
দূরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্ক: চার সন্তানের বাবা ধর্মেন্দ্রর প্রেমে পড়েছিলেন বলিউডের ‘ড্রিম গার্ল’ হেমা মালিনী। সুপারস্টার জিতেন্দ্রের সঙ্গে বিয়ে ভেঙে পরিবারের অনুরোধকে উপেক্ষা করে, হেমা মালিনী মনের ডাক শুনে ধর্মেন্দ্রের হাত ধরেছিলেন। হেমা-ধর্মেন্দ্রর প্রেম কাহিনির দিকে ফিরে তাকালে, ১৯৭০ সালে ‘তুম হাসিন মেয় জাওয়ান’ ছবির সেটে তাঁদের প্রথম আলাপ। এরপর একের পর এক ছবিতে একসঙ্গে কাজ করে প্রেম সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন তাঁরা। কিন্তু এই প্রেম আর পাঁচটা ফিল্মি প্রেম কাহিনির চেয়ে আলাদা ছিল, কারণ ধর্মেন্দ্র তখন চার সন্তানের বাবা। বিবাহিত পুরুষের সঙ্গে সম্পর্ক মেনে নেয়নি হেমার পরিবার। অন্যদিকে জিতেন্দ্র এবং সঞ্জীব কুমারও ভালোবাসতেন হেমাকে। যদিও সেটা ছিল একতরফা ভালোবাসা। একটা সময় জিতেন্দ্রর সঙ্গে বিয়েও পাকা হয়ে গিয়েছিল হেমার। কিন্তু সব ছেড়ে ছুড়ে ধর্মেন্দ্রতেই আটকে ছিলেন হেমা।
বাবার বারণ, চার সন্তানের বাবার সঙ্গে দ্বিতীয় বিয়ে কোনও ভাবনাই তাঁর ভালোবাসাকে ফিকে করে দেয়নি। অবশেষে ১৯৮০ সালে সাত পাকে বাঁধা পড়েন হেমা-ধর্মেন্দ্র। প্রকাশ কৌরকে ডিভোর্স না দিয়েই হেমাকে বিয়ে করেছিলেন ধর্মেন্দ্র। বহু বলিউড তারকারই দুটো বউ। কেউ ডিভোর্স দিয়েছেন, কেউ আবার দুই বউ নিয়ে সুখী দাম্পত্য জীবন কাটিয়েছেন। ধর্মেন্দ্রর ক্ষেত্রে ব্যাপারটা একটু আলাদা।
ধর্মেন্দ্রের দুটি পরিবার একেবারেই আলাদা। জানলে অবাক হবেন, হেমা মালিনী ৪৫ বছরের দীর্ঘ দাম্পত্যজীবনে কখনোই স্বামীর পৈতৃক বাড়িতে পা দেননি। শুধু তাই নয়, এই ৪৫ বছরে প্রকাশ এবং হেমা কখনো সরাসরি মুখোমুখি হননি। বিয়ের আগে হেমা কিছু ফিল্মি পার্টিতে প্রকাশকে দেখেছিলেন, কিন্তু বিয়ের পর তাদের দেখা হয়নি। প্রশ্ন ওঠে, শেষ জীবনে কি তাঁরা একসঙ্গে তাদের প্রিয় সখার জন্য কাঁদছিলেন? ধর্মেন্দ্র জীবনের শেষ সময় শুধুমাত্র প্রথম স্ত্রীর সঙ্গেই ছিলেন। হেমা বা তার পরিবারের কারুরই সেই বাড়িতে ঢোকার অনুমতি ছিল না। ২০১৫ সালে হেমার কন্যা এশা দেওল একবার অসুস্থ কাকা অজিত দেওলকে দেখতে সেই বাড়িতে গিয়েছিলেন; সে বন্দোবস্ত করেছিলেন সৎদাদা সানি দেওল। ধর্মেন্দ্র প্রকাশকে সম্পূর্ণভাবে উপেক্ষা করেননি; বরং তাঁর সঙ্গীর কথাকে সম্মান দিয়েছিলেন—যাকে মাত্র ১৯ বছর বয়সে তিনি বিয়ে করেছিলেন, তখন তিনি বলিউডের হি-ম্যান হয়ে ওঠেননি। ৭১ বছরের দাম্পত্যজীবনের ইতি পড়ল সোমবার।
হেমা মালিনীর প্রতিও মনে ঘৃণা পুষে রাখেননি প্রকাশ কৌর। বরং হেমার প্রতি তিনি বরাবর সমব্যাথী। প্রকাশের কথায়, ‘হেমা কোন পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে গিয়েছে তা আমি উপলব্ধি করতে পারি। ওকেও এই সমাজের মুখোমুখি হতে হয়েছে, নিজের পরিবার,আত্মীয়-স্বজনদের জবাবদিহি করতে হয়েছে। তবে আমি যদি হেমার জায়গায় থাকতাম তবে কোনওদিন এই কাজ করতাম না। মেয়ে হিসাবে, ওর ভাবনাকে আমি সম্মান করি। কিন্তু স্ত্রী হিসাবে, মা হিসাবে সেটা আমি মান্যতা দিতে পারব না’। ওদিকে ধর্মেন্দ্র সঙ্গে এক ছাদের নীচে থাকতে না পারার, তাঁর বৈধ স্ত্রীর মর্যাদা না পাওয়ার আক্ষেপ রয়ে গিয়েছে হেমারও। একবার এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, ‘কেউই চায় না যে তাঁর সঙ্গে এটি ঘটুক। তবে মেনে নিতে হবে যে এটি হয়েছে এবং এগিয়ে যেতে হবে। প্রতিটি মহিলা একটি সাধারণ পরিবারের মতোই, স্বামী এবং সন্তান কামনা করে, কিন্তু মাঝে মাঝে, জিনিসগুলি পরিকল্পনা অনুযায়ী হয় না।’
