দূরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্ক: জগন্নাথের রথযাত্রা ভারতের অন্যতম বৃহৎ এবং পবিত্র ধর্মীয় উৎসব। এই গুরুত্বপূর্ণ উৎসব বিশ্বব্যাপী লক্ষ লক্ষ ভক্তকে আকর্ষণ করে। পুরীর এই রথযাত্রায় ভগবান জগন্নাথ, তাঁর ভাই ভগবান বলভদ্র এবং বোন দেবী সুভদ্রার থাকেন। পুরীর জগন্নাথ মন্দির থেকে গুন্ডিচা মন্দিরে যাত্রাকেই রথযাত্রা বলে চিহ্নিত করা হয়।২০২৫ সালে এই পবিত্র রথযাত্রা শুরু হবে ২৭ জুন। কারণ তিথি শুরু হচ্ছে ২৬ জুন দুপুর ১:২৫-এ এবং শেষ হচ্ছে ২৭ জুন সকাল ১১:১৯-এ।
এই রথযাত্রা কেবল একটি উৎসব নয়, বরং এক ধর্মীয় আধ্যাত্মিক অনুশীলন। যেখানে ভগবান জগন্নাথ, বলভদ্র এবং সুভদ্রা তিনটি আলাদা রথে চড়ে গুন্ডিচা মন্দিরের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন। এই সময় পুরী শহর রূপ নেয় এক বিশাল তীর্থক্ষেত্রে, যেখানে দেশ-বিদেশের কোটি কোটি ভক্ত ভগবানের দর্শন পেতে ভিড় করেন। মনে করা হয়, একবার সুভদ্রা দেবী নগর পরিদর্শনের ইচ্ছা প্রকাশ করলে ভগবান জগন্নাথ ও বলরাম তাঁকে নিয়ে রথে করে ঘুরে বেড়ান। সেই স্মৃতিকে ধরে রেখেই শুরু হয় এই রথযাত্রা প্রথা। এই সময় সাত দিন তাঁরা মাসির বাড়িতে অবস্থান করেছিলেন, যা 'গুণ্ডিচা মন্দির' নামে পরিচিত।
রথের বিশেষত্ব এবং আকৃতি-
বলরামের রথ: সামনে থাকে
সুভদ্রার রথ: মাঝখানে
জগন্নাথের রথ: পেছনে থাকে
জগন্নাথদেবের রথের নাম 'নন্দী ঘোষ', উচ্চতা প্রায় ৪৫ ফুট এবং এতে ১৬টি বিশাল চাকা থাকে। এই রথ নিম ও হাঁসি কাঠ দিয়ে তৈরি। এতে কোনও পেরেক বা লোহার ব্যবহার হয় না। কারণ, হিন্দু বিশ্বাস অনুযায়ী এগুলো অশুভ বলে বিবেচিত।
রথের রঙ ও সাজসজ্জা-
রথগুলো লাল, হলুদ ও নানা রঙে সজ্জিত থাকে। ওড়িশার কারিগররা বংশ পরম্পরায় এই সাজসজ্জার কাজ করেন সম্পূর্ণ নিষ্ঠা ও রীতিনীতি মেনে। প্রতিটি রথের দড়ির নাম আলাদা— যেমন জগন্নাথের রথ টানার দড়ির নাম 'শঙ্খচূড়'।
ধর্মীয় তাৎপর্য-
বিশ্বাস করা হয় যে, এই রথযাত্রা দেখলে এবং রথ টানলে মানুষ সমস্ত পাপ থেকে মুক্তি পায়। তাই এই রথযাত্রা শুধু দর্শন নয়, আত্মিক মুক্তিরও এক গুরুত্বপূর্ণ পথ। এই কারণে শুধুমাত্র ভারত নয়, বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে ভক্তরা ওই সময় পুরীতে আসেন।