
কলকাতা: পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বিভিন্ন দফতরের প্রকল্পের অগ্রগতি পর্যবেক্ষণে আরও এক ধাপ এগিয়ে গেল নবান্ন। রাজ্যের সমস্ত সরকারি নির্মাণ প্রকল্পে এখন থেকে 'জিয়ো ট্যাগিং' ব্যবস্থা যুক্ত করা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।সম্প্রতি রাজ্য সরকারের অর্থ দফতর এই সংক্রান্ত একটি নতুন বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে। প্রশাসনিক মহলের বিশ্বাস, এই অত্যাধুনিক ব্যবস্থার মাধ্যমে প্রকল্প বাস্তবায়নের প্রতিটি ধাপের কাজের উপর সরাসরি এবং স্বচ্ছ নজরদারি নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। ফলে সরকারি প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার গতি এবং গুণগত মান আরও উন্নত হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
এর আগে সরকারি প্রকল্পগুলির অগ্রগতি নিরীক্ষণের জন্য অর্থ দফতর চালু করেছিল ইউনিফায়েড প্রোজেক্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (ইউপিএমএস) নামে একটি বিশেষ পোর্টাল। গত দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে রাজ্যের সব দফতরকে এই পোর্টালে তাদের নির্মীয়মাণ প্রকল্পগুলির তথ্য নথিভুক্ত করতে হয়। প্রকল্পের সূচনা থেকে শেষ পর্যায় পর্যন্ত কাজ কত দূর এগিয়েছে, তার রিয়্যাল-টাইম আপডেটও এই পোর্টালেই দেখা যায়। ফলে কোনও প্রকল্পের কাজ বিলম্বিত হলে যাতে নবান্ন থেকে তা সরাসরি চিহ্নিত করা সম্ভব হয়, তার জন্য এ বার যুক্ত হল ‘জিয়ো ট্যাগিং’। এই প্রযুক্তির মাধ্যমে কোনও প্রকল্প সম্পর্কিত স্থির ছবি বা ভিডিয়ো ক্লিপে স্বয়ংক্রিয় ভাবে স্থানাঙ্ক, সময় ও তারিখ যুক্ত থাকে। অর্থাৎ, যে ছবি বা ভিডিয়ো জমা দেওয়া হচ্ছে, তা প্রকল্পের আসল জায়গা ও সময়ের সঙ্গে মিলছে কি না, তা সহজেই যাচাই করা যাবে। ফলে প্রকল্পের বাস্তব অবস্থার সঙ্গে অনলাইনে দেওয়া তথ্যের মিল খতিয়ে দেখা আরও সহজ হবে।অর্থ দফতরের আধিকারিকদের একাংশের মতে, এই উদ্যোগের লক্ষ্য রাজ্যের উন্নয়ন প্রকল্পে স্বচ্ছতা বৃদ্ধি করা। প্রয়োজনে জবাব চাওয়া। কোনও দফতর যাতে কাজ না করে প্রকল্পের অর্থ ফেলে না রাখে, তা নিশ্চিত করতেই নবান্ন এ উদ্যোগ নিয়েছে। কারণ, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাজের অগ্রগতি না হলে অর্থ দফতর সেই বরাদ্দ অর্থ ফেরত নিয়ে নেয়।
প্রশাসনিক পর্যবেক্ষকদের মতে, জিয়ো ট্যাগিংয়ের মাধ্যমে এখন প্রকল্পগুলির গুণমান ও বাস্তব অগ্রগতির নির্ভুল চিত্র পাওয়া সম্ভব হবে। একই সঙ্গে অনিয়ম, বিলম্ব বা দুর্নীতির সম্ভাবনাও অনেকটা রোধ করা যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। রাজ্য সরকারের দাবি, এই পদক্ষেপে সরকারি প্রকল্পের তদারকি ব্যবস্থায় এক নতুন স্বচ্ছতার দিগন্ত খুলে যাবে।
