বাঁকুড়া, ১লা এপ্রিল,২০২৫: দেশের প্রচলিত ২৯টি শ্রম আইনকে তুলে দিয়ে লকডাউনের সময়ে কর্পোরেটদের স্বার্থ রক্ষার লক্ষ্যে সংসদে বিপুল গরিষ্ঠতার সুযোগকে কাজে লাগিয়ে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার আইন সভায় পাশ করিয়ে নিয়েছে ৪টি শ্রম কোড। যার মাধ্যমে কেড়ে নেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে শ্রমজীবীদের নুন্যতম সমস্ত অধিকার। এই কোড কার্যকরী হলে করতে হবে ৮ ঘন্টার পরিবর্তে দৈনিক ১২ থেকে ১৪ ঘন্টা পর্যন্ত কাজ, থাকবে না কোন নুন্যতম মজুরী, যে কোন সময়ে কমিয়ে দেওয়া যাবে প্রাপ্য মজুরী, অতিরিক্ত সময় কাজ করলেও মিলবে না ওভারটাইম, থাকবে না বোনাস, যে কোন সময়ে কোন ক্ষতিপূরণ ছাড়াই করা যাবে শ্রমিকদের ছাঁটাই ও কারখানা বন্ধ করে দেওয়া - সর্বোপরী থাকবে না কোন ইউনিয়ন করার অধিকার। আম্বানী, আদানী-সহ কর্পোরেটদের স্বার্থে ১লা এপ্রিল,২০২৫ থেকেই কেন্দ্রের মোদী সরকার আদাজল খেয়ে নেমে পড়েছে তা কার্যকরী করতে। এরই প্রতিবাদে দেশের প্রায় প্রতিটি শ্রমিক সংগঠনই ১লা এপ্রিল থেকে গ্রহণ করেছে দেশজুড়েই বিক্ষোভ অবরোধের কর্মসূচী - তার সাথে সাযুজ্য রেখেই আজ সকালে বাঁকুড়া রেল স্টেশনের সামনে ও গোবিন্দনগর বাসস্ট্যান্ডে কেন্দ্রীয় শ্রমিক সংগঠনসমূহ ও ১২ই জুলাই কমিটির পক্ষ থেকে সংগঠিত হলো প্রতিবাদ বিক্ষোভের কর্মসূচী। এছাড়াও গত ২৫শে মার্চ বিরোধীদের মতামতকে অগ্রাহ্য করে দেশের লক্ষ লক্ষ পেনশন প্রাপকের ন্যায্য পেনশন বৃদ্ধির চিরাচরিত অধিকার কেড়ে নিতে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার যে 'ফিনান্স বিল' পাশ করিয়ে নিয়েছে তার বিরুদ্ধেও তীব্র ধিক্কার জানানো হলো এই বিক্ষোভসভা থেকে। পাশাপাশি শ্রম কোড বাতিল, মূল্যবৃদ্ধি রোধ, শ্রমিকদের মাসে নুন্যতম ২৬০০০ টাকা মজুরী প্রদান, ১০০দিনের কাজকে বাড়িয়ে বছরে ২০০ দিন করা এবং এই কাজে নিযুক্ত শ্রমিকদের দৈনিক নুন্যতম ৬০০ টাকা মজুরি প্রদান, ব্যাঙ্ক-বীমা-সহ সর্বস্তরের রাস্ট্রায়ত্ত ক্ষেত্রে বেসরকারীকরণের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার, শিক্ষা আইন,২০২০ বাতিল, কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের সমস্ত শুণ্যপদ পৃরণ, কৃষিপণ্যের যথাযথ সহায়ক মূল্য প্রদান, ৬০ উর্ধ্ব সমস্ত গরীব মানুষকে মাসে নুন্যতম ৬০০০/- টাকা পেনশন প্রদান-সহ বিভিন্ন দাবীতে ২০শে মে,২০২৫ শ্রমিক সংগঠনইসমূহ দেশজুড়ে যে সাধারণ ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে তার প্রতিও সভা থেকে পূর্ণ সমর্থন জানানো হয়। - বিক্ষোভ সভা শেষে পোড়ানো হয় শ্রম কোডের প্রতিলিপি।
বাঁকুড়া রেল স্টেশনের সামনে বিক্ষোভ প্রতিবাদে বক্তব্য রাখেন সিআইটিইউ নেতা প্রতীপ মুখার্জী ও উজ্জ্বল সরকার, এআইটিইউসি নেতা ভাস্কর সিংহ, ইউটিইউসি'র সুনীল পাত্র ও ১২ই জুলাই কমিটির নেতা দেবজিৎ চক্রবর্তী। এছাড়াও এই সভায় উপস্থিত ছিলেন সিআইটিইউ নেতা ভৃগুরাম কর্মকার, তপন দাস, মানিক গরাই ,সোহরাব মন্ডল ও সুশান্ত নন্দী,এআইটিইউসি নেতা সঞ্জু বরাট, আইএনটিইউসি'র জেলা সভাপতি সুমন্ত নন্দীএবং পশ্চিমবঙ্গ সরকারী পেনশেনার্স সমিতির জেলা সম্পাদক দিগন্ত সিনহা, সভাপতি গোপাল দাস প্রমুখ। গোবিন্দনগর বাসস্ট্যান্ডে অনুরূপ বিক্ষোভ সভায় বক্তব্য রাখেন উজ্জ্বল সরকার(সিআইটিইউ), বাবলু ব্যানার্জী((এআইসিসিটিইউ), বিশ্বনাথ মন্ডল(আইএনটিইউসি) সঞ্জীব বরাট(এআইটিইউসি) ও সুনীল পাত্র(ইউটিইউসি) - উপস্থিত ছিলেন ভাস্কর সিংহ, সুমন্ত নন্দী প্রমুখ শ্রমিক নেতৃবৃন্দ।