দূরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্ক: আবার উত্তপ্ত গুলশান কলোনি, একের পর এক গুলির শব্দে কেঁপে উঠল গোটা এলাকা। পরিস্থিতি রণক্ষেত্রের রূপ নেয়। অভিযোগের তির উঠেছে তৃণমূল ঘনিষ্ঠ দুষ্কৃতী মিনি ফিরোজ ও তার অনুগামীদের বিরুদ্ধে। এই হিংসার পেছনে কি শাসকদলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব, না কি সিন্ডিকেট দখলের লড়াই? এই প্রশ্ন ঘুরছে রাজনৈতিক মহলের আলোচনায়। এলাকা সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় গুলশান কলোনির অটোস্ট্যান্ডে হঠাৎই দুষ্কৃতীরা হামলা চালায়। একের পর এক রাউন্ড গুলি ছোড়া হয় বলে অভিযোগ। ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়ায় এলাকায়। আতঙ্কে দোকানপাট, বাজার মুহূর্তের মধ্যেই বন্ধ হয়ে যায়। স্থানীয়দের দাবি, প্রত্যেক ভোটের মরসুমে এভাবেই দুষ্কৃতীদের দাপট বাড়ে। এবারের ঘটনাও তারই পুনরাবৃত্তি।
অভিযোগের কেন্দ্রে মিনি ফিরোজ। তিনি শাসকদলের এক বিধায়কের ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত। যদিও ঘটনার সময় তিনি এলাকায় উপস্থিত ছিলেন না বলে জানা গিয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, ফিরোজের সহযোগী সাজিদ-সহ কয়েকজন দলবল নিয়ে হামলা চালায়। শুধু গুলি চালানোই নয়, এলাকায় এক বাসিন্দাকে বেধড়ক মারধর করা হয়। মুখ ফেটে গিয়েছে তাঁর। আহত ব্যক্তি পুলিশের সামনেই সাজিদের নাম নেন বলে খবর। ঘটনার পরই বিশাল পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয় আনন্দপুর থানার তরফে। গোটা এলাকা ঘিরে তল্লাশি চালানো হয়। সিসিটিভি ফুটেজে গুলি চালানোর মুহূর্ত ধরা পড়েছে বলে পুলিশ সূত্রের খবর। পাশাপাশি বৃহস্পতিবার গভীর রাতে এন্টানি থানা এলাকার ক্যানাল রোড ও কনভেন্ট রোডের সংযোগস্থলে দুই ব্যক্তিকে যেতে দেখা গিয়েছিল। তখন রাত প্রায় তিনটে। গভীর রাতে দু’জনকে যেতে দেখে টহলদারি পুলিশ কর্মীদের সন্দেহ হয়। দু’জনকে পাকড়াও করে জিজ্ঞাসাবাদ করতেই সন্দেহ হয়। তল্লাশি চালাতেই তাঁদের থেকে বেরিয়ে পড়ে একটি একনলা দেশি বন্দুক ও দুটি কার্তুজ। এরপরই দু’জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ধৃতদের নাম আহমেদ হোসেন ওরফে মহম্মদ মধু ও রাজা খান। রাজা তপসিয়া রোড এলাকার বাসিন্দা। অন্যদিকে, আহমেদ হোসেন আনন্দপুরে গুলশন কলোনির বাসিন্দা। অস্ত্র আইনে ধৃতদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু হয়েছে। আনন্দপুরের গুলশন কলোনিতে বৃহস্পতিবার রাতে তুমুল অশান্তি দেখা দিয়েছিল। দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষের জেরে চলেছে গুলি চলে অভিযোগ। দু’জনের জখম হওয়ার কথাও জানা গিয়েছিল। আহমেহ গুলশন কলোনিরই বাসিন্দা। এই দুই ব্যক্তি কি কোনওভাবে গতকালের সংঘর্ষের সঙ্গে জড়িত? সেই প্রশ্ন উঠেছে। পুলিশ সেই বিষয়টি খতিয়ে দেখছে।
বিরোধীরা অভিযোগ তুলেছে, “গুলশান কলোনির ঘটনা স্পষ্ট করে দিচ্ছে শাসকদলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বই আসল কারণ। ভোটের আগে প্রভাব খাটানোর জন্যই এই তাণ্ডব।” শাসকদলের তরফে অবশ্য এ বিষয়ে এখনও কোনও আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া মেলেনি। যদিও সাধারণ মানুষের বক্তব্য একটাই— “রাজনীতি যাই হোক, গুলি-টুলি বন্ধ হোক। প্রতিদিন আতঙ্কের মধ্যে থাকতে চাই না।”