Festival and celebrations

2 hours ago

Durga Puja 2025:ধর্ম নয়, পুজোয় বাঙালির ঐতিহ্য আর অস্মিতার কণ্ঠস্বর হবে ‘পথের পাঁচালি’

Samaj Sebi Sangha Durga Puja
Samaj Sebi Sangha Durga Puja

 

দুরন্তবার্তা ডিজিটাল ডেস্ক :ধর্মের নামে বিভাজন, ভিন রাজ্যে বাংলা ভাষায় কথা বললেই হেনস্তা, ভিন্ন জাতি বা সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে ঘৃণার বিষ ছড়ানো—এ সবই ভারতীয় সমাজের পুরনো চিত্র। কখনও ভোটব্যাঙ্ক রাজনীতির অজুহাতে, কখনও ক্ষমতার লড়াইয়ে উসকে উঠেছে এই বিভেদ। দেশভাগের আগে ১৯৪৬ সালে বাংলায় তার প্রকট রূপ দেখা গিয়েছিল। ধর্মকে ঢাল করে অসংখ্য প্রাণ বলি হয়েছিল তখন।

তবু সেই অন্ধকার সময়ে কয়েকজন এগিয়ে এসেছিলেন মানুষের জীবন বাঁচাতে। হাতে হাত রেখে রক্ষা করেছিলেন বাংলার অস্মিতা। তাঁদের উদ্যোগেই গড়ে উঠেছিল এক নতুন সংগঠন—‘সমাজ সেবী সংঘ’। প্রায় ৮০ বছর ধরে নানা সমাজকল্যাণমূলক কাজে নিজেদের ঐতিহ্য ধরে রেখেছে এই ক্লাব।

এবার পুজোয় সেই ঐক্যের সংগ্রামকেই থিম হিসেবে বেছে নিয়েছে সমাজ সেবী সংঘ। প্রতীকীভাবেই ১৬ আগস্ট, অর্থাৎ ‘ডিরেক্ট অ্যাকশন ডে’-র দিনেই এই থিম ঘোষণার মাধ্যমে জানানো হল, বিভেদের অন্ধকার নয়, পুজোয় বার্তা দেবে মিলনের আলোর।

নিজেদের ৮০ তম বর্ষের পুজো সাজাতে সমাজ সেবী ক্লাব দায়িত্ব দিয়েছে শিল্পী প্রদীপ দাসকে। ইতিহাসের পাতা ঘেঁটে তাকে পুজোর মঞ্চে তুলে ধরতে পারদর্শী প্রদীপ। আর তাই ক্লাবের ঐতিহ্য আর ইতিহাসকে ফুটিয়ে তুলতে তাঁর হাতেই ব্যাটনটি ধরানো হয়েছে।

থিমের নামও দেওয়া হয়েছে ভাবনার সঙ্গে মিলিয়ে। পথের পাঁচালি। সমাজ সেবী সংঘের দীর্ঘ পথচলার কাহিনিই এ বছর প্রতিফলিত হবে দক্ষিণ কলকাতার এই জনপ্রিয় মণ্ডপে।  থিমের উন্মোচনের অনুষ্ঠানে ইতিহাসের পাতা উন্মুক্ত করেন ইতিহাসবিদ তপতী গুহঠাকুরতা। জানান, এই পাড়ার বাসিন্দা লীলা রায়, অনিল রায়, সুভাষচন্দ্র বসুর দাদা শরৎচন্দ্র বসু, যদুনাথ সরকারের মতো ব্যক্তিত্বরা কীভাবে ১৯৪৬ সালের অশান্ত বাংলায় বাঙালিদের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। পরবর্তীতে সম্প্রীতি আর ঐক্যের ডাক দিয়ে শুরু করেছিলেন দুর্গাপুজো। সেই ট্র্যাডিশনকে বয়ে নিয়ে যাওয়ার দায়িত্বে বর্তমানে যাঁরা রয়েছেন, তাঁদেরই অন্যতম অরিজিৎ মৈত্র। বলেন, “দুর্গাপুজোয় শুধু নিজেদের পথচলার কথা বলেই আমরা শেষ করব না। এই এলাকার বিভিন্ন দিকের উন্নতি সাধনের জন্য একবছরের বিশেষ কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। সৌন্দর্যায়ন থেকে দূষণমুক্ত পরিবেশ তৈরির লক্ষ্যে এগোবো আমরা। শিল্পী প্রদীপ দাসকেও এই উদ্যোগে আমরা পাশে পেয়েছি।” সমাজ সেবী ক্লাব যে নিজ কর্মকাণ্ডের মধ্যে দিয়ে সুন্দরভাবে এগিয়ে যাবে, তেমনই বিশ্বাস ক্লাবের চিফ পেট্রন সৃঞ্জয় বোসের।

অতীতে আমজনতার কাজকে ‘কুর্নিশ’ জানিয়ে সমাজ সেবীকে অনেক পুরস্কার এনে দিয়েছেন প্রদীপ দাস। সুন্দরবন আর কলকাতার মধ্যে গড়েছেন ‘সেতু’। এবার রুপোলি পর্দার মতোই তাঁর ‘পথের পাঁচালি’ও সুপারহিট হবে কি না, তারই অপেক্ষা।

You might also like!