দূরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্ক: দুর্গাপুজোয় কলাবৌয়ের একটা ভূমিকা রয়েছে। মহাসপ্তমীর দিন সকালে কলাবৌ স্নানের মধ্যে দিয়ে তিনদিনের দুর্গাপুজোর সূচনা করা হয়। কলাবৌকে গণেশের পাশে স্থাপন করা হয় বলে আপাতদৃষ্টিতে কলাবৌকে গণেশের স্ত্রী বলে মনে করা হলেও, আদতে তা নয়। কারণ পুরাণ অনুসারে, গণেশের দুই স্ত্রীয়ের নাম রিদ্ধি ও সিদ্ধি। সমাজতাত্ত্বিকরা বলেন, দেবী দুর্গার পুজো আদতে ‘শাকম্ভরী’ মূর্তিকল্পনার আড়ালে নবপত্রিকার পুজো। কৃষিভিত্তিক সমাজ গঠনের একটা পর্বে শস্যদায়িনী পৃথিবীমাতার আরাধনাই কালক্রমে নবপত্রিকার পুজো হিসেবে স্থায়ীত্ব লাভ করেছে। আর বঙ্গদেশের দুর্গাপুজোয় এই ‘নবপত্রিকা’-ই ‘কলা-বৌ’ হিসেবে পুজিত হয়।
বিভিন্ন পুরাণ থেকে পাওয়া তথ্য ও তত্ত্ব অনুসরণ করে দেবীর ৯টা রূপ স্থির করা হয়েছে এবং সেগুলোর প্রতীক হিসাবে ৯টা বিভিন্ন গাছের ডাল বা অংশ নিয়ে গড়া হয় ‘নবপত্রিকা। এতে কলাগাছ, কালোকচু, মানকচু, হলুদ, জয়ন্তী, বেল, ডালিম, অশোক ও ধান ব্যবহার করা হয়। এগুলো শ্বেত-অপরাজিতা লতা ও হলুদ রঙের সুতো দিয়ে বেঁধে তৈরি হয় ‘নবপত্রিকা। এই গাছগুলোকে বিভিন্ন দেবদেবীর প্রতীক হিসেবে ধরা হয়। মহাসপ্তমীর সকালে অনুষ্ঠিত হয় নবপত্রিকার স্নান পর্ব! বাংলার দুর্গাপুজোয় এই ‘নবপত্রিকা’-র স্নান একটি উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য। বারোয়ারি, সর্বজনীন এবং কিছু কিছু পারিবারিক পুজোতে গঙ্গা (বা নিকটবর্তী নদী,পুকুরে) চুবিয়ে এনে এই স্নানপর্ব সারা হয়।