দুরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্কঃ দুই সহোদর বা সহোদরার সম্পর্ক হচ্ছে সবথেকে মধুর। বাবা মায়ের পর সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ রক্তের বন্ধন যদি থাকে তাহলে তা হল এক মায়ের পেটের দুই সন্তান। কিন্তু এই রক্তের বন্ধন কখনও কখনও বিষের চেয়েও তিক্ত হয়ে ওঠে। তখনই হয় সমস্যা। ইতিহাস সাক্ষী দুই সন্তানের বৈরিতায় হয়ে গিয়েছে একাধিক রক্তক্ষয়ী সংগ্রাম। তাই বিদ্বেষের বীজ যাতে সম্পর্ক থেকে দূরে থাকে, তা খেয়াল রাখুন বাবা মায়েরাই।
নজরে থাকুক এই বিষয়
মনস্তত্ববিদরা বলছেন, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায়, সারাজীবনের জন্য দুই সন্তানের বৈরিতার পিছনে দায়ী বাবা মায়েরাই। দুই সন্তানের ঝামেলাই বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই রেফারির ভূমিকা থাকে বাবা মায়েদের। এই ভূমিকা এতটাই সূক্ষ্ম যে তা সামান্য এদিক ওদিক হলেই ম্যাচের ফল যেমনই হোক না কেন জীবনের খেলা অন্যদিকে ঘুরে যায়। দুই সন্তানের মধ্যে সম্পর্ক মিষ্টি মধুর রাখতে এই বিষয়গুলি অবশ্যই নজর রাখুন।
হাতের পাঁচ আঙুল সমান নয়
প্রথমেই মনে রাখা উচিত, এক হাতের পাঁচ আঙুল যখন সমান হয় না, তখন এক বাড়িতে থাকা একাধিক মানুষ কী ভাবে এক হতে পারে! একই বাবা মায়ের সন্তান হলেও কখনই প্রত্যেকের ব্যক্তিত্ব এক হতে পারে না। স্বাভাবিক ভাবেই দুই ভাই বোনের আচার আচরণ, পছন্দ-অপছন্দ, ভাবনা আলাদা হয়। তাই কোনও একজনের ভাবনা বা পছন্দ আপনাদের বেশি পছন্দ হলেও তা কখনই দুই সন্তানের সামনে জাহির হতে দেবেন না। এতে একজন বেশি ভালোবাসা পেলে অন্যজন স্বাভাবিকভাবেই বঞ্চিত হন। এইভাবে দুই সন্তান হয়ে ওঠে একে অপরের শত্রু।
তুলনা নৈব নৈব চ
দুই সন্তানের মধ্যে সম্পর্ক কেমন হবে তা অনেকটাই নির্ভর করে বাবা মায়ের ভূমিকার উপর। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দুই সন্তানের মধ্যে তুলনা টেনে অজান্তেই বিদ্বেষের বীজ বপন করেন বাবা মা। 'দেখ তোর দাদা কত ভালো' কিংবা 'দেখ তোর বোন কত সুন্দর গান গায়, নাচে আর তুই কিচ্ছু পারিস না।' এধরনের কথাবার্তা ভুলেও বলবেন না। রাগ দেখিয়ে এসব কথা বললে বাচ্চা অনুপ্রেরণা তো পায়ই না, উলটে নিজের সহোদর বা সহোদরা প্রতি তিক্ত হয়ে ওঠে তাঁর মন।
নিরপেক্ষ হোক ভূমিকা
দুই সন্তানের ঝগড়ার ক্ষেত্রে বাবা মা যখন রেফারি, তাঁর ভূমিকা সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতির থেকেও গুরুত্বপূর্ণ। নিরপেক্ষভাবে বিষয়টি শুনে ঝামেলা মেটান। অনেক সময় বাবা মায়েরা ব্যস্ততার মাঝে দু পক্ষের কথা না শুনে যে বাধ্য তার কথাই ঠিক বলে ধরে নেন। কিন্তু সবসময় বিষয়টি তা নাও হতে পারে। ছোটবেলায় বাবা মায়ের এই ধরনের আচরণ শিশুমনে গভীর দাগ কেটে দেয়। যা থেকে অনেক দূর গড়াতে পারে সমস্যা।
সাম্য রাখুন বিশ্বাস
দুই সন্তানের মধ্যে বাবা মায়ের কিনে দেওয়া উপহার, খেলনা, বই, জামা কাপড় নিয়েই সবথেকে বেশি গোল বাঁধে। এক্ষেত্রে বড় বা ছোট এই নিয়ে ভেদ করবেন না। দুজনকে সমান সংখ্যক জিনিস দিন। কোনও সন্তানকে ভালো কাজের পুরস্কার হিসেবে কিছু কিনে দিলে, অন্যজনকে হেয় করে নয়, বুঝিয়ে বলুন এরকম কাজ করলে সেও পাবে দারুণ পুরস্কার। বাবা মায়েরাই দুই সন্তানের মধ্যে গড়ে তুলতে পারেন অটুট বন্ধন। এই বিষয়গুলি মাথায় রাখলে দেখবেন জোরালো হবে সম্পর্ক, যা টেক্কা দেবে বিখ্যাত আঠার বিজ্ঞাপনকেও। 'এমন মজবুত জোড় টুটেগা নহি।'