ব্রেন টিউমার হল একপ্রকার অবস্থা যেখানে
একটি বস্তু অস্বাভাবিক রূপে ব্রেনের মধ্যে ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে। শরীরের অন্যান্য অঙ্গের
তুলনায় ব্রেন টিউমার বেশি দেখা যায় না। প্রতি এক লক্ষ মানুষের মধ্যে ৩ জনের ব্রেন টিউমার
দেখা দিতে পারে। ৫০ শতাংশ ক্ষেত্রে টিউমার থেকে ক্যানসারের সম্ভাবনা প্রায় দেখা যায়
না। যদি তাড়াতাড়ি এই রোগ ধরা পড়ে এবং চিকিৎসা পদ্ধতি শুরু করা যায় তাহলে ব্রেন টিউমার
সম্পূর্ণ নির্মূল হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। পিটুইটারি টিউমারের জন্য শরীরের হরমোনাল পরিবর্তনের
সঙ্গে সঙ্গে চোখেরও দৃষ্টি কম হতে পারে। ব্রেন টিউমার সাধারণত দু রকম। ম্যালিগন্যান্ট
(ক্যানসারাস) এবং বিনাইন (নন ক্যানসারাস)।
ব্রেন টিউমারের প্রধান উপসর্গ মাথা যন্ত্রণা।
অবশ্য সব ক্ষেত্রে মাথা যন্ত্রণা মানেই টিউমার নয়। কিন্তু এই সমস্যাটি ব্রেন টিউমারের
নির্দেশ করে তাই এ বিষয়ে যথাসম্ভব সচেতনতা প্রয়োজন। প্রাথমিক পর্যায়ে ব্রেন টিউমার
ধরা পড়লে তাহলে চিকিৎসার সাফল্য অনেক বেশি হয়। অপারেশন ও চিকিৎসার পর জীবনযাত্রার গুণগতমান
অনেক উন্নত হয়। অতিরিক্ত মাথা যন্ত্রণা হলে সমস্তরকম প্রয়োজনীয় পরীক্ষার পর বোঝা যায়
ব্রেন টিউমার থেকে ক্যানসারের সম্ভাবনা আছে কি নেই।
এছাড়াও ---
- খিঁচুনি
- একদিকে অবশ হয়ে যাওয়া
- হাঁটাচলায় ব্যালান্সের অসুবিধা
- ব্যক্তিত্বের পরিবর্তন
- দৃষ্টিশক্তি ক্ষীণ হয়ে যাওয়া
- স্মৃতিশক্তি লোপ পাওয়া
- কথায় আড়ষ্ঠতা লক্ষ্য করা যায়।
মাথা যন্ত্রণা বা অন্য উপসর্গ গুলি ছাড়াও
যদি উল্লেখিত কোনও লক্ষণ দেখা যায় তাহলে সিটি স্ক্যান করে নিশ্চিত হতে হয়। এছাড়াও স্পেশাল
এম.আর.আই. স্ক্যান উইথ স্পেকট্রোস্কোপি করারও প্রয়োজন হতে পারে। শরীরের অন্য অঙ্গের
ক্যানসার থেকে ব্রেনে যদি ক্যানসার ছড়িয়ে যায় তখন তার শনাক্তকরণের জন্য PET
FDG Scan করা হয়ে থাকে। অভিজ্ঞ ও দক্ষ সার্জন দ্বারা
উন্নত পরিষেবার সাহায্যে চিকিৎসা করা হয়। টিউমারটি বিনাইন না ম্যালিগন্যান্ট তাও নির্ধারিত হওয়ার পর চিকিৎসা শুরু হয়।
ব্রেন টিউমারের প্রথম ও প্রধান চিকিৎসা সার্জারি।
ম্যালিগন্যান্ট টিউমারের ক্ষেত্রে রেডিও থেরাপি দিতে হলেও বিনাইন টিউমারের ক্ষেত্রে
সাধারণত তার প্রয়োজন হয় না।
