কলকাতা: ১৭৬০ সাল খেকে দীর্ঘ ২৬৩ বছর ধরে দুর্গা পুজো হয়ে আসছে হুগলির সোমড়া সেন বাড়িতে। দিল্লির সম্রাট শাহের আমলে রায় রায়ন উপাধি পান রাজা রামচন্দ্র সেন, তার হাত ধরেই সোমড়ায় ২২ বিঘা জমির উপর বাড়ি এবং মন্দির স্থাপন করেন।
সোমড়া সেন বাড়ি বিখ্যাত তিন হাতের দুর্গার জন্য। দীর্ঘদিন ধরেই এই পুজো হয়ে আসছে বংশ পরম্পরায়। বর্তমান প্রজন্ম এই পুজোর হাল ধরেছে। নানান ইতিহাস ও উপাচার জড়িয়ে রয়েছে এই পুজোর সঙ্গে। প্রতিপদ থেকে শুরু হয় দেবী দুর্গার আহ্বান। সেইমতো ষষ্ঠীর দিনও মাকে বরণ করে নেন পরিবারের মহিলারা। দশমীর দিন বরণ করেই বিদায় জানানো হয় মাকে । এই উপলক্ষে পরিবারের দেশ-বিদেশে থাকা সদস্যরা পুজোর চার দিন হাজির হয় এখানে। খাওয়া, দাওয়া,পুজোপাট সবই চলে মা দুর্গার আরাধনার মধ্যে দিয়ে।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের সঙ্গে রাজা রাম চন্দ্র সেনের বাবার দ্বন্দ্ব তৈরি হয়। রামচন্দ্র সেনের বাবা কৃষ্ণরাম ছিলেন রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের মন্ত্রী।তাকে বন্দি বানান কৃষ্ণচন্দ্র। বাবাকে বন্দি থেকে মুক্ত করতে ছুটে যান দিল্লি ও বাংলার রাজধানী মুর্শিদাবাদে। রাজা রামচন্দ্র দিল্লির সম্রাট মহম্মদ শাহের কাছে নিজের যোগ্যতা দিয়ে প্রতিষ্ঠিত হন।
পরবর্তীকালে বাবাকে মুক্তি ও রায় রায়ান উপাধি পান।পরবর্তীকালের বলাগড়ের সোমড়াতে স্থায়ী বসবাস শুরু করেন। এখানেই তৈরি হয় দারুকাঠের দুর্গা মন্দির ও বসতবাড়ি। পরবর্তীকালে বর্গী আক্রমণে নষ্ট হয় মন্দির। পরে ইট, চুন ও সুরকি দিয়ে তৈরি করা হয় স্থায়ী মন্দির।
সেন বাড়ির সপ্তম প্রজন্ম রঞ্জন কুমার সেন বলেন, তৎকালীন সময়ে জানা যায় স্বপ্ন দেশে ত্রিভুজাদেবী আবির্ভূত হয়েছিলেন। আর সেই থেকেই এই বাড়িতেই চলে আসছে এক চালার মা দুর্গার পুজো।