
দূরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্ক:নন্দীগ্রামের বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী এবং তমলুকের সাংসদ অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের মধ্যে কোনো মতপার্থক্য নেই, সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে এমনই ইঙ্গিত দিলেন বিরোধী দলনেতা। সম্প্রতি একটি সংঘাতের ঘটনায় দু’জনের অবস্থান আলাদা হওয়ায় রাজনৈতিক মহলে তাঁদের মনোমালিন্য নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছিল। সেই জল্পনায় জল ঢেলে শুভেন্দু জানান, তাঁর নির্বাচনী এলাকায় সাংসদ তহবিলের টাকায় ২৬টি জনকল্যাণমূলক কাজ চলছে, যার জন্য তিনি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের প্রতি ধন্যবাদজ্ঞাপন করছেন। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, তৃণমূলের 'ফাটল ধরানোর' কৌশলকে ব্যর্থ করতেই দুই নেতার এই পারস্পরিক সংহতি প্রদর্শন।
সপ্তাহ দুয়েক আগে ব্রিগেডে গীতাপাঠ অনুষ্ঠানে এক ফেরিওয়ালাকে চিকেন প্যাটি বিক্রির ‘অপরাধে’ মারধর করে একদল যুবক। নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ সেই ঘটনায় তিন জনকে গ্রেপ্তার করলেও পরের দিনই জামিন পেয়ে যান অভিযুক্তরা। সে দিনই তাঁদের নিজাম প্যালেসে ডেকে গেরুয়া উত্তরীয় পরিয়ে সংবর্ধনা দেন শুভেন্দু। কিন্তু তমলুকের বিজেপি সাংসদ অভিজিৎ হাঁটেননি শুভেন্দুর পথে। তিনি সংবর্ধনা দেওয়ার বদলে ওই তিন অভিযুক্তকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করেন। অভিজিৎ বলেন, ‘একটা গরিব মানুষকে মারা হলো! ভয়ঙ্কর অন্যায়। নিন্দা করার ভাষা নেই। এই হামলাকারীরা কোথা থেকে এসে জুটল!’ অর্থাৎ, প্যাটিওয়ালার উপরে হামলায় ঘটনায় শুভেন্দু আর অভিজিতের অবস্থান যে ভিন্ন, তা প্রকাশ্যে চলে আসে। যা নিয়ে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা তৃণমূল সক্রিয় হয়ে উঠেছে বলে বিজেপি ব্রিগেডের একাংশের দাবি।
নন্দীগ্রামের এক বিজেপি নেতার কথায়, ‘শুভেন্দুদা আর অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের মধ্যে ফাটল তৈরি হলে সব থেকে লাভ তৃণমূলের। এমনিতে আমাদের জেলায় তৃণমূল দাঁত ফোটানোর মতো অবস্থায় নেই। তাই এই প্যাটিওয়ালার উপরে হামলায় ঘটনায় সাংসদ–বিধায়কের মতপার্থক্য প্রচার করে তৃণমূল চাইছে জেলার বিজেপি নেতা–কর্মীদের বিভ্রান্ত করতে। কিন্তু মঙ্গলবার ফেসবুকে অভিজিতের প্রশংসা করতে জোড়াফুল শিবিরের সেই পরিকল্পনা বানচাল করে দিয়েছেন শুভেন্দুদা নিজেই।’
সোমবার নন্দীগ্রাম বিধানসভার ভেকুটিয়া সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতির শতবর্ষ উদযাপন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন অভিজিৎ। সে কথা জানিয়ে ফেসবুকে অনুষ্ঠানের একটি ভিডিয়োও পোস্ট করেন শুভেন্দু। তিনি লেখেন, ‘নন্দীগ্রাম বিধানসভা এলাকায় ওঁর (অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়) সাংসদ তহবিলের অর্থ বরাদ্দের মাধ্যমে ২৬টি প্রকল্পের কাজ চলছে। এই উন্নয়ন যজ্ঞের জন্য ওঁকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই।’ পূর্ব মেদিনীপুর জেলার এক তৃণমূল নেতার কথায়, ‘সামনে বিধানসভা ভোট। তাই শুভেন্দু নিজের এলাকার সাংসদের সঙ্গে বিরোধের কথা প্রকাশ্যে আনতে চাইছেন না। এ দিন অভিজিৎকে ধন্যবাদ জানিয়ে তাঁর পোস্ট আসলে অনেকটা শাক দিয়ে মাছ ঢাকার মতো।’
