দুরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্কঃ মলদ্বীপ সরকার ইজরায়েলি পাসপোর্টধারীদের দেশে প্রবেশ নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়ার একদিন পর ইজরায়েল তার নাগরিকদের, যাদের একাধিক দেশের পাসপোর্ট রয়েছে তাদের মলদ্বীপে ভ্রমণ এড়াতে পরামর্শ দিয়েছে এবং সেখানে অবস্থানকারীদের ভারত মহাসাগর দ্বীপপুঞ্জ ছেড়ে চলে যেতে বলেছে।
ইজরায়েলি পাসপোর্টে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব মলদ্বীপে প্রবেশ নিষিদ্ধ করতে প্রয়োজনীয় আইনি সংশোধনী করার জন্য মলদ্বীপ সরকারের সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে রবিবার ইজরায়েলের বিদেশমন্ত্রক এই সুপারিশ করেছে। মলদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুইজ্জু ইজরায়েলি পাসপোর্টের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তবে কবে নাগাদ তা কার্যকর হবে সরকার তা নির্দিষ্ট করেনি।
দূতাবাসের পোস্টে বলা হয়েছে, ‘যেহেতু মলদ্বীপ আর ইজরায়েলিদের স্বাগত জানায় না, তাই এখানে কিছু সুন্দর এবং আশ্চর্যজনক ভারতীয় সৈকত রয়েছে যেখানে ইজরায়েলি পর্যটকদের আন্তরিকভাবে স্বাগত জানানো হয় এবং অত্যন্ত আতিথেয়তার সাথে ব্যবহার করা হয়। আমাদের কূটনীতিকরা যে জায়গাগুলো পরিদর্শন করেছেন তার উপর ভিত্তি করে এই সুপারিশগুলি করা হয়েছে।’
পোস্টটিতে লাক্ষাদ্বীপ, আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ, গোয়া এবং কেরালার সমু্দ্র সৈকতের দেওয়া হয়েছে। ইজরায়েলের কনসাল জেনারেল কোবি শোশানি এমনকি এমনকি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর জানুয়ারির একটি টইটও রিপোস্ট করেছেন। সেখানে প্রধানমন্ত্রীকে লক্ষদ্বীপের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের প্রশংসা করতে দেখা গিয়েছে।
শোশানি টুইটে মোদীর পোস্টটি পুনরায় পোস্ট করে লিখেছেন, ‘মলদ্বীপ সরকারের সিদ্ধান্তের জন্য ধন্যবাদ। ইজরায়েলিরা এখন লাক্ষাদ্বীপের সুন্দর সমুদ্র সৈকত ঘুরে দেখতে পারে।’
মলদ্বীপের তিনজন মন্ত্রী ভারত এবং প্রধানমন্ত্রী মোদী সম্পর্কে অবমাননাকর মন্তব্য করার পরে লাক্ষাদ্বীপ বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে এসেছিল। সেই সময় প্রধানমন্ত্রীর লাক্ষাদ্বীপ সফর থেকে শেয়ার করা ফটোগুলিতে মন্তব্য করার সময় ভারত সম্পর্কে জেনোফোবিক, বর্ণবাদী এবং ঘৃণ্য পোস্টগুলিকে বেশি করে ট্রিগার করা হয়।
ইজরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও তার নাগরিকদের মলদ্বীপ ভ্রমণ এড়িয়ে চলতে বলেছে। বিদেশমন্ত্রকের তরফে একটি বিবৃতি জারি করে বলা হয়েছে, ‘ইজরায়েলি পাসপোর্ট ছাড়াও বিদেসী পাসপোর্টধারী ইজরায়েলি নাগরিকদের জন্যও সুপারিশটি বৈধ। দেশে থাকা ইজরায়েলি নাগরিকদের জন্যও এটি ছেড়ে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে, যেগেতু তারা যদি কোনও কারণে সমস্যায় পড়ে তবে আমাদের পক্ষে সাহায্য করা কঠিন হবে।’
গত বছর প্রায় ১১,০০০ ইজরায়েলি মলদ্বীপে গিয়েছিলেন। যতজন পর্যটকের আগমন ঘটে এটি মোট তার ০.৬ শতাংশ। এই বছরের প্রথম চার মাসে ইজরায়েলি সফর ৫২৮-এ নেমে এসেছে যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৪৪ শতাংশ কম।
২০১৪ সালে মলদ্বীপ ইজরায়েলের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক বয়কট, ডিভেস্ট এবং নিষেধাজ্ঞা অর্থনৈতিক যুদ্ধে যোগদান করার সিদ্ধান্ত নেয়। আইডিএফ হামাসের বিরুদ্ধে গাজায় সামরিক অভিযান শুরু করে এবং তার তৎকালীন রাষ্ট্রপতি আবদুল্লাহ ইয়ামিন আনুষ্ঠানিকভাবে ইজরায়েলের সঙ্গে দেশটির সহযোগিতা চুক্তি ২০১৮ সালে বাতিল করেছিল।