দুরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্কঃ- বাঙালির দোরগোড়ায় কড়া নাড়ছে দুর্গাপুজো। আর বাকি মাত্র ১৮ দিনের অপেক্ষা। ইতিমধ্যেই সেজে উঠছে সমস্ত বারোয়ারী পুজো মণ্ডপগুলি, বাদ যাচ্ছে না বনেদি বাড়ি গুলিও। তবে উত্তর কলকাতার নিমতলা স্ট্রিটে হাটখোলা দত্তবাড়ির পুজোর রীতি সম্পূর্ণ আলাদা।
১৭৯৪ সালে জগৎরাম দত্ত এই বাড়িতে দুর্গাপুজো শুরু করেন। জগৎরাম দত্ত ছিলেন ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির পাটনা শাখার দেওয়ান। এই পুজোর প্রাণপুরুষও বটে। কিন্তু সাহেবিয়ানার প্রভাবে বাঙালিয়ানাকে ভোলেননি পরিবারের সদস্যরা। স্বদেশি যুগে তাঁরা দেবী দুর্গার সঙ্গে দেশমাতার তুলনা করতেন। পরিবার সূত্রে জানা যায়, এই পরিবারের এক পূর্বপুরুষ প্রতিমা বিসর্জন দিয়ে বাড়ি ফেরার সময় দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের ‘বঙ্গ আমার জননী আমার’ গানটি গাওয়ার প্রচলন করেন। আজও বিসর্জন শেষে বাড়ির ছেলেরা সমবেতভাবে এই গানটি গাইতে গাইতে বাড়ি ফেরেন।
এই বাড়ির প্রতিমায় আছে কিছু বৈচিত্র। সাবেক বাংলা রীতির প্রতিমাকে পরানো হয় ডাকের সাজ। সিংহ ঘোটক আকৃতির। মঠচৌরি শৈলীর চালিতে থাকে মাটির অলঙ্করণ। তাতে আঁকা থাকে কৃষ্ণলীলা ও চণ্ডীর কাহিনি। আচার-অনুষ্ঠানেও রয়েছে ব্যতিক্রম। যেমন, পুজোয় নৈবেদ্য সাজানো থেকে পুজোর সব কাজ করেন ব্রাহ্মণরা। পুজোয় অন্নভোগ না হলেও থাকে নানা ধরনের মিঠাই ও ভাজা ভোগ। পুজোর ভোগে আলু ব্যবহার করা হয় না। সাবেক প্রথা অনুসারে পুজোটি উৎসর্গ করা হয় পরিবারের কুলগুরুর নামে। নবমীতে বলি দেওয়া হয় ক্ষীরের পুতুল। বাড়ির কোনও সদস্যেরই বলি দেখার অনুমতি নেই। বলির জায়গাটা কাপড় দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়।