দুরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্কঃ আর্থিক অনটন কেড়ে নিয়েছে পড়াশুনো। তুলির প্রতিভায় ফেমাস। তমলুক হোক কিংবা শিলিগুড়ি! রাজ্যের একাধিক দুর্গ প্রতিমার মন্ডপ গড়ে তুলছেন ছাত্র পঞ্চানন।সালটা ২০২০। সবে মাত্র উচ্চমাধ্যমিক উত্তীর্ণ। তারপর করোনা আর লকডাউন আর্থিক সংকটের জাঁতাকলে ছাড়তে হয় পড়াশোনা। দু চোখে স্বপ্ন ছিলো পড়াশোনার সঙ্গে সঙ্গে অঙ্কন শিল্পী হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করা। করোনার ফলে দীর্ঘ লকডাউনে সংসার চালাতে হিমসিম খাচ্ছিলো পরিবার।
পরিবারের পাশে দাঁড়াতে পড়াশোনা আর করা হয়নি। তবে অঙ্কনকেই পেশা হিসাবে নিয়ে কাজ শুরু করে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার নন্দকুমারের কোলসর এলাকার যুবক পঞ্চানন ভূঁইয়া। তাঁর তুলির টানে ফুটে উঠেছে ছোট থেকে বড় বিভিন্ন ধরনের দেব-দেবী (Durga Puja 2023), মনীষী, বিখ্যাত মানুষ ও প্রকৃতির জীবন কাহিনী।
কখনও চালের উপর, আবার কখনও বালির ছোট নুড়ি, ফেলে দেওয়া বোতলের ছিপি, নারকেলের মালা, সহ অন্যান্য জিনিসপত্র দিয়ে নানান ধরনের দূর্গা প্রতিমা ছবি ফুটিয়ে তুলেছেন পঞ্জানন। সারা বছর ধরে নিত্যনতুন কিছু করার চেষ্টা করে সে। তবে দুর্গাপূজার সময় ব্যস্ত হয়ে ওঠে মন্ডপ সজ্জার কাজে।
এই বছর তাঁর তৈরি মন্ডপ সজ্জা (Durga Puja 2023) তমলুকের এর পাশাপাশি রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় দেখা যাবে। রাতদিন এক করে তারই কাজ করে চলিয়ে যাচ্ছেন পঞ্জানন। পঞ্চানন জানায়, রাষ্ট্রপতি পুরস্কার প্রাপ্ত হস্তশিল্পী গৌরাঙ্গ কুইল্যার থেকে এই অনুপ্রেরণা পেয়েছে সে। ফেলে দেওয়া জিনিসপত্র দিয়ে তুলির টানে নানান জিনিস বানিয়ে,মন্ডপ সজ্জা করে রাষ্ট্রপতি পুরস্কারের অংশীদার হতে চাইছে। গুরুর আদর্শ থেকেই অনুপ্রেরণা পেয়েছি।পরিবারের হাতে অর্থ তুলে দিতেই এই কাজ শুরু করা। আগামীদিনে আর্ট নিয়ে কিছু করার ইচ্ছে রয়েছে। পঞ্চাননের ছোট থেকেই ছবি আঁকার নেশা ছিলো। স্থানীয় এক শিল্পীর কাছে ছবি আঁকার প্রশিক্ষণ নেয়। তার পর নিজে নিজেই ছবি আঁকার কাজ শুরু করে। বর্তমানে এলাকার ছেলে মেয়েদের ছবি আঁকার প্রশিক্ষণের পাশাপাশি নিজের কাজ করে চলেছে পঞ্জানন।
তবে তার কাজ এলাকার মানুষ, জেলার মানুষ কতটা গ্রহন করছে সেটাই দেখার। ও আগামীদিনে আরও এগিয়ে চলুক। এলাকার নাম সুনাম করুক এটাই চাইবো।