দুরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্কঃ বিহারের রাজনীতিতে ইন্দ্রপতন। প্রয়াত প্রাক্তন উপ মুখ্যমন্ত্রী সুশীল মোদী। দীর্ঘদিন ধরেই ক্যানসারে আক্রান্ত ছিলেন তিনি। নির্বাচনী লড়াই থেকে অব্যাহতি চেয়ে লোকসভা ভোটের মুখে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি লেখেন তিনি। সেই ভোটের মাঝেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ রাজনীতিবিদের। তাঁর মৃত্যুতে শোকের ছায়া ভারতের রাজনৈতিক মহলে। শোকস্তব্ধ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। শোকপ্রকাশ করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও।
দীর্ঘদিন রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত থাকলেও রাজনৈতিক নেতা হওয়ার কোনও ইচ্ছাই ছিল না সুশীল মোদীর। রাজনীতিতে অনিচ্ছুক সেই সুশীল মোদীই একাধিকবার সাংসদ হওয়ার পাশাপাশি ১১ বছর বিহারের উপ মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন। সেই সঙ্গে তিনি ছিলেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের সবথেকে বিশ্বস্ত বন্ধু। একাধিকবার নীতীশ কুমার দল এবং জোট পরিবর্তন করলেও সেটা তাঁদের বন্ধুত্বে কোনও প্রভাব ফেলেনি।
রাজনৈতিক জীবন
বহুদিন ধরেই ক্যান্সারে আক্রান্ত আক্রান্ত ছিলেন সুশীল কুমার। বিহারের এই BJP নেতার মৃত্যু হয়েছে সোমবার। তিন দশকেরও বেশি সময় সংসদীয় রাজনীতিতে কাজের অভিজ্ঞতা ছিল তার । সুশীল মোদী বিধায়ক, এমএলসি, লোকসভার সদস্য এবং রাজ্যসভার সাংসদসহ বিভিন্ন পদে ছিলেন। দুবার বিহারের উপ মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। প্রথম দফায় ২০০৫ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত এবং পরে ২০১৭ থেকে ২০২০ পর্যন্ত। তবে তাঁর রাজনৈতিক যাত্রা শুরু হয় পাটনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রাবস্থায় । তিনি ১৯৭৩ সালে ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক হয়েছিলেন। ১৯৯০ সালে পাটনা এলাকা থেকে বিধায়ক হিসেবে নির্বাচিত হয়ে তিনি রাজনীতিতে প্রথম প্রবেশ করেন । পরবর্তীকালে তিনি বিজেপি বিধায়ক দলের চিফ হুইপ হিসাবে নিযুক্ত। ১৯৯৬ থেকে ২০০৪ পর্যন্ত, তিনি রাজ্য বিধানসভায় বিরোধী দলের নেতা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৪ সালে তিনি ভাগলপুর থেকে লোকসভার সাংসদ হন। ২০২০ সালে রাজ্যসভায় নির্বাচিত হন এবং চলতি বছরের শুরুতে রাজনীতি থেকে অবসর নেন সুশীল মোদী।
অনিচ্ছুক রাজনীতিবিদ
যদিও সুশীল মোদী কয়েক দশক রাজনীতির ময়দানে কাটিয়েছেন কিন্তু, তিনি রাজনীতিতে যোগ দিতে অনিচ্ছুক ছিলেন।
পাটনা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক পরীক্ষার আগে, তিনি ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক থাকা সত্ত্বেও সমস্ত সামাজিক-রাজনৈতিক কাজ ছেড়েও দিয়েছিলেন। যদিও, তাঁর কয়েক বছর পরেই তিনি যোগ দেন জেপি নারায়ণের শুরু করা আন্দোলনে। যদিও অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদের সঙ্গে থাকতে এবং রাজনৈতিক কেরিয়ার থেকে দূরে থাকতে পছন্দ করেছিলেন তিনি। তবে রাজনীতিতে যোগ দিতে রাজি করাতে পেরেছিলেন অটল বিহারী বাজপেয়ীই। তাঁর বিয়েতে এসে সুশীল মোদীকে সক্রিয় রাজনীতিতে যোগদানের আহ্বান জানান বাজপেয়ী। সেই ডাক উপেক্ষা করতে পারেননি তিনি।