ব্রেন টিউমার সার্জারির মধ্যে অন্যতম পিটুইটারি
সার্জারি যা Transsphenoidal
Endoscopic surgery নামেও পরিচিত। এন্ডোস্কোপিক পিটুইটারি সার্জারি যে যন্ত্রের সাহায্যে করা
হয় তাকে এন্ডোস্কোপ বলে। সাধারণত যন্ত্রটি নাকের মধ্যে দিয়ে প্রবেশ করানো হয়। এর সাহায্যে
হরমোন সিক্রেটিং টিউমার, নন-হরমোন সিক্রেটিং
টিউমার ও ক্যানসারাস টিউমার নির্মূল করা হয়।
যে যে ব্রেন বা স্পাইনাল টিউমারে ক্যানসার
ধরা পড়ে সেখানে সার্জারির পর যে চিকিৎসার প্রয়োজন হয় তা অ্যাডভান্সড রেডিওথেরাপি ও
কেমোথেরাপির সঙ্গে কম্প্রিহেনসিভ ক্যানসার কেয়ার রূপে উপলব্ধ।
শিশুদের মধ্যে ব্রেন টিউমার
ব্রেন টিউমার শিশুদের মধ্যেও বেশ কিছু কিছু ক্ষেত্রে
পরিলক্ষিত হয়। যে কোনও বিয়সের শিশুরাই এই সমস্যায় আক্রান্ত হতে পারে। শিশুদের
মধ্যে ব্রেন টিউমারের উপসর্গগুলি হল ---
- মাথা যন্ত্রণা (বিশেষত সকালবেলা)
- বমি (সকালের দিকেই বেশি)
- মৃগী বা খিঁচুনি
- দৃষ্টিশক্তির সমস্যা
- ঘুম ঘুম বা আচ্ছন্নভাব
- হাঁটাচলায় ব্যালান্সের অসুবিধা
প্রাথমিক অবস্থায় শিশুদের ব্রেন টিউমারের ক্ষেত্রে স্টেরয়েড বা মৃগীকে নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য ওষুধের ব্যবহার করা হয়। এছাড়া সার্জারিও করা হয়ে থাকে। প্রয়োজন বিশেষে রেডিওথেরাপি ও কেমোথেরাপিও দেওয়া হয়।
অভিজ্ঞ ও দক্ষ সার্জন দ্বারা উন্নতমানের
চিকিৎসাও পরিষেবা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে। এছাড়াও আধুনিক যন্ত্রপাতির ব্যবহারে সম্পূর্ণ
যথাযথভাবে অপারেশন সম্ভব হয়। এখন কলকাতাতেই ব্রেন টিউমারের অত্যাধুনিক চিকিৎসা কম্প্রিহেনসিভ
ক্যানসার কেয়ার রূপে উপলব্ধ।
- নিউরো সার্জিারির মূল কথা হল প্রথমেই রোগ
নির্ণয়, এতে ব্রেন টিউমারের চিকিৎসার ফল ভাল হয় এবং রোগী সম্পূর্ণ স্বাভাবিক জীবনযাপন
করতে পারেন।
- সব ব্রেন টিউমারই ক্যানসারাস হয় না।
- অত্যাধুনিক টেকনোলজি, নিরাপদ পরিষেবা এবং
ন্যায্য মূল্যের ফলে নিউরোসার্জারি দীর্ঘস্থায়ী ও ভালো ফল পাওয়া সম্ভব হচ্ছে।
- উন্নতমানের নিউরোসার্জারি ডিপার্টমেন্টে
শিশু ও প্রাপ্তবয়স্ক উভয়ের ক্ষেত্রেই ব্রেন টিউমারের চিকিৎসা সম্ভব হচ্ছে।
পূর্ব ভারতে উন্নতমানের রেডিও থেরাপি, কেমোথেরাপি,
নিউরোসার্জারি, নিউরো রিহ্যাব কম্প্রিহেনসিভ কেয়ার রূপে একই প্রতিষ্ঠানে উপলব্ধ।