আগরতলা : আগরতলায় সচিবালয়ের ত্রিপুরা স্টেট এমপ্লয়মেন্ট গ্যারান্টি কাউন্সিলের পর্যালোচনা সভায় মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডাঃ) মানিক সাহা রেগা সহ গ্রামোন্নয়ন দফতরের অন্যান্য প্রকল্পের অগ্রগতি ও ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা পর্যালোচনা করেন। সভায় মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যের বিভিন্ন গ্রাম পঞ্চায়েত ও ভিলেজে এমজিএন রেগায় স্থায়ী সম্পদ সৃষ্টির পাশাপাশি স্থানীয় জনপ্রিয় পণ্য উৎপাদনের উপরও গুরুত্ব দিতে হবে। রাজ্যের জেলাগুলিতে যেসমস্ত পণ্য জনপ্রিয় ও উৎপাদন বেশি হয় সে সমস্ত পণ্য চাষে সংশ্লিষ্ট জেলাগুলিতে গুরুত্ব দিতে হবে। তাতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির 'ওয়ান ডিস্ট্রিক্ট ওয়ান প্রোডাক্ট' কর্মসূচিও কার্যকর করা সম্ভব হবে।
সভায় মুখ্যমন্ত্রী বলেন, সংশ্লিষ্ট দফতরগুলিকে সুবিধাভোগী নির্বাচনের ক্ষেত্রে শুধুমাত্র রেগার উপর নির্ভর না করে দফতরের নিজস্ব বাজেট থেকেও বিভিন্ন প্রকল্পের সুবিধাভোগী নির্বাচন করার জন্য উদ্যোগ নিতে হবে। কোনও প্রকল্পের সুবিধা প্রদানের ক্ষেত্রে সুবিধাভোগীদেরও কিছু অবদান রাখার জন্য উৎসাহিত করতে হবে। রেগায় স্থায়ী সম্পদ তৈরী করার ক্ষেত্রে সঠিক সুবিধাভোগী নির্বাচনে প্রাধান্য দিতে হবে যাতে তা সঠিকভাবে রূপায়ণ সম্ভব হয় এবং স্থায়ী হয়। পাশাপাশি রেগা সহ বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ সময়ের মধ্যে দ্রুত রূপায়ণের লক্ষ্যে মনিটরিং ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করতে হবে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, পঞ্চায়েত স্তর থেকে শুরু করে এডিসি এলাকায় কোনও প্রকল্পের সুবিধাভোগী নির্বাচনে সুনির্দিষ্ট গাইডলাইন অনুসরণ করতে হবে। পাশাপাশি সুবিধাভোগী নির্বাচনের কাজটি সময়ের মধ্যেই শেষ করার উপর বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে।
সভায় গ্রামোন্নয়ন দফতরের সচিব ডঃ সন্দীপ আর রাঠোর জানান, রাজ্যের ৮টি জেলায় রেগায় মোট ৬ লক্ষ ৭৭ হাজার জবকার্ড হোল্ডার রয়েছেন। গত ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে রেগায় ৩ কোটি ২৫ লক্ষ শ্রমদিবসের অনুমোদন পাওয়া গিয়েছিল। কিন্তু ঐ অর্থবর্ষে রাজ্যে ৩ কোটি ৩৪ লক্ষ ৫৫ হাজার শ্রমদিবসের সৃষ্টি হয়েছে। যা সাফল্যের নিরিখে ১০২.৯৫ শতাংশ। ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে রেগায় রাজ্য মোট ১৯৭.০৮ কোটি টাকার ফান্ড পেয়েছিল। যা গত ৫ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। চলতি অর্থবর্ষে এখন পর্যন্ত ৪১৪৭৮ কোটি টাকা পাওয়া গেছে। এরমধ্যে ৩৬০.৪৭ কোটি টাকা ইতিমধ্যেই বায় করা হয়েছে। এছাড়াও চলতি অর্থবর্ষের ৩১ জুলাই পর্যন্ত অনুমোদিত ২ কোটি ৫০ লক্ষ শ্রমদিবসের মধ্যে ১ কোটি ৪৪ লক্ষ ৭৪ হাজার শ্রমদিবস সৃষ্টি করা হয়েছে। সচিব জানান, ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষে রেগা প্রকল্পে মোট ৩ লক্ষ ৫৭ হাজার ৩৪৮টি কাজ হাতে নেওয়া হয়েছে। এই কাজগুলোর মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন ধরণের প্ল্যান্টেশন, ব্যক্তিগত সম্পদ তৈরী, গ্রামীণ পরিকাঠামোর উন্নয়ন, জমি উন্নতিকরণ ইত্যাদি।
এ প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, চলতি অর্থবর্ষে রেগার মাধ্যমে যে সমস্ত কাজ রূপায়ণ করা হবে তা জেলাশাসকদের নিয়মিত তদারকি করতে হবে। প্ল্যান্টেশনের ক্ষেত্রে রাবার চাষীরা যাতে সঠিক সময়ের মধ্যে রাবার চারা পেতে পারেন সে বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখতে হবে। এক্ষেত্রে প্রয়োজনে রাবার বোর্ডের সঙ্গে সভা করারও নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী।
ত্রিপুরা স্টেট এমপ্লয়মেন্ট গ্যারান্টি কাউন্সিলের সভায় মুখ্যমন্ত্রী ছাড়াও সমবায় মন্ত্রী শুক্লাচরণ নোয়াতিয়া, বিধায়ক প্রমোদ রিয়াং, বিধায়ক রঞ্জিত দাস, বিধায়ক কিশোর বর্মণ, বিধায়ক অন্তরা সরকার দেব, মুখ্য সচিব জে কে সিনহা, মৎস্য দফতরের প্রধান সচিব বি এস মিশ্রা, শিল্প ও বাণিজ্য দফতরের প্রধান সচিব কে এস শেঠি, শ্রম দফতরের সচিব অভিষেক সিং, সমাজকল্যাণ ও সমাজশিক্ষা দফতরের সচিব তাপস রায়, জনজাতি কল্যাণ দফতরের সচিব এল টি ডার্লং, মুখ্যমন্ত্রীর সচিব প্রদীপ কুমার চক্রবর্তী সহ ৮টি জেলার জেলা শাসকরা উপস্থিত ছিলেন।