ধলাই (ত্রিপুরা), ১৬ জুলাই : আবারও অশান্ত করে তোলা হচ্ছে গন্ডাছড়ায়। আজ মঙ্গলবার ভোররাত প্রায় তিনটা নাগাদ গন্ডাছড়া বাজারে তিনটি দোকানে অগ্নিসংযোগ করে ভস্ম করে দিয়েছে দুষ্কৃতীরা। গন্ডাছড়ায় এক কলেজপড়ুয়া যুবক পরমেশ্বর রিয়াং-এর অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যুকে কেন্দ্র করে জটিল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। শুক্রবার রাতে নির্বিচারে হামলার পর লুটপাট করে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বাড়িঘর, দোকানপাট, ব্যক্তিগত যানবাহন, এমন-কি গবাদি পশু। সর্বস্ব হারিয়েছে কম করেও ৪০টি বাঙালি পরিবার। প্রায় ৩০০ মানুষ এখনও ত্রাণ শিবিরে আশ্রিত।
সোমবার মহকুমায় আসেন মন্ত্রী টিংকু রায়, প্রাক্তন সাংসদ রেবতী ত্রিপুরা, রামপদ জমাতিয়া এবং বিজেপি নেতা সুবল ভৌমিক। ক্ষতিপূরণের কাজকর্ম প্রশাসনিক স্তরে কতটুকু চলছে সে সব বিষয়ের খোঁজখবর নিতে এসেছিলেন তাঁরা। মানুষজন তাঁদের পেয়ে নিজেদের ক্ষোভ উগরে দেন। তাঁরা আহ্বান রেখে গিয়েছেন শান্তি বজায় রেখে সম্প্রীতির ঐতিহ্য আবার কায়েম করার। কিন্তু সেই আহ্বান কোনও কাজে আসেনি। আজ মঙ্গলবার ভোর আনুমানিক তিনটা নাগাদ গন্ডাছড়া বাজারে তিন বাঙালি ব্যবসায়ীর তিনটি দোকানে আগুন ধরিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। দমকলের দুটি ইঞ্জিন আগুন নেভাতে এলেও ততক্ষণে পুড়ে ছাই হয়ে যায় তিনটি দোকান। যাদের দোকান পুড়েছে তাঁরা তাপস দেবনাথের মুদি দোকান, রতন দাসের শুকনো মাছের দোকান এবং স্বপন দাসের শুকনো মাছের দোকান। ব্যবসায়ীরা মুষড়ে পড়েছেন বিশাল ক্ষতিতে।
সবকিছু হারিয়ে ক্ষোভ ও যন্ত্রণায় ক্লিষ্ট হয়েছেন তাঁরা। স্বাভাবিক হয়নি পরিস্থিতি। তার ওপর আবার অগ্নিসংযোগ, আবার নাশকতা! এক পর্যায়ে ক্ষুব্ধ ব্যবসায়ী এবং স্থানীয় যুবকদের সঙ্গে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয় জেলা পুলিশ সুপার ও আইজি পদমর্যাদার এক আধিকারিকের। ওই দুই পুলিশ আধিকারিককে রীতিমতো অপমান ও নাজেহাল করেন বিধ্বস্ত মানুষজন। সে সময় ক্ষুব্ধ মানুষজনকে ছত্রভঙ্গ করতে মৃদু লাঠিচার্জ করেছে পুলিশ। এর পর ১৬৩ ধারা জারি করে প্রশাসন। আপাতত সামাল দেওয়া হয়েছে পরিস্থিতি। সব আহ্বান, সব আশ্বাস বার বার ব্যর্থ হচ্ছে গন্ডাছড়ায়। মহকুমা স্বাভাবিক জীবনে ফিরবে কবে, বা আদৌ ফিরবে কি না সেটাই এখন বড় প্রশ্ন ।