিথির সন্ধিক্ষণে ৪৮ মিনিটের সন্ধি পুজোতে ফল ও ২১ কিলো চাল দিয়ে নির্মিত নৈবেদ্য দেবীকে উৎসর্গ করা হয়। তার সঙ্গে দেওয়া হয় ১০৮ প্রদীপ ও ১০৮ পদ্মের মালা। বিজয়া দশমীর দিন জল-আয়নায় দেবীর চরণ দর্শন, দেবীকে বরণ ও সিঁদুর খেলার মাধ্যমে বিদায় জানানো হয়। পরিবারের ঐতিহ্য ধরে রাখতে এখনও প্রতিমা বাঁশে বেঁধে, কাঁধে করেই হেঁটে গঙ্গায় নিরঞ্জন করা হয়।