দূরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্ক: শুক্রবার গভীর রাতে অভিনেত্রী রূপা গঙ্গোপাধ্যায়ের জীবনে নেমে এল এক অপূরণীয় শোক। প্রিয় মা যুথিকা গঙ্গোপাধ্যায়কে চিরতরে হারালেন তিনি। স্বাধীনতা দিবসের গভীর রাতে সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ছোট্ট অথচ হৃদয়বিদারক বার্তা দিলেন রূপা— “আজ মা চলে গেলেন বাবার সঙ্গে দেখা করতে…” জানা গিয়েছে, দীর্ঘদিন ধরেই ক্যানসারের সঙ্গে লড়ছিলেন রূপার মা যুথিকা গঙ্গোপাধ্যায়। তবে মারণরোগের সঙ্গে দীর্ঘ যুদ্ধের পর এদিন ইহলোকের মায়া কাটিয়ে পরলোকের উদ্দেশে রওনা হলেন যুথিকাদেবী।
শুক্রবার রাতেই অভিনেত্রীর মায়ের শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। দীর্ঘদিন অসুস্থতায় ভুগছিলেন যুথিকা দেবী। বেশ কয়েকবার হাসপাতালে ভর্তি করাতে হয়েছিল তাঁকে। শেষমেশ, আর লড়াই চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হল না। মায়ের প্রয়াণে ভেঙে পড়েছেন রূপা। গভীর শোক প্রকাশ করেছেন অভিনেত্রী। তাঁর সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে শোকবার্তায় ভরে উঠেছে কমেন্টবক্স—বন্ধু, শুভানুধ্যায়ী ও অনুরাগীরা সকলেই শোকজ্ঞাপন করেছেন।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, রূপা গঙ্গোপাধ্যায়ের জীবনের পরতে পরতে রয়েছে তাঁর মায়ের ছায়া। একাধিক সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়ে এসেছেন, কেমন করে সীমাহীন কষ্টের মধ্যে দিয়েও যুথিকা দেবী মেয়েকে বড় করেছেন। বাংলাদেশ থেকে এদেশে এসে একা হাতে রূপাকে গড়ে তুলেছিলেন তিনি। সেসময় রূপার বাবা থাকতেন বাংলাদেশে। অর্থনৈতিক অনটন ছিল নিত্যসঙ্গী। কমপক্ষে কুড়িবার বাড়ি বদলাতে হয়েছিল তাঁদের। যোধপুরের এক ছোট্ট ভাড়া বাড়িতে মা-মেয়ে থাকতেন, যেখানে একটিমাত্র চৌকি আর একটি সেলাই মেশিনই ছিল তাঁদের সম্বল। মাত্র ২০০ টাকা রোজগারে সংসার চালাতেন যুথিকা দেবী। বড়বাজার থেকে কাপড় কিনে আনতেন, আর সেগুলি দিয়ে বানাতেন সায়া, পর্দা, কুশন কভার, বালিশের কভার। পাশে থাকতেন ছোট্ট রূপা, যিনি সময় পেলে মায়ের কাজে সাহায্য করতেন। তাঁর মায়ের হাতের কাজ ছিল অসাধারণ এবং তাঁর মনের জোর, লড়াই করার মানসিকতা—সবই আজকের রূপা গঙ্গোপাধ্যায়ের ভিত গড়ে দিয়েছে, এমন কথাও বারংবার স্বীকার করেছেন রূপা গঙ্গোপাধ্যায়।