
দূরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্ক: মঙ্গলবার দুপুরে জেলমুক্তি পেলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়, মুক্তির নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল সোমবার। দুপুর ২:২০ নাগাদ বাইপাসের ধারের হাসপাতাল থেকে হুইলচেয়ারে চেপে তিনি বাইরে বের হন। হাসপাতাল চত্বরে আগে থেকে ভিড় জমিয়েছিলেন তাঁর অনুগামীরা। তিনি বাইরে বেরোতে ‘পার্থদা জিন্দাবাদ’ স্লোগান শোনা গেল অনুগামীমহল থেকে। এই দৃশ্য দেখে রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী আবেগতাড়িত হয়ে কেঁদে ফেলেন।
নীলের উপর সাদা ফুলছাপ পাঞ্জাবি পরে বাইরে বেরোন পার্থ। তাঁর মুখে ছিল নীলরঙা মাস্ক। আগে থেকেই প্রস্তুত ছিল গাড়ি। চালকের পাশের আসনে বসে নাকতলার বাড়ির উদ্দেশে রওনা দেন পার্থ। গাড়ির সঙ্গেই ছুটতে থাকেন পার্থ-অনুগামীরা। ভিতরে বসে হাত জোড় করে নমস্কার জানাতে দেখাতে যায় তাঁকে। ভিড় কাটিয়ে নাকতলার বাড়ির উদ্দেশে রওনা দেয় পার্থের গাড়ি। পার্থকে বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে যেতে সকাল থেকেই তাঁর বহু অনুগামী বাইক নিয়ে হাসপাতালে গিয়েছিলেন। পার্থের গাড়ির পিছনে বাইক নিয়ে নাকতলা যান তাঁরা। বরণ করে পার্থকে বাড়িতে নিয়ে যান তাঁর আত্মীয়রা। বরণ করেন পার্থের ভাইয়ের স্ত্রী। উপস্থিত ছিলেন পার্থের ভাই এবং তাঁর কন্যা। পার্থ বাড়িতে ঢোকার পর সদর দরজা বন্ধ করে দেওয়া হয়। দীর্ঘ দিন পর বাড়ি ফিরে নিকটাত্মীয়দের দেখে আবেগতাড়িত হয়ে কেঁদে ফেলেন পার্থ। তাঁকে সান্ত্বনা দেন ভাইয়ের মেয়ে। পার্থের বাড়ির সামনেও ‘পার্থদা জিন্দাবাদ’ বলে স্লোগান দেন অনুগামীরা।
পার্থের আইনজীবী বিপ্লব গোস্বামী জানিয়েছেন, পরবর্তী সময়েও প্রয়োজনীয় আইনগত পদক্ষেপ করবেন তাঁর মক্কেল। আপাতত চিকিৎসকেরা তাঁকে কয়েক দিন বিশ্রামে থাকার পরামর্শ দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন তিনি। পার্থ ফেরার পরেই নাকতলার বাড়িতে যান বেহালা পশ্চিম বিধানসভা কেন্দ্রের তাঁর কয়েক জন অনুগামী। ভিড়ের চাপ এড়াতে আপাতত কাউকে বাড়ির ভিতরে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না।
তিন বছর তিন মাস ১৯ দিন পর নিজের বাড়িতে ফিরলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। নিয়োগ মামলায় ২০২২ সালের ২৩ জুলাই কলকাতার নাকতলার বাড়ি থেকে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। কয়েক মাস আগে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছিল, সিবিআইয়ের মামলায় বিচারপর্ব শুরু হলে পার্থ, এসএসসির তৎকালীন চেয়ারম্যান সুবীরেশ ভট্টাচার্য ও উপদেষ্টা শান্তিপ্রসাদ সিংহকে শর্তসাপেক্ষে জামিন দেওয়া যাবে। শীর্ষ আদালত ১৪ নভেম্বরের মধ্যে প্রথম পর্যায়ের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ করে চূড়ান্ত জামিন মঞ্জুর করার নির্দেশ দেন। সেই মতো সোমবার ওই মামলায় অষ্টম সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হওয়ার পর আলিপুরের বিশেষ সিবিআই আদালত পার্থকে জেলমুক্তির নির্দেশ দেন। আদালতের সংক্রান্ত নথি পৌঁছায় প্রেসিডেন্সি জেল কর্তৃপক্ষের কাছে, সেখান থেকে তা পাঠানো হয় হাসপাতালে।
