দুরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্কঃ দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর অবশেষে মাদ্রাস সার্ভিস কমিশনের পক্ষ থেকে অনুষ্ঠিত হতে চলেছে নিয়োগ সংক্রান্ত পরীক্ষা। ৩ মার্চ হবে এই পরীক্ষা। তবে এই নিয়েও বেশ কিছু পরীক্ষার্থী অসুবিধার সম্মুখীন হয়েছেন। মোট ১২৫৪৪ জন চাকরিপরীক্ষার্থীরা ওয়েবসাইট থেকে তাদের অ্যাডমিট কার্ড ডাউনলোড করতে পারেননি। যার ফলে বেজায় চোটে গিয়েছে চাকরি পরীক্ষার্থীরা। এদিকে, সাড়ে ১২ হাজার চাকরি প্রার্থীর আবেদন খারিজ করেছে বোর্ড। বোর্ড বলছে, যে কারণে এই আবেদন খারিজ হয়েছে, তার মধ্যে অন্যতম, বেশিরভাগ চাকরিপ্রার্থী তাদের স্নাতকের প্রাপ্ত নম্বর উল্লেখ করেননি। এছাড়াও রয়েছে বহু কারণ। বোর্ডের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে সাড়ে ১২ হাজার চাকরি প্রার্থী দ্বারস্থ হন হাইকোর্টের। সেখানেও ধাক্কা খান তাঁরা। সিঙ্গল বেঞ্চের পর ডিভিশন বেঞ্চেও তাঁরা এই মামলায় ব্যাকফুটে চলে গিয়েছেন।
এদিকে, মাদ্রাসা বোর্ডের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে নিয়োগ পরীক্ষায় বসার সুযোগ চেয়ে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী ও বিচারপতি রাজা বসুর স্পেশাল ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হন চাকরি প্রার্থীরা। তবে শনিবার সেই মামলায় দুই পক্ষের বক্তব্য শুনে চাকরি প্রার্থী ১২ হাজার জনের আবেদন খারিজ করেছে কোর্ট। বোর্ড বলছে, স্নাতক স্তরে পাস এবং অনার্সে প্রাপ্ত মোট নম্বরের ৫০ শতাংশ চাওয়া হয়েছে, ফল্ যাঁরা পাসের নম্বর দেননি শুধু অনার্সের নম্বর দিয়েছেন, তাঁদের আবেদন বাতিল করা হয়েছে। পাল্টা বিপক্ষের আইনজীবী বলেন, বোর্ডের বিজ্ঞপ্তিতে কোথাও বলা হয়নি যে, যাঁদের অনার্স রয়েছে তাঁদের পাসের নম্বর উল্লেখ করতে হবে। তবে যাবতীয় বক্তব্য শুনে মামলা খারিজ করা হয়।
যদিও এই বিষয়ে ইতিমধ্যেই ২৭৩ পাতা বিশিষ্ট একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশনের পক্ষ থেকে। যেখানে সুস্পষ্টভাবে বাতিল হওয়া চাকরিপরীক্ষার্থীদের নাম, আইডি উল্লেখ করা হয়েছে। এমনকি ঠিক কী কারনে তাদের আবেদন বাতিল করা হয়েছে, তার কারণও উল্লেখ করা হয়েছে ওই বিজ্ঞপ্তিতে। চাকরি পরীক্ষার্থীদের আবেদন খারিজ করার ক্ষেত্রে উল্লেখ করা হয়েছে নানান কারণ। আবেদন খারিজ হওয়ার কারণগুলি যথাক্রমে- বেশিরভাগ চাকরিপ্রার্থী তাদের স্নাতকের প্রাপ্ত নম্বর উল্লেখ করেননি। এমনকি বেশ কিছু প্রার্থীদের নম্বর ৫০ শতাংশের কম, এমনকি সম্পূর্ণ হওয়া বিএড- এর তারিখ ও অবৈধ। এমনটাই জানা গিয়েছে ওই বিজ্ঞপ্তি থেকে।
এই বিষয়ে মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশনের এক আধিকারিক সংবাদমাধ্যমকে জানান, ঠিক কী কী কারণে প্রার্থীদের আবেদন বাতিল করা হতে পারে তা গেল বছরের নতুন বিধিতেই উল্লেখ করা হয়েছিল।
একেই দীর্ঘদিন ধরে নিয়োগ না পাওয়ায় রাজ্যের সরকারি মাদ্রাসাগুলিতে শিক্ষকের সংকট দেখা দিয়েছে। আর তার মধ্যেই ১২৫৪৪ জনের আবেদন খারিজ হওয়ায় বেশ ক্ষুব্ধ প্রার্থীরা। এক্ষেত্রে চাকরি প্রার্থীদের দাবি, তাদের অ্যাডমিট কার্ড বাতিল না করে ভুল সংশোধন করার সুযোগ দেওয়া হোক মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশনের পক্ষ থেকে।
পশ্চিমবঙ্গ মাদ্রাসা ছাত্র ইউনিয়নের অভিযোগ, এক দশক পরে শূন্যপদের তুলনায় আড়াই গুণ কম, ১,৭২৯টি পদে নিয়োগে মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশনের (এমএসসি) বিজ্ঞপ্তি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল আগেই। ৩ মার্চ মাদ্রাসার নবম-দশম ও একাদশ-দ্বাদশে শিক্ষক নিয়োগে একলপ্তে ১২,৫৪৪ জন চাকরিপ্রার্থীর আবেদন বাতিল হলো। এতে প্রবল ক্ষুব্ধ চাকরিপ্রার্থীরা। ২৮ জানুয়ারি মাদ্রাসার প্রাথমিক ও উচ্চ প্রাথমিকের টেটে ৭৫৭ জন পরীক্ষার্থীর অ্যাডমিট কার্ড বাতিল হয়। এ বার সেই সংখ্যা একলাফে কয়েকগুণ বেড়ে ১২,৫৪৪ হয়েছে। মনিরুল জানান, এই আশঙ্কার জন্যই আমরা আগাম স্মারকলিপি দিয়েছিলেন। তাঁদের দাবি, ডামি অ্যাডমিট কার্ড প্রকাশ করুক কমিশন। পাশাপাশি কোনও ত্রুটি থাকলে, যেন তা সংশোধনের সুযোগ দেওয়া হয়।