কলকাতা, ২৫ আগস্ট : তৃণমূল কংগ্রেসের দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরব হওয়ার জন্য সব দলকে একজোট হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার ।
এই প্রসঙ্গে বৃস্পতিবার বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ প্রায় একই সুরে বলেন, ‘ যদি নরেন্দ্র মোদীকে হটাবার জন্য ডান বাম সাদা কালো নীল এক হতে পারে, বাংলার স্বার্থে বাংলার ভবিষ্যতের স্বার্থে আমার সভাপতি যদি আহ্বান করে থাকেন যারা বাংলার ভবিষ্যৎ এবং গণতন্ত্র নিয়ে চিন্তিত তাদের আসা উচিত”।
দিলীপ ঘোষ আরও বলেন, “ আপনি আপনার ঝাণ্ডা রাখুন, আপনার এজেন্ডা রাখুন, নির্বাচনে আপনি আপনার বক্তব্য রাখুন কিন্তু আজ বাংলা যে সঙ্কটে পড়েছে সেখান থেকে বাঁচাবার জন্যে সবার এক হওয়ার দরকার রয়েছে । না হলে এই যে ব্যাপক দুর্নীতি অনেক দূর পর্যন্ত যার শিকড় গজিয়ে গেছে তাকে উপড়ে ফেলা সম্ভব নয়। যেমন দেশের ন্যাশনাল ডিজাস্টার হয় পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রে স্টেট ডিজাস্টার এটা”। নবান্ন অভিযানে তাঁর উপস্থিতি বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, দলের উর্ধ্বে কেউ নয় । দল যা সিদ্ধান্ত নেবে কর্মী হিসেবে তা গ্রহণ করাই তাঁর দায়িত্ব।
প্রসঙ্গত, বিজেপির রাজ্য সভাপতি ১৩ই সেপ্টেম্বর নবান্ন অভিযানের ডাক দিয়েছেন । একই সঙ্গে তিনি তৃণমূল কংগ্রেসের দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরব হওয়ার জন্য সব দলকে একজোট হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। বিজেপির পতাকা ব্যানার না নিয়ে যেতে পারলে নিজেদের পতাকা নিয়ে আসা হোক কিন্তু তাও এই দুর্নীতির বিরুদ্ধে এক জোট হয়ে নবান্ন অভিযান এর আহ্বান জানিয়েছেন তিনি ।
গতকাল অনুব্রত মণ্ডলকে আদালতে নিয়ে যাওয়ার সময় বেশ খোশ মেজাজে দেখা গিয়েছিল কিন্তু তারপর তাকে ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয় আদালতের তরফ থেকে। এই প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘ জানি না ভেতরে কী হয়েছে । উনি হয়তো বুঝতে পেরেছেন যে এবার বেল হয়ে যাবে বা কেউ হয়তো বলেছেন চিন্তা করবেন না আমরা আছি। তবে যে ধরনের সম্পত্তি ওনার পাওয়া গিয়েছে এত সহজে উনি ছাড়া পাবেন না । সাজা ওনাকে পেতেই হবে। উকিল হয়তো বলেছেন হেসে কথা বলুন তাই উনি করেছেন’।
এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতিতে নিউটাউন থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে বেশ কিছু মিডিল ম্যানকে । যাদের দ্বারা টাকা তোলা হতো বলে অভিযোগ। এই প্রসঙ্গে তাঁর বক্তব্য, এই মিডিল ম্যানদেরকে ধরলে পুরোটাই ধরা পড়ে যাবে। কার কাছ থেকে টাকা নেওয়া হয়েছে কার কাছে টাকা পৌঁছে দেওয়া হয়েছে এই সব কিছু জানার জন্য দালালদেরকে ধরার প্রয়োজন রয়েছে বলে জানালেন তিনি। গতকাল আদালতে পুজো কমিটি গুলিকে অনুদান দেওয়ার সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করা হয়েছে ।
এই সম্পর্কে দিলীপ ঘোষকে বলতে শোনা যায়, পুজো কমিটি গুলি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছ থেকে কোনরকম টাকা চাননি । সাধারণ মানুষের চাঁদার টাকায় আনন্দসহকারে পুজো গুলি করা হয়। কিন্তু তারপরেও কেন তিনি সাধারণ মানুষের ট্যাক্সের টাকা উন্নয়নের স্বার্থে কাজে না লাগিয়ে পুজো কমিটি গুলিকে দেবেন সেই প্রশ্ন তোলেন তিনি। এই প্রসঙ্গেই তিনি বলেন, “এখন উনি গাড্ডায় পড়েছেন। পুজো কমিটি গুলিকে কিনে নেওয়ার জন্য, মুখ বন্ধ করার জন্য এবং পুজো কমিটির প্যান্ডেলগুলিতে নিজের ছবি লাগানোর জন্য এই টাকা দিচ্ছেন উনি”।