দুরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্কঃ অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে ‘খেলনার মেলা’ আয়োজন করতে রাজ্যগুলিকে নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রক। তাতে জোর দেওয়া হয়েছে স্থানীয় পুতুলের উপরে। বলা হয়েছে, ৩ থেকে ৬ বছরের বাচ্চারা খেলতে খেলতে শিখবে পড়াশোনা। আর তার জন্যই এই ব্যবস্থা। তবে রাজ্য সরকারের বক্তব্য, কেন্দ্রের বহু আগেই এই প্রকল্প বাংলায় নেওয়া হয়েছে। আরও একটি ক্ষেত্রে বাংলার দেখানোর পথেই চলছে কেন্দ্র।
কিছুদিন আগে কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রক একটি বিস্তারিত নির্দেশিকা প্রকাশ করে। গর্ভবতী মহিলা এবং শিশুদের পুষ্টি-সহ আরও নানা বিষয়ে কীভাবে দেখভাল করতে হবে, নির্দেশিকা জুড়ে তারই উল্লেখ রয়েছে। কেন্দ্রের দাবি, একেবারে খুদে শিশুদের মন থেকে পড়াশোনার ভয় কাটাতে এবং স্কুলকে (অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র) আকর্ষণীয় করে তোলার জন্য এই উদ্যোগ।
পড়ুয়াদের এমন খেলনা দিতে হবে, যার মাধ্যমে তারা গুনতে পারা, রং চেনার পাশাপাশি খেলতে খেলতেই শিখতে পারে আরও অনেক কিছু। পাশাপাশি স্থানীয় পুতুল সংগ্রহ করে তা দিয়ে মন ভোলাতে বলা হয়েছে পড়ুয়াদের। এর জন্য অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র বা স্কুলে ‘খেলনার মেলা’ করারও নির্দেশ রয়েছে শিক্ষা মন্ত্রকের।
বাংলায় মোটের উপর প্রায় ১ লক্ষ ২০ হাজার অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র রয়েছে। সেখানে কয়েক লক্ষ পড়ুয়ার পুষ্টি ও প্রাথমিক পড়াশোনা হয়। গর্ভবতী মায়েদেরও নানা সুযোগ-সুবিধে দেওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। কিন্তু রাজ্যের নারী ও শিশুকল্যাণ মন্ত্রী শশী পাঁজার বক্তব্য, ‘ইতিমধ্যেই একটি বিশেষ প্রজেক্ট করে খেলার মাধ্যমে পড়াশোনার ব্যবস্থা রাজ্য সরকার করেছে। কেন্দ্র টাকা দেয় না। রাজ্যই নিজের ফান্ড থেকে অঙ্গনওয়াড়ি পিছু একটি তহবিল গঠন করে সফট টয় দেওয়া থেকে নানা উদ্যোগ নিয়েছে। আমি নিজে দিল্লি গিয়ে এই প্রজেক্টের উপর প্রেজেন্টেশন দিয়ে এসেছি।’
শশীর প্রশ্ন, ‘এতদিন বাদে হঠাৎ নির্বাচনের সময়েই এ সব করার কথা কেন্দ্রের কেন মনে হলো? আসলে এটা এক ধরনের ঔদ্ধত্য। বাংলার কাজকে ফলো করছে, কিন্তু বাংলার প্রাপ্য দিচ্ছে না।’ কিন্তু যাঁরা একেবারে মাটিতে নেমে রাজ্য ও কেন্দ্রের এই প্রকল্পগুলিকে কার্যকর করেন তাঁরা কী বলছেন?
অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের করুণ অবস্থা নিয়ে মাঝেমধ্যেই রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ জানান রত্না দত্ত। তিনি পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য আইসিডিএস কর্মী সমিতির সভানেত্রী। তাঁর কথায়, ‘রাজ্য-কেন্দ্র দুই সরকারের চরম অবহেলার ফলে আমাদের আইসিডিএস সেন্টারগুলি মৃতপ্রায়। এখানে শিশুদের পুষ্টিটুকু পর্যন্ত নিশ্চিত করা যাচ্ছে না। সেখানে খেলা, খেলনার মেলা তো বাতুলতা মাত্র।’ তবে রত্নার দাবি, এর পরেও তাঁরা কয়েক বছর আগে ফেলে দেওয়া খেলনা জোগাড় করে এনে বিভিন্ন অঙ্গনওয়াড়িতে বিলি করেছেন।