কলকাতা, ২ জানুয়ারি : ১৮৭ বছর আগের কথা। ১৮৩৬ সালের ১০ জানুয়ারি। কলকাতাকে সচকিত করে একের পর এক মোট ২১ বার তোপ দাগা হল ফোর্ট উইলিয়ান থেকে। ব্রিটিশ দুর্গ থেকে কীসের কারণে গোরা সেনাদের এহেন তোপ লাগা, তা জানতে ব্যস্ত সবাই। তুমুল ব্যস্ততা কলেজ স্ট্রিট চত্বরে। দেখা গেল, নেটিভদের একমাত্র হাসপাতাল মেডিক্যাল কলেজ ঘিরে ফেলেছে গোরা পল্টন। মাছি গলতে না পারে এমনই বজ্র আটুনি। সেখানে তখন চলছিল নতুন এক ইতিহাস রচনাপর্ব।
ওই ইতিহাসের নায়ক এক বঙ্গসন্তান, পণ্ডিত মধুসূদন গুপ্ত। মেডিক্যাল স্কুলের তৎকালীন ডাকসাইটে শল্য চিকিৎসকদের সামনে তিনি ছুরি-কাঁচি হাতে শুরু করেছেন। প্রথম কমিটি গঠন করা হয়েছে। ভারতীয় তো বটেই, প্রথম এশীয় হিসাবেও সেই ১০ জানুয়ারি প্রথম শব ব্যবচ্ছেদ করলেন মধুসূদনবাবু।
মেডিক্যাল কলেজ থেকে হুগলির বৈদ্যবাটির বাড়িতে ফেরার পথে রোজ ইট-পাটকেল খেতে হয়েছে। টিটকিরি, হমকি শুনেছেন। প্রাণনাশের হুমকি শুনতে হয়েছে। এমনকী অপদস্থ করতে তাঁর নামে গান বেঁধে ঢাকঢোল পিটিয়ে গাওয়া হত পাড়ায় পাড়ায়। এতে অবশ্য দমেননি অসম সাহসী মানুষটি।
থেকেই এশিয়া মহাদেশের চিকিৎসাশাস্ত্রের গর্বের সেই ইতিহাসকে স্মরণ করে প্রতিবছর ১০ জানুয়ারি পশ্চিমবঙ্গে সাড়ম্বরে পালিত হয় 'মেডিক্যাল এডুকেশন ডে' হিসাবে।
ইন্ডিয়ান অ্যানাটোমিক্যাল সোসাইটির উদ্যোগে রাজ্যের সর্বত্র। এবারও ধুমধাম করে দিনটি পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে এনআরএস মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল। এখানকার অ্যানাটমি হলের সামনে অনুষ্ঠান হবে। প্রায় সাড়ে আটশো চিকিৎসক পদযাত্রায় অংশ নেবেন।