নৈহাটি, ২৯ অক্টোবর : ভবেশ চক্রবর্তীর হাত ধরে শুরু হওয়া নৈহাটির অরবিন্দ রোডের বড়মার খ্যাতি আজ ছড়িয়ে পড়েছে আনাচে কানাচে। ঐতিহ্যবাহী বড়মার পুজো শতবর্ষে পা দিলেও এতদিন কালীপুজোর সময়টা বাদ দিয়ে বছরের বাকি দিনগুলিতে মায়ের বাঁধানো ছবিতেই নিত্যপূজা হতো। সেই চিত্রের এ বার বদল হতে চলেছে। নতুন করে মন্দির নির্মাণ করে সেখানে মায়ের মূর্তি বসানো হয়েছে।
দীর্ঘ অপেক্ষা, দীর্ঘ পরিকল্পনা শেষে শনিবার নৈহাটি শুধু নয়, রাজ্য ছাড়িয়ে দেশ বিদেশের মানুষের আবেগ ‘বড়মা’র মূর্তিতে প্রাণ প্রতিষ্ঠা হচ্ছে। করা হচ্ছে চক্ষুদানও। এসেছেন মায়ের লাখো লাখো ভক্ত সেই মাহেন্দ্রক্ষণ দেখতে। রাজস্থান থেকে আনা কষ্টি পাথরের সাড়ে চার ফুটের মায়ের মূর্তিও বসানো হয়ে গিয়েছে মন্দিরে। মায়ের মূর্তিকে ১০০ ভরি সোনা রুপোর গয়নায় বৃহস্পতিবার সাজানোর কাজও সম্পন্ন হয়েছে।
নৈহাটির রাজেন্দ্রপুরে রাজস্থানি শিল্পী ধর্মেন্দ্র সাউয়ের হাতে বানানো সাড়ে চার ফুটের কষ্টি পাথরের মূর্তি গত বুধবার শোভাযাত্রা করে নিয়ে এসে মন্দিরে বসানোর কাজ ইতিমধ্যেই শেষ। বৃহস্পতিবার ঘট ও ধ্বজাপুজোর কাজও মিটেছে সুষ্ঠু ভাবে।
শুক্রবার মায়ের মূর্তি প্রতিষ্ঠার জন্য গীতাপাঠ, মন্ত্রপাঠ, রুদ্রপাঠ, মহা মৃত্যুঞ্জয়পাঠ, হোমযজ্ঞ হয়েছে। গোটা প্রক্রিয়াটি বেনারস থেকে আসা তিনজন পুরোহিত, হালিশহরে রামপ্রসাদের ভিটে থেকে তিনজন এবং বড়মার মন্দিরের চারজন পুরোহিত সম্পন্ন করেছেন।বেলা ১২টা থেকে ৭০ কেজি বেল কাঠ দিয়ে রাত পর্যন্ত চলে হোমযজ্ঞ।
শুক্রবরই মাকে প্রায় ১০০ ভরি সোনা ও রুপোর গয়নায় সাজানো হয়েছে। ৩৬৫ দিন ২৪ ঘণ্টাই এমন সালঙ্কারা বেশে থাকবেন মা। রবিবারউদ্বোধনের দিন পর্যন্ত চলবে চণ্ডীপাঠ। মায়ের প্রাণ প্রতিষ্ঠার সঙ্গেই হবে চক্ষুদান। মায়ের মূর্তির সামনে একটি অখণ্ড জ্যোতি বসানো হবে। যেটি একটানা ১২ বছর জ্বলবে। মন্দিরের ধ্বজাও আজ প্রতিষ্ঠিত করা হবে।
রবিবার সকালে মায়ের পুজো, ভোগারতির পর তিথি মেনে বেলা ১২.৫৫ মিনিটে বড়মার মূর্তির উদ্বোধন হবে। সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্বোধনে আসার কথা থাকলেও এখনও প্রশাসনিক কোনও নিশ্চয়তা পাওয়া যায়নি।
উদ্বোধন পর্বে হাজির থাকবেন দক্ষিণেশ্বর, আদ্যাপীঠ ছাড়াও কালীঘাট, তারাপীঠ, কঙ্কালিতলার মতো সতীপীঠের প্রধান সেবায়েতরা। থাকবেন স্থানীয় বিধায়ক ও মন্ত্রী পার্থ ভৌমিক-সহ পুলিশ ও প্রশাসনের কর্তারা৷