দুরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্কঃ- হিন্দু ধর্মের কাছে শ্রেষ্ঠ
উৎসব দুর্গাপুজো। আর ১৮ দিন পরেই সেই দুর্গাপুজো। তবে মুসলমান পরিবারে ভোগ ছাড়া পুজোই
গ্রহন করেন না এই দুর্গা। প্রায় ৬০০ বছর ধরে এই রীতি চলে আসছে মুর্শিদাবাদের রঘুনাথগঞ্জের
দুর্গা পুজোয়।
কথিত আছে, পুজোর উদ্যোক্তা রঘুনাথগঞ্জের বহুরা গ্রামের জমিদার শরৎচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরিবার। এই বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবারের আদি নিবাস ছিল সাগরদিঘির মণিগ্রাম। পারিবারিক কারণে দীর্ঘকাল আগে রঘুনাথগঞ্জে চলে আসে এই পরিবার। কথিত আছে, ওই এলাকায় এক সময় জঙ্গলে ডাকাতরা দুর্গাপুজোর আয়োজন করত। একবার শরৎচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় সেখান দিয়ে আসার সময় নিজের চোখে সেই পুজো দেখেছিলেন। পরে সেই রাতেই দেবী তাঁকে স্বপ্নে দর্শন দেন আর ওই পুজো তাঁর বাড়িতে করতে নির্দেশ দেন। সেই সঙ্গে, দেবী এটাও নির্দেশ দেন যে, তিনি ওই গ্রামে প্রথম অন্ন গ্রহণ করবেন কোনও মুসলমান পরিবারের থেকেই।
শোনা যায়, ওই গ্রামে এক মুসলমান বিধবা মহিলা ছিলেন। শরৎচন্দ্রবাবু প্রথমে তাঁকে এই প্রস্তাব দেন। কিন্তু, ওই মহিলা জানান তাঁর কার্যত নুন আনতে পান্তা ফোরানোর মত অবস্থা। কী ভাবে তিনি দেবী দুর্গার ভোগের ব্যবস্থা করতে পারবেন। কথিত আছে, সেই রাতেই নাকি দেবী তাঁকেও স্বপ্নাদেশ দেন যাতে, তিনি সামান্য কিছু হলেও ভোগস্বরূপ নিয়ে আসেন তাঁর জন্য। পরের দিন সকালেই, জঙ্গলে ছোটেন ওই মহিলা। কোনও ভাবে সেখান থেকে সামান্য পরিমাণে কাউনের চাল জোগাড় করে আনেন আর তা দিয়ে নাড়ু বানিয়ে দেবী দুর্গাকে ভোগ দেন। সেই শুরু। আজও সব কিছুর সঙ্গে কাউনের চালের নাড়ু ভোগে দেওয়া হয় এই পুজোয়। সেই সঙ্গে থাকে, ভাত, সজনেডাটা, কাঁঠাল এবং গঙ্গার ইলিশ। উল্লেখ্য, মুর্শিদাবাদের ওই অঞ্চলে সেই সময় কাউনের চালকে 'কোদা' বলা হত। আর সেই কোদা থেকেই এই দেবীর 'কোদাখাকি দুর্গা' নামে পরিচিত।