Life Style News

4 hours ago

Festive Journey:"শিশুদের পার্বণ-পরিচয়ে রথযাত্রা, তিন তারকার বার্তা মন ছুঁয়ে যায়"

"Children's festival-themed Rath Yatra
"Children's festival-themed Rath Yatra

 

দুরন্তবার্তা ডিজিটাল ডেস্ক : রশিতে হালকা টান পড়তেই কাঁপতে কাঁপতে গড়াতে শুরু করে ছোট্ট রথের চাকা। আর সেই দৃশ্য দেখে দৌড়ে আসে কচিকাঁচারা, উচ্ছ্বাসে মেতে ওঠে। ওরাও পায়ের ছোট ছোট ছন্দে রথের সঙ্গে সঙ্গে চলে, যেন কোনও অদৃশ্য আনন্দের বাঁধনে জড়িয়ে পড়েছে সবাই। রথের দিনে কাঠের সেই ছোট্ট কাঠামো সাজিয়ে কাছাকাছি কিছু বাড়িতে ঘুরে বেড়ানো, হাতে হাতে মিষ্টির ভাগ, আর ছোট্ট কিছু প্রণামী সংগ্রহ করে ফেরা—এই অভিজ্ঞতাই একদিন হয়ে উঠবে সোনালি শৈশবের স্মৃতি।

শুধু উৎসব নয়, রথের মতো পার্বণও হয়ে ওঠে শেখার একটা মাধ্যম—সংস্কৃতির, ভাগ করে নেওয়ার আনন্দের, ছোট ছোট দায়িত্ববোধের। তাই তো টলিপাড়ার তিন মা মনে করেন, রথের দিনটিতে ঘরের ছোটদের সক্রিয়ভাবে যুক্ত করাটা জরুরি। সাজানো, টানার প্রস্তুতি, গল্প বলা—এসবই তাদের মনে গেঁথে দেবে উৎসবের আনন্দ আর শিকড়ের টান। শিশুদের সঙ্গে যদি পার্বণের এই আত্মিক যোগ না গড়ে তোলা যায়, তবে ভবিষ্যতে স্মৃতির ভাঁজে সেসব দিন কোথা থেকে আসবে?

প্রতি বছরই ছোট্ট কিয়ার জন্য রথ সাজান তার মা, অভিনেত্রী কনীনিকা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ বারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। মা-মেয়ে মিলে নিজের হাতে সাজিয়েছেন রথ, এবং যথারীতি ঘরের ভিতরে ও বাইরেও সেই রথ টানবেন। কনীনিকার কথায়, ‘‘যে ভাবে একটি সাধারণ মধ্যবিত্ত বাঙালি পরিবারে রথযাত্রা পালিত হয়, আমাদের বাড়িতেও সেভাবেই হয়। জগন্নাথ, বলরাম আর সুভদ্রার পূজো হয়। আমাদের বাড়িতে নারায়ণেরও উপস্থিতি আছে, তাই প্রসাদ দেওয়া হয়। এর বেশি কিছু নয়।’’

তিনি আরও জানান, কিয়ার জন্য খুব সাজগোজ বা আড়ম্বরের আয়োজন করা হয় না। সব কিছু হয় ছোটখাটোভাবে, তবে তা যথেষ্ট গুরুত্ব পেয়েই। কনীনিকার মতে, ‘‘অনেকে ভাবে, আমরা অভিনয়ের সঙ্গে যুক্ত বলেই আমাদের সন্তানদের জীবনটা হয়তো খুব আলাদা। কিন্তু বাস্তবে তা নয়। কিয়াও অন্য যে কোনও মধ্যবিত্ত পরিবারের শিশুর মতোই বড় হচ্ছে। তাই এই রকম ছোট ছোট পারিবারিক উৎসবের মধ্য দিয়ে ওর বেড়ে ওঠাটাও দরকারি বলে মনে করি।’’

শ্রীময়ী চট্টরাজের ৭ মাসের মেয়ে কৃষভি খুব মিশুকে। যে কারও কোলে গিয়ে আদর খেতে রাজি সে। উত্তরবঙ্গ ভ্রমণের সময়ে ছোট ট্রেকিংয়ের পথে গাড়িচালকের কোলেই কাটাল সে। মা-বাবার কাছে যাওয়ার বায়না নেই। বাবা কাঞ্চন মল্লিক মেয়েকে কাছছাড়া করতে ভয় পেলেও, মা শ্রীময়ী এ বিষয়ে বেশ সাহসী। তিনি বলেন, ‘‘আমি অত আতুপুতু করি না বাবা। বৃষ্টিতে ভিজে, রোদে পুড়েই তো বড় হবে। রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে। আর সে কারণেই দিঘার স্নানযাত্রা, রথেযাত্রায় রথ টানা, এ সবই মেয়েকে নিয়ে করতে চাই।’’ কাঞ্চনের বাড়়িতেও জগন্নাথের মূর্তি রয়েছে। তা‌ই পুজো হবে বড় করেই। ভোগ রান্না করবেন শ্রীময়ী। বাড়িতে রথ আছেই। তা সাজানো হবে মেয়ের জন্য। মেয়েকে কোলে নিয়ে রথের দড়ি ধরে অল্প কয়েক পা হেঁটে নতুন পার্বণের সঙ্গে পরিচয় করাবেন মা-বাবা।

অনিন্দিতা রায়চৌধুরীর মেয়ের ৪ মাসও বয়স হয়নি। কিন্তু ছোট থেকেই কিছু অভ্যাস প্রয়োজন বলে মনে করেন নতুন মা অনিন্দিতা। তাই রথ সাজানোর ইচ্ছে মায়ের। কিন্তু সদ্য অনিন্দিতার স্বামী সুদীপ সরকার পিতৃহারা হয়েছেন। তাই খুব ঘটা করে কিছু করার মতো মন নেই তারকাদম্পতির। তাও সন্তানের হাতে রথের দড়ি ছোঁয়ানোর ইচ্ছে রয়েছে। অভিনেত্রী বলছেন, ‘‘৪ মাসের শিশুর স্মৃতি তৈরি হয়নি ঠিকই, কিন্তু আমরা সারা দিন ওর সঙ্গে কথা বলি। এই শব্দগুলোর সঙ্গে ওর পরিচয় ঘটে। আমাদের কথার সুরগুলো ধরে। সুর ধরে আওয়াজ করে। সে সব মাথায় রেখেই পারিবারিক, সামাজিক ঐতিহ্যগুলোর সঙ্গে ওকে অভ্যস্ত করা। এমন ছোটবেলাই ওকে দিতে চাই, বড় হয়ে যেটাই ওকে নস্টালজিক অনুভূতি এনে দেবে।’’

একরত্তিদের জন্য রথের সজ্জা, রং ইত্যাদি খুবই আকর্ষণীয় বিষয়। তার উপর বাড়িতে লোকজন, খাওয়াদাওয়া, পার্বণের আনুষঙ্গিক দিকগুলির জন্যই অপেক্ষা থাকে ছোটদের। তাই প্রত্যেক পার্বণ নিজেদের সামর্থ্য মতো উদ্‌যাপন করা খুব দরকার। তাতে সামাজিক পরিবেশে মেলামেশা করতে পারে সন্তানেরা, সুন্দর স্মৃতি তৈরি হতে পারে তাঁদের জীবনে।


You might also like!