দুরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্কঃ- ঝাঁ চকচকে সাত মহলা বাড়ি, যা পরিচিত জানবাজারের রানি রাসমনির বাড়ি হিসেবে। যার ঠিকানা ছিল ৭০ ও ৭১ নম্বর ফ্রি স্কুল স্ট্রিট। ১৮০৫ সাল নাগাদ এই বাড়ি তৈরি করেছিলেন রানি রাসমনির শ্বশুর প্রীতিরাম দাস। বারান্দা-অন্দর মিলিয়ে এই বাড়ি তৈরি করতে সময় লেগেছিল প্রায় সাত থেকে আট বছর। আর ঠিক সেই বাড়িতেই মহাধুমধামে পুজিতা হতেন মা দুর্গা, যা শুরু হয়েছিল রানি রাসমনির শ্বশুর প্রীতিরাম দাসের হাত ধরেই। পরবর্তী কালে ১৮৩৬ সালে এই পূজোর দায়িত্ব গ্রহণ করেন রানী স্বয়ং।
রানীর বাড়িতে দেবী তপ্ত কাঞ্চনবর্ণা ও শোলার সাজে সজ্জিতা। শিল্পী লালু চিত্রকরের নিপুণ শিল্পকর্মে একচালা বিশিষ্ট দেবী মূর্তি টি সম্পূর্ন ভাবে হাত দিয়ে গড়া হয় কোন ছাচে নয়। প্রতিপদ থেকে বসে বোধন। আটদিন ব্যাপী বোধনের পরে ষষ্ঠীর দিন হয় মায়ের চক্ষুদান। আগে সপ্তমী থেকে নবমী অবধি ছাগবলী র রীতি ছিল যা বর্তমানে বিলুপ্ত। মাতৃভোগের উপাচার হিসেবে লুচি, বিভিন্ন ভাজা ও ঘরের তৈরী খাজা,গজা,প্যারা, প্রভৃতি মিষ্টি সাজিয়ে দেওয়া হয়। আগে সন্ধি পুজোয় ৪০ মণ চাল এর নৈবেদ্য দেওয়া হত যদিও এখন ১মণ চালের নৈবেদ্য দেওয়া হয়। এই আভিজাত্য পূর্ণ বাড়ির দুর্গা পুজোর অন্যতম বৈশিষ্ট্য এই যে এই বাড়িতে সপ্তমী থেকে নবমী পর্যন্ত চলত কুমারী পুজো। জানা যায় এইসময় রাজা রামমোহন রায়, বিদ্যাসাগরের মতন মহান ব্যাক্তিত্বের আগমণ ঘটত এই বাড়ির দুর্গাপুজোয়। তবে বর্তমানে এই আভিজাত্য এখন অতীত, জৌলুস হারিয়েছে রানি রাসমনির পুজো।
রানি রাসমনির কোন ছেলে ছিল না, তাঁর চার মেয়ে- পদ্মমনি, কুমারী, করুণাময়ী ও জগদম্বা। রানিমার মৃত্যুর পর সম্পত্তি এখন পাঁচ নাতির মধ্যে ভাগ হয়ে গেছে। সেই সঙ্গে বদলে গিয়েছে বাড়ির ঠিকানাও। তবে সুরেন ব্যানাজি রোড ও রানি রাসমনি রোডের বাড়িটিও রানি রাসমনি বাড়ি নামেই পরিচিত